প্রাথমিকে বহাল থাকছে ৩২ হাজার শিক্ষকের চাকরি, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চের রায় খারিজ
বর্তমান | ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি কলকাতা: কলকাতা হাইকোর্টে বড়সড় স্বস্তি ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গেল বেঞ্চের রায় খারিজ করে আজ, বুধবার বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চ সরাসরি জানিয়ে দিল, ২০১৪ সালের টেট দিয়ে নিয়োগ পাওয়া ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বহাল থাকবে। কোর্টের পর্যবেক্ষণ, দীর্ঘ ৯ বছর পর চাকরি বাতিল হলে সমাজে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হবে। বিচারপতি চক্রবর্তী বলেন, 'যাঁরা ৯ বছর ধরে কাজ করছেন তাঁদের পরিবারের কথাও ভাবতে হবে। যাঁরা সফল হননি তাঁদের জন্য সব ড্যামেজ করা যায় না। তাছাড়া এই শিক্ষকরা এত বছর শিক্ষকতা করছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ ওঠেনি। তাই সবদিক ভেবে সিঙ্গেল বেঞ্চের রায় খারিজ করা হচ্ছে। ডিভিশন বেঞ্চের এই রায় শোনার পরই হাইকোর্ট চত্বরে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন শিক্ষকরা। শুরু হয় আবির খেলা। তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় যে রায় দিয়েছিলেন, তাতে গোটা প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। তাঁর বক্তব্য ছিল, গোটা ইন্টারভিউ পদ্ধতিতেই গলদ ছিল। সেই কারণে তিনি চাকরি বাতিল করেন। ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, কোর্ট যখন সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তখন পুরো বিষয়টি বিবেচনা করতে হয়েছে। এখানে প্রসঙ্গ উঠে এসেছে সিবিআই-এরও। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর বক্তব্য, আদালত কোনও ‘রোমিং এনকোয়ারি’ চালাতে পারে না। দ্বিতীয়ত, যাঁরা এতদিন ধরে চাকরি করছিলেন, তাঁদের পড়াশোনা করানোর ধরনের উপর কোনও প্রশ্ন ওঠেনি। তৃতীয়ত, যখন এই সাক্ষাৎকার পর্ব (ইন্টারভিউ প্রসেস) চলছিল, সেই সময় যিনি পরীক্ষক ছিলেন তিনি টাকা নিয়ে অতিরিক্ত নম্বর দিয়েছেন তাঁর কোনও প্রমাণ নেই। যার ফলে গোটা সাক্ষাৎকার পর্বে যে গলদ হয়েছে সেটা একেবারে বলা যাচ্ছে না। এদিন কোর্ট এও বলেছে, মামলা যাঁরা করেছিলেন, তাঁরা কেউ চাকরি করছিলেন না। ফলে যাঁরা পাশ করেননি তাঁদের জন্য গোটা প্রক্রিয়াকে নষ্ট করা যায় না। আর সেই যুক্তিতেই ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গেল বেঞ্চের রায়কে খারিজ করল।