গত রবিবার দেখা গেল, বাস-ভর্তি করে পর্যটকেরা আসতে শুরু করেছেন। কেউ এসেছেন বর্ধমান থেকে, কেউ বারুইপুর আবার কেউ কাছাকাছি এলাকা থেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে। সবুজ প্রকৃতির কোলে জলাধারের নীল জলে নৌকাবিহার, আর পিকনিকের আনন্দে মেতে উঠেছেন পর্যটকেরা।
শীতের মরসুম মানেই মাইথনের নৌকা চালক ও স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মুখে চওড়া হাসি। সারা বছর যেখানে পর্যটকের তেমন দেখা মেলে না, সেখানে ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি — এই তিন মাস কার্যত ভরে থাকে মাইথন। প্রতি বছরের মতো এ বারও নৌকাগুলিকে নতুন রং করে, সাজিয়ে-গুছিয়ে তৈরি রেখেছেন চালকেরা। স্থানীয় নৌকা চালক হাসান আনসারির কথায়, “পিকনিকের সময়ে ভিড় হয়। এ বারও আশা করছি অনেক পর্যটক আসবেন। অন্য সময় মাছ ধরে যা রোজগার হয়, তাতে সংসার চলে না। এই তিন মাসের দিকে আমরা চেয়ে থাকি।’’ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত ছাড়াও পড়শি রাজ্য থেকেও লোক এখানে পিকনিক করতে আসেন। মহম্মদ ইউসুফ আনসারি প্রায় ১৫-২০ বছর ধরে নৌকা চালান। তিনি জানালেন, নৌকাগুলো রং করে সুন্দর করে সাজিয়েছেন। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত ছাড়াও পড়শি রাজ্য থেকেও লোক এখানে পিকনিক করতে আসেন। শীতেই ভিড় হয়। এই সময়টা রোজগার হলে বাকি বছরটা কোনও মতে চলে। পর্যটক আসা শুরু হওয়ায় তাঁরা খুশি।
তবে এলাকার পরিচ্ছন্নতা নিয়ে নৌকা চালক থেকে পর্যটক, অভিযোগ আছে সকলেরই। বর্ধমান থেকে পরিবার নিয়ে আসা সুদেষ্ণা সিংহ বলেন, “পরিবেশ খুব সুন্দর, প্রকৃতি অপূর্ব। কিন্তু পরিচ্ছন্নতার খুব অভাব। যদি ভাল করে পরিষ্কার করে বসার জায়গা, ডাস্টবিনের ব্যবস্থা করা হয়, তা হলে আরও বেশি মানুষ আসবেন।’’ একই আর্জি নৌকা চালকদেরও। হাসান আনসারির কথায়, ‘‘প্রশাসন যদি পিকনিকের এলাকা হিসাবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে সাজিয়ে দেয়, তা হলে সকলেরই ভাল হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের রোজগার বাড়ে।’’