• ‘অসমাপ্ত বাক্য’ ঘিরে রহস্য, শোরগোল তুঙ্গে, খসড়ায় থাকলেও এসআইআরের চূড়ান্ত নির্দেশিকায় বাদ নাগরিকত্ব আইনের উল্লেখ!
    বর্তমান | ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নয়াদিল্লি: এসআইআর প্রক্রিয়া নিয়ে নির্বাচন কমিশনের তৈরি খসড়া নির্দেশিকায় নাগরিকত্ব আইনের উল্লেখ ছিল। যদিও পরে প্রকাশিত চূড়ান্ত নির্দেশিকা থেকে তা বাদ পড়ে। শুধু তাই নয়, মূল নির্দেশিকার এক জায়গায় ‘অসমাপ্ত বাক্য’ নিয়েও রহস্য তৈরি হয়েছে। এবিষয়ে একটি সর্বভারতীয় সংবাদপত্রের রিপোর্টে শোরগোল তুঙ্গে।

    গত ২৪ জুন বিহার থেকে দেশজোড়া এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশিকা জারি করেছিল কমিশন। রিপোর্ট অনুযায়ী, সেই নির্দেশিকারই খসড়া বয়ানে নির্বাচন কমিশনার সুখবীর সিং সান্ধুর তরফে একপ্রকার সতর্কবার্তা ছিল। খসড়া নির্দেশিকার ফাইলে সান্ধু লিখেছিলেন, প্রকৃত ভোটার/নাগরিকদের স্বার্থরক্ষায় যত্নশীল হওয়া উচিত। বিশেষ করে বয়স্ক, অসুস্থ, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন, গরিব ও অন্যান্য দুর্বল গোষ্ঠীগুলি যাতে হেনস্তাবোধ না করেন, তার ব্যবস্থা করা উচিত। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, খসড়ার ওই ফাইলে সই করেছিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার। তাৎপর্যপূর্ণভাবে ওই একইদিনে খসড়াটিতে তড়িঘড়ি হোয়াটসঅ্যাপে অনুমোদনের মাধ্যমে নির্দেশিকা জারি করে দেওয়া হয়। তবে ২৪ জুন সন্ধ্যায় যে বিজ্ঞপ্তি জনসমক্ষে আনা হয়, খসড়া নির্দেশিকার থেকে সেখানে বেশ কিছু জায়গায় পার্থক্য ছিল বলে অভিযোগ।

    রিপোর্টে দাবি, খসড়া নির্দেশিকার ২.৫ ও ২.৬ অনুচ্ছেদে সিআইআর প্রক্রিয়ার সঙ্গে নাগরিকত্ব আইনের যোগসূত্রের উল্লেখ ছিল। এই বিশেষ নিবিড় সংশোধন প্রক্রিয়ার পক্ষে যুক্তি হিসেবে নাগরিকত্ব আইনে সংশোধনের বিষয়টিকে তুলে ধরা হয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছিল, ‘ভারতের সংবিধান ও ১৯৫৫ সালের নাগরিকত্ব আইন মোতাবেক যাঁরা দেশের নাগরিক, একমাত্র সেই নাগরিকদের নামই যাতে ভোটার তালিকায় থাকে, তা নিশ্চিত করা নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব। ২০০৪ সালে নাগরিকত্ব আইনে সংশোধনের পর থেকে দেশজুড়ে আর নিবিড় সংশোধনের প্রক্রিয়া হয়নি।’ যদিও খসড়া নির্দেশিকায় এইভাবে নাগরিকত্ব আইনের উল্লেখ থাকলেও মূল নির্দেশিকা থেকে তা বাদ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।

    ২৪ জুন প্রকাশিত চূড়ান্ত নির্দেশিকার ৮ অনুচ্ছেদ ঘিরেও রহস্য তৈরি হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, ‘কোনও ব্যক্তির নাম ভোটার তালিকায় নথিভুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে সংবিধানের ৩২৬ অনুচ্ছেদ মোতাবেক অন্যতম মৌলিক পূর্বশর্ত হল, ওই ব্যক্তিকে ভারতীয় নাগরিক হতে হবে। ফলস্বরূপ, কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব হল একমাত্র যাঁরা নাগরিক তাঁদেরই নিশ্চিত;’— ঠিক এভাবেই অসমাপ্ত বাক্য রয়ে গিয়েছে জারি হওয়া চূড়ান্ত নির্দেশিকায়। বাক্যটি অসংলগ্নভাবে সেমিকোলনের মাধ্যমে শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্ত কেন এই অসমাপ্ত বাক্য? এবিষয়ে কমিশনের কোনও প্রতিক্রিয়া সামনে আসেনি।     
  • Link to this news (বর্তমান)