হাওড়া-শেওড়াফুলি মেট্রোর কী প্ল্যান? কল্যাণের প্রশ্নে যা জানাল কেন্দ্র
আজ তক | ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫
হাওড়া থেকে শেওড়াফুলি পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবা আদৌ চালু হবে কি? এই প্রশ্নকে কেন্দ্র করে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক আলোচনায় নতুন মাত্রা যোগ করেছেন শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। লোকসভায় তিনি রেলমন্ত্রকের কাছে জানতে চান, তারকেশ্বর, জয়রামবাটি ও কামারপুকুরের মতো গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থানগুলিতে আরও দ্রুত ও আরামদায়ক যোগাযোগের স্বার্থে হাওড়া থেকে শেওড়াফুলি পর্যন্ত পৃথক মেট্রো পরিষেবা চালুর কোনও প্রকল্প রেলের রয়েছে কি না। এর উত্তরে রেলমন্ত্রক একটি বিস্তারিত বিবৃতি দিয়েছে, যা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে।
রেলমন্ত্রক জানিয়েছে, হাওড়া থেকে শেওড়াফুলি হাওড়া-ব্যান্ডেল মেইন লাইনের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। এটি পাঁচটি ট্র্যাকসহ একটি গুরুত্বপূর্ণ জংশন স্টেশন। যাত্রী চাপ সামলাতে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোও এখানে বিদ্যমান। শুধুমাত্র শেওড়াফুলি-সংযোগের স্বার্থে আলাদা মেট্রো লাইন নির্মাণের পরিকল্পনা রেলের রয়েছে কী না, তা স্পষ্ট জানানো হয়নি।
পাশাপাশি, রেলমন্ত্রক তাদের উত্তরে স্পষ্ট করেছে যে, তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর ৮৩ কিলোমিটারের নতুন রেললাইন প্রকল্প দীর্ঘদিন ধরেই গুরুতর সমস্যায় আটকে রয়েছে। হুগলি জেলার গোঘাট-কামারপুকুর এলাকায় আইনশৃঙ্খলার জটিলতার জেরে প্রকল্পের কাজ ২০১৬ সাল থেকে প্রায় সম্পূর্ণ বন্ধ। ভবদীঘি পুকুর সংলগ্ন প্রায় ৯০০ মিটার জমিতে স্থানীয় গ্রামবাসীদের আপত্তির কারণে কাজ এগোচ্ছে না। এর ফলে দক্ষিণবঙ্গের বহু প্রতীক্ষিত এই সংযোগকারী রেলপথ বাস্তবায়ন অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছে।
একই সঙ্গে রেল জানিয়েছে, বর্তমানে মোট ৫২ কিমি দৈর্ঘ্যের চারটি মেট্রো করিডোর কলকাতা ও তার আশপাশে নির্মাণাধীন। কিন্তু তার প্রায় ২০ কিমি অংশে জমি অধিগ্রহণ ও রাজ্য সরকারের অধীনে থাকা ইউটিলিটি শিফটিংয়ের সমস্যা প্রকল্পগুলোকে ধীর করে দিয়েছে। রেলের দাবি, গুরুত্বপূর্ণ এই বাধাগুলি দূর না হলে শহর ও শহরতলির মেট্রো সম্প্রসারণের কাজ দ্রুত এগোনো সম্ভব নয়।
এই প্রেক্ষিতে বোঝা যাচ্ছে যে, হাওড়া-শেওড়াফুলি মেট্রোর প্রশ্নে রেলের অবস্থান পরিষ্কার। বিদ্যমান রেল সংযোগ যথেষ্ট বলেই তারা মনে করে। মূল চ্যালেঞ্জ রয়েছে তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর লাইন ও কলকাতার চলমান মেট্রো করিডোরগুলির অগ্রগতির ক্ষেত্রে। রেলের বক্তব্য, প্রথমে আটকে থাকা প্রকল্পগুলির জট খুললেই তবেই নতুন সংযোগের সম্ভাবনা তৈরি হবে।