• বহাল প্রাথমিকের চাকরি, হাইকোর্টে স্বস্তি রাজ্যের
    আজকাল | ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রাথমিক মামলায় স্বস্তি পেল রাজ্য। এতদিন ধরে এবিষয়ে যে বিতর্ক গোটা রাজ্যে চলছিল তার অবসান হল। বুধবার এই মামলার রায় ঘোষণা করে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। সেখানেই  প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলির রায় বাতিল করে দেওয়া হয়। রায়ে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেওয়া হয় ৩২ হাজার চাকরিপ্রার্থীর কাজ থাকছে। তাদের চাকরি বাতিল করা হবে না।  নিজের পদেই বহাল রইলেন প্রত্যেকে।  

    প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলির সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ খারিজ করে দিল বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি ঋতব্রত কুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চ। বিচারপতিদের পর্যবেক্ষণ ছিল, “দীর্ঘ ৯ বছর পর চাকরি বাতিল করলে পরিবারগুলির উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়বে।” আইনজীবী আশিস কুমার চৌধুরী জানান, সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ অনুযায়ী দুর্নীতির জন্য ৩২ হাজার প্রাথমিক চাকরি বাতিল করা হয়। কর্তৃপক্ষের ভুল কিংবা দুর্নীতির জন্য নিরীহ চাকুরিরতদের চাকরি বাতিল হতে পারে না। যাঁরা সফল হননি, তাঁদের জন্য সব কিছু ড্যামেজ হতে পারে না। এতদিন ধরে যাঁরা চাকরি করছেন, তাঁরা কোনও প্রভাবশালীদের সঙ্গে যুক্ত নন। তাই তাঁদের চাকরি বহাল থাকবে বলেই জানায় ডিভিশন বেঞ্চ। হাই কোর্টের নির্দেশে স্বস্তিতে ২০১৪ সালের টেটের মাধ্যমে নিযুক্ত প্রাথমিক শিক্ষকরা। 

    ২০২৩ সালের মে মাসে কলকাতা হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলি প্রাথমিকের মোট ৩২ হাজার চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন।  যদিও পরে তৎকালীন বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি সুপ্রতীম ভট্টাচার্যের বেঞ্চ সেই নির্দেশে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করে। পাশাপাশি সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশ মতো নতুন করে ইন্টারভিউ নেওয়ার প্রক্রিয়া চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। এরপর এই মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। দেশের শীর্ষ আদালত থেকে মামলা ফেরত আসে কলকাতা হাইকোর্টে। সেই মামলারই রায় ঘোষণা হল এদিন।

    প্রাথমিকে ৩২ হাজার চাকরি বাতিলের মামলার শুনানিতে অনিয়মের দাবিকে কার্যত নস্যাৎ করেন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত। ২০১৬  সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ নিয়োগের পরীক্ষায় কোনও দুর্নীতি হয়নি বলে আদালতে দাবি করেছেন রাজ্যের এজি কিশোর দত্ত । ২০১৪ সালে শিক্ষক যোগ্যতা পরীক্ষা বা টেট উত্তীর্ণদের নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়। ২০১৬ সালে প্রাথমিক স্তরে ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি হয়। 

    নিয়োগ দুর্নীতির মামলার রায় দিতে গিয়ে, প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলি ২০২৩ সালের ১২ মে প্রাথমিকের ৩২ হাজার চাকরি বাতিল করে দেন। রাজ্য সরকার এই রায়কে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে চ্যালেঞ্জ করে। বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি সুপ্রতীম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ চাকরি বাতিলের সিদ্ধান্তের উপর স্থগিতাদেশ দেয়। পরে মামলা আসে বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চে।  কিন্তু গত ৭ এপ্রিল বিচারপতি সৌমেন সেন ব্যক্তিগত কারণে মামলাটি থেকে সরে দাঁড়ান । এরপর চলতি বছরের ২৮ এপ্রিম থেকে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি ঋতব্রত কুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানি শুরু হয়।  ২ বছরের কিছু বেশি সময় ধরে শুনানির পর এই মামলার রায় দিল ডিভিশন বেঞ্চ। 
  • Link to this news (আজকাল)