• ডিটেনশন ক্যাম্প হবে না, কেন্দ্রকে হুঁশিয়ারি মমতার, উন্নয়ন অস্ত্রে ভোটের দামামা
    বর্তমান | ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: এসআইআরের সঙ্গে নাগরিকত্বের সরাসরি কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু ইনিউমারেশন ফর্ম বিলি শুরুর সময় থেকেই নাগরিকত্ব টিকিয়ে রাখা নিয়ে আশঙ্কায় ভুগতে শুরু করেছেন বহু মানুষ। গেরুয়া শিবিরের নেতা-নেত্রীদের ‘বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার’ হুঁশিয়ারি তাঁদের আতঙ্ক আরও বাড়িয়েছে। উদ্বিগ্ন এই জনতার পাশে থাকার বার্তা দিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন্দ্রকে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়ে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় তিনি জানিয়ে দিলেন, ‘এ রাজ্যে কোনও ডিটেনশন ক্যাম্প হবে না।’ মঙ্গলবার নবান্ন থেকে এই বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের দামামা বাজিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন তিনি গত সাড়ে ১৪ বছরে তাঁর সরকারের বিবিধ উন্নয়ন প্রকল্পগুলির বিস্তারিত খতিয়ান পেশ করেন। ‘উন্নয়নের পাঁচালি’ প্রকাশ করে তৃণমূল সুপ্রিমো স্পষ্ট করে দিয়েছেন, আসন্ন নির্বাচনে উন্নয়ন অস্ত্রেই তামাম বিরোধীদের ঘায়েল করতে কোমর বাঁধছে শাসক শিবির। 

    রাজ্যে এসআইআর চালু হওয়ার পর থেকে একটা বড় অংশের মানুষ ভাবতে শুরু করেছেন, এর পরই হবে আদম সুমারি বা জনগণনা। তারপর অসমের মতো পশ্চিমবঙ্গেও এনআরসি করে হাজার হাজার মানুষকে ডিটেনশন ক্যাম্পে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে। এই প্রেক্ষাপটে সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত  করে মমতার অভয় বাণী, ‘আমি কমিউনাল পলিটিক্স করি না। আমি সেক্যুলার পলিটিক্স করি। সংবিধান মানি। সব ধর্মের সব মানুষকে সম্মান করি। বাংলায় সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করি। তাই এখানে ডিটেনশন ক্যাম্প করে অরাজকতা সৃষ্টি করতে দেব না।’

    রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনা নিয়ে এদিনও মোদি সরকারকে খোঁচা দিতে ছাড়েননি মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানান, বাংলার ১ লক্ষ ৮৭ হাজার কোটি টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র। সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও টাকা মেলেনি।  ‘১০০ দিনের কাজ’-এর প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘কেন্দ্র কি তাহলে ঠিক নির্বাচনের মুখে গিয়ে টাকা দেবে? আর মার্চ মাস হয়ে গেলে টাকা খরচ করতে না পারার অজুহাত দেখিয়ে সেই টাকা ফেরত নিয়ে নেওয়ার প্যাঁচ কষছে?’ দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর কথা মনে করিয়ে দিয়ে মোদি সরকারকে মমতার বার্তা, ‘আমাদের টাকা আটকে রেখে বাংলাকে লাঞ্ছনা-বঞ্চনা করার জন্য কেন্দ্রকে ধন্যবাদ জানাই। যতই অপপ্রচার আর চক্রান্ত করুন, আমরা কিন্তু আপনাদের কো-অপারেশন চাই। আশা করি, এটুকু আপনারা শুনতে পাচ্ছেন। …রাজ্য এবং  কেন্দ্র কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবে, শুধু ঝগড়া নয়।’ ধারাবাহিক কেন্দ্রীয় বঞ্চনা সত্ত্বেও ২০১১ সালের তুলনায় রাজ্যের নিজস্ব আয় ৫.৩৩ গুণ এবং রাজ্যের জিএসডিপি ৪.৪১ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছেন মমতা। যার ফলে ২০১৩ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ১ কোটি ৭২ লক্ষ মানুষকে দারিদ্র্য সীমার উপরে নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে। কর্মসংস্থান হয়েছে ২ কোটির বেশি।
  • Link to this news (বর্তমান)