আজকাল ওয়েবডেস্ক: বন্যপ্রাণী শিকার এবং তা খাদ্য হিসেবে গ্রহণের অভিযোগে যাযাবর সম্প্রদায়ের এক প্রতিবন্ধী বৃদ্ধকে গ্রেপ্তার করল হলদিবাড়ি বন দপ্তর। ধৃতের নাম ডোমরা মাহাত (৫৫)। তাঁর বাড়ি বিহারের কিষাণগঞ্জ জেলার সমস্তিপুরে। মঙ্গলবার-বুধবার তাঁকে মেখলিগঞ্জ মহকুমা আদালতে পেশ করা হলে আদালত ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয়। ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
গত কয়েকদিন ধরে যাযাবরদের একটি দল- সাত থেকে আটজন যুবক ও একজন বৃদ্ধ- হলদিবাড়ি শহরের পাইকারি টমেটো বাজার সংলগ্ন এলাকায় পড়ে থাকা বেজি, গো সাপ এবং বিভিন্ন ধরনের পাখি শিকার করে খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করছিল বলে অভিযোগ ওঠে। স্থানীয় বাসিন্দারা বিষয়টি হলদিবাড়ি বন দপ্তরকে জানালে বনাধিকারিকরা ব্যাপারটি খতিয়ে দেখতে অভিযান চালান।
খবর পেয়ে এডিএফও বিজন কুমার নাথের নেতৃত্বে একটি বনদপ্তরের টিম ওই এলাকায় হানা দেয়। বনকর্মীদের দেখতে পেয়ে যাযাবর দলের যুবকেরা পালিয়ে যায়। তবে পালানোর সুযোগ পাননি ওই প্রতিবন্ধী বৃদ্ধ ডোমরা মাহাত। তাঁকে ঘটনাস্থল থেকেই গ্রেপ্তার করে বন দপ্তরের দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়।
বন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বন্যপ্রাণী সুরক্ষা আইন অনুযায়ী তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জেরা করে জানা গিয়েছে, তিনি ও তাঁর দল বেজি, পাখি, সাপসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী শিকার করে রান্না করে খেতেন। অভিযুক্ত বৃদ্ধও স্বীকার করেন, “আমরা বেজি শিকার করে রান্না করে খাচ্ছিলাম।”
ঘটনাটি সামনে আসতেই পরিবেশপ্রেমী সংগঠন ‘স্পোর’-এর সদস্য সুমন দাস বলেন, “বন্যপ্রাণী পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। হত্যা করা আইনত দণ্ডনীয়। বৃদ্ধ গ্রেপ্তার হওয়ায় খারাপ লাগলেও আইন রক্ষায় এই পদক্ষেপ জরুরি।”
এডিএফও বিজন কুমার নাথ জানান, ধৃতকে আদালতে তোলা হয়েছে এবং বাকি অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। বন দপ্তর জানিয়েছে, বর্তমানে অভিযুক্ত ও যাযাবর দলের অন্যান্য সদস্যদের পরিচয় সংগ্রহের কাজও চলছে।
এই ঘটনার পর অঞ্চল জুড়ে নতুন করে সচেতনতা বাড়ানোর দাবি উঠেছে। বন দপ্তরও এলাকাবাসীকে বন্যপ্রাণী সুরক্ষায় সতর্ক থাকার বার্তা দিয়েছে।