মোদী সরকারের নির্দেশ মেনে ‘সঞ্চার সাথী’ অ্যাপ প্রি-ইনস্টল করতে গররাজি অ্যাপ্ল, বৈঠক হতে পারে ‘রফাসূত্র’ খুঁজতে
আনন্দবাজার | ০২ ডিসেম্বর ২০২৫
বাধ্যতামূলক ভাবে ‘সঞ্চার সাথী’ অ্যাপ স্মার্টফোনে প্রি-ইনস্টল করার সরকারি নির্দেশের বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে বৈঠক করতে চলেছে দুই মোবাইল প্রস্তুতকারী সংস্থা অ্যাপ্ল এবং স্যামসাং। সেখানে নরেন্দ্র মোদী সরকারের নির্দেশিকার কিছু পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে সরকারি সূত্রের খবর।
সংবাদ সংস্থা পিটিআই প্রকাশিত খবরে জানানো হয়েছে, সঞ্চার সাথী অ্যাপ প্রি-ইনস্টলেশনের নির্দেশ নিয়ে অ্যাপ্ল আলোচনা করবে এবং একটি ‘মধ্যম পথ’ তৈরির চেষ্টা করবে। অ্যাপ্ল বর্তমান আকারে নির্দেশটি বাস্তবায়ন করতে রাজি না-ও হতে পারে বলে প্রকাশিত খবরে দাবি। কেন্দ্রীয় নির্দেশ অনুযায়ী, আগামী ৯০ দিনের মধ্যে ভারতে তৈরি বা আমদানি করা সমস্ত মোবাইল ফোনে ‘সঞ্চার সাথী’ অ্যাপ প্রি-ইনস্টল বাধ্যতামূলক। আগামী ১০০ দিনের মধ্যে প্রতিটি মোবাইল ফোন নির্মাতা বা আমদানিকারী সংস্থাকে এ নিয়ে কেন্দ্রকে রিপোর্ট পাঠাতে হবে।
কিন্তু ওই নির্দেশ কার্যকরের বিষয়ে অ্যাপ্ল কর্তৃপক্ষের আপত্তি রয়েছে বলে মঙ্গলবার সংবাদ সংস্থা রয়টার্স প্রকাশিত একটি খবরে দাবি করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, ভারতে বিক্রি হওয়া সব ফোনে ‘সঞ্চার সাথী’ অ্যাপটি প্রি-ইনস্টল করা থাকতে হবে বলে গত ২৮ নভেম্বর কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রকের তরফে ফোন প্রস্তুতকারী সব সংস্থাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। এর পরেই শুরু হয় বিতর্ক। বিষয়টি নিয়ে বিরোধীরা প্রশ্ন তুলতে শুরু করে। ওই অ্যাপের মাধ্যমে নাগরিকদের ‘ব্যক্তিগত পরিসরে’ নজরদারি চালানো হবে বলেও অভিযোগ ওঠে। কংগ্রেস সাংসদ প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এই সঞ্চার সাথীকে ‘স্নুপিং অ্যাপ’ বলে চিহ্নিত করে অভিযোগ করেন, এই অ্যাপের মাধ্যমে ফোন ব্যবহার করা গ্রাহকের গোপনীয়তার সুরক্ষা লঙ্ঘিত হবে।
এই আবহে মঙ্গলবার তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য শিন্দে জানান, ফোন ব্যবহারকারী গ্রাহকেরা যদি ওই অ্যাপ ব্যবহার না করতে চান, তা হলে তাঁরা তা মুছে দিতে (ডিলিট করতে) পারবেন। তিনি বলেন, ‘‘এটি অ্যাক্টিভেট করবেন না। যদি আপনার ফোনে এটা রাখতে চান, রাখুন। যদি এটা মুছে দিতে চান, তা-ই করুন।’’ সঞ্চার সাথী অ্যাপ নিয়ে বিরোধীদের তোলা নজরদারির অভিযোগ খারিজ করে জ্যোতিরাদিত্য জানান, এটি পুরোপুরি গ্রাহক সুরক্ষার বিষয়। বাধ্যতামূলক কিছু নেই। যদিও যে মোবাইলগুলি ইতিমধ্যে বাজারে এসে গিয়েছে, সেগুলিতেও সফ্টওয়্যার আপডেটের মাধ্যমে ওই সরকারি অ্যাপটি প্রবেশ করিয়ে দেওয়ার কথা বলেছে কেন্দ্র। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বিভিন্ন মোবাইল সংস্থাকে এমন নির্দেশ দেওয়া হলেও সেটি প্রকাশ্যে আনেনি মোদী সরকার। যা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ইতিমধ্যেই।