পশ্চিমবঙ্গে একশো দিনের কাজের প্রকল্প ফের চালু হবে ঠিকই। তবে দুর্নীতি ও অনিয়ম রুখতে নিয়মাবলি ও কার্যপ্রক্রিয়ার প্রয়োজনমাফিক রদবদল করা হবে। বেশ কিছু শর্ত বেঁধে দেওয়া হবে। আজ কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক লোকসভায় এক প্রশ্নের উত্তরে এই ইঙ্গিত দিল।
ভুয়ো জব কার্ড ও অযোগ্য ব্যক্তিদের সুবিধা পাইয়ে দেওয়া নিয়ে একশো দিনের কাজের প্রকল্পে অনিয়মের রিপোর্ট আসায় মোদী সরকার ২০২২-এর মার্চ থেকে পশ্চিমবঙ্গের জন্য টাকা বন্ধ করে দিয়েছিল। কিন্তু কলকাতা হাই কোর্ট গত জুন মাসে পশ্চিমবঙ্গে একশো দিনের কাজ ফের চালু করার নির্দেশ দিয়েছে। কেন্দ্রের আপত্তি খারিজ করে অক্টোবর মাসে সুপ্রিম কোর্টও সেই রায় বহাল রেখেছে। তবু এখনও রাজ্যে একশো দিনের কাজ চালু হয়নি।
আজ লোকসভায় কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী কমলেশ পাসোয়ান লিখিত উত্তরে জানিয়েছেন, আদালতের নির্দেশ মতো পশ্চিমবঙ্গে একশো দিনের কাজ চালু করার ব্যাপারে মন্ত্রক এখন প্রয়োজনীয় নিয়ম ও প্রক্রিয়া ‘রিওয়র্ক’ ও ‘রিফাইন’ করার কাজ করছে। প্রসঙ্গত হাই কোর্টের নির্দেশেই বলা ছিল, কেন্দ্র ফের একশো দিনের কাজ চালু করার জন্য প্রয়োজন মতো শর্ত বেঁধে দিতে পারে। গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক আজ সংসদে সেই কথাই বলেছে। মন্ত্রক মেনে নিয়েছে, হাই কোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রিম কোর্টে গেলেও সুপ্রিম কোর্ট তাতে হস্তক্ষেপ করতে রাজি হয়নি।
তৃণমূল সাংসদ মালা রায়, সৌগত রায়, কীর্তি আজ়াদ এবং রচনা বন্দ্যোপাধ্যায় লোকসভায় পশ্চিমবঙ্গের বকেয়া নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন। গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের উত্তর, একশো দিনের কাজের প্রকল্পে কাগজে-কলমে ২০২২-এর ৮ মার্চ পর্যন্ত ৩,০৮২ কোটি টাকার মতো বকেয়া ছিল পশ্চিমবঙ্গের। এর পরের দিন, অর্থাৎ ৯ মার্চ থেকে টাকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। বকেয়ার দাবি গ্রাহ্য হবে কি না, তা কেন্দ্রীয় সরকারের যাচাইয়ের উপরে নির্ভর করছে। মালা পরে দাবি করেন, ‘‘এই খাতে কেন্দ্রের থেকে প্রচুর বকেয়া রয়েছে।’’ তৃণমূল সাংসদ কালীপদ সোরেন ও শর্মিলা সরকারের অন্য একটি প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান লিখিত উত্তরে জানিয়েছেন, একশো দিনের কাজে মজুরির খরচ বাবদ গত আর্থিক বছরের পাওনা পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া বাকি সব রাজ্যকেই কেন্দ্রীয় সরকারমিটিয়ে দিয়েছে।