• টোটো ‘চুরি’তে জড়িত পুলিশই, বাসিন্দাদের বিক্ষোভে লাঠি
    আনন্দবাজার | ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫
  • টোটো চুরির অভিযোগ ঘিরে সোমবার রাতে উত্তাল হয়ে উঠল হাওড়ার নাজিরগঞ্জের আন্দুল হরেকৃষ্ণ নগর। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, রবিবার গভীর রাতে রাস্তার পাশে রাখা একটি টোটোকে মোটরবাইকের সঙ্গে বেঁধে নিয়ে চলে যান নাজিরগঞ্জ থানার এক অস্থায়ী গাড়িচালক। ঘটনাটির বিন্দুবিসর্গ জানতে পারেননি টোটোচালক। পরে সেই টোটোটি উদ্ধার হয় একটি আবাসন থেকে। এর পরেই সোমবার ওই ঘটনা ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায়। পুলিশ টোটো চুরি করেছে, এই অভিযোগে স্থানীয় লোকজন থানায় গিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করলে পুলিশের সঙ্গে তাঁদের ধস্তাধস্তি বাধে। পুলিশের অবশ্য দাবি, টোটোটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল। থানায় রাখার জায়গা না থাকায় সেটি অন্যত্র রাখা হয়েছিল।

    পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার সকালে হরেকৃষ্ণ নগরের বাসিন্দা এক টোটোচালক অভিযোগ করেন, তিনি রবিবাররাতে তাঁর টোটো রাস্তার ধারে রেখেছিলেন। কিন্তু সোমবার দেখেন, টোটো উধাও। পরে ওই চালক এবং স্থানীয়দের একযোগে খোঁজাখুঁজির শেষে একটি আবাসন থেকে টোটোটি উদ্ধার হয়।

    ঘটনায় কে জড়িত, তা জানতে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখতে শুরু করেন এলাকাবাসীরা। তাঁদের দাবি, সেই ফুটেজে দেখা যায়, রবিবার গভীর রাতে টোটোটিকে বাইকের সঙ্গে বেঁধে নিয়ে যাচ্ছেন নাজিরগঞ্জ থানার অস্থায়ী গাড়িচালক রাহুল সরকার। স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই যুবক পুলিশে চাকরি না করেও নিজেকে পুলিশ বলে পরিচয় দিতেন। তা নিয়ে আগে থেকেই ক্ষোভ ছিল। তার উপরে ওই যুবককেই টোটো নিয়ে পালিয়ে যেতে দেখায় পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

    সোমবার বেশি রাতে হরেকৃষ্ণ নগরের কয়েকশো বাসিন্দা থানার সামনে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। পুলিশকে লক্ষ্য করে ‘চোর, চোর’ চিৎকারও ওঠে। অভিযোগ, তখনই পুলিশের ওই গাড়িচালক এবং অন্য পুলিশকর্মীরা বিক্ষোভকারীদের উপরে লাঠি চালান।

    এলাকার এক বাসিন্দা সায়নদীপ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘হাঁসখালি পোল এলাকায় নিত্যদিন চুরি হচ্ছে। পুলিশ আজ পর্যন্ত একটিরও কিনারা করতে পারেনি। সেই পুলিশই গভীর রাতে মালিককে না জানিয়ে টোটো নিয়ে পালাচ্ছে। এটা চুরি ছাড়া কী?’’ দেবরাজ চৌধুরী নামে আর এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘ওই গাড়িচালক লাঠি দিয়ে মেরে আমার পা ফাটিয়ে দিয়েছেন। আমাদের প্রশ্ন, পুলিশ না হয়েও ওই যুবক কী ভাবে পুলিশের লাঠি দিয়ে হামলা চালান?’’

    এই বিষয়ে হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘হরেকৃষ্ণ নগরে মদ-গাঁজার ঠেক ও জুয়ার বিরুদ্ধে পুলিশ অভিযান চালানোর পরেই এলাকার কিছু লোক পুলিশের বদনাম করতে চেয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। পুলিশ টোটো চুরি করেনি। টোটোটি বেআইনি ভাবে রাখায় সেটি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল।’’
  • Link to this news (আনন্দবাজার)