গত বছর এই সময় আরজি কর নিয়ে উত্তাল হয়ে উঠেছিল রাজ্য-রাজনীতি। সরকারি প্রতিষ্ঠানে তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের পাশাপাশি উঠে আসে আর্থিক দুর্নীতির ঘটনা। আরজি কর হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার হন হাসপাতালের তৎকালীন সুপার সন্দীপ ঘোষ। চিকিৎসক খুনে ইতিমধ্যেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের শাস্তি হয়েছে সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়ের। এবার আরজি করের আর্থিক দুর্নীতি মামলার তদন্ত শেষ বলে জানাল সিবিআই-এর একটি সূত্র। চলতি সপ্তাহের শুরুতেই দুর্নীতি মামলায় অতিরিক্ত চার্জশিট দিয়েছিল সিবিআই। সেটিই চূড়ান্ত বলে জানাল ওই সূত্র। ইতিমধ্যে এই সংক্রান্ত নথিও আদালতে জমা দিয়েছে সিবিআই।
আরজি করের আর্থিক দুর্নীতি মামলার তদন্ত শেষ বলেই মনে করা হচ্ছে। বুধবার এই সংক্রান্ত নথি আদালতে জমা করেছে সিবিআই। অতীতে অন্যান্য মামলার ক্ষেত্রে চূড়ান্ত চার্জশিটের পরেও অতিরিক্ত চার্জশিট দিতে দেখা গেছে। তবে বুধবার আদালত জানিয়েছে, যেহেতু আগেই একটি চার্জশিট গ্রহণ করে বিচারপ্রক্রিয়া চলছিল, তাই একই ধারায় অতিরিক্ত চার্জশিট গ্রহণ করা যাবে। তবে সিবিআই সূত্রে খবর, সোমবার জমা দেওয়া চার্জশিটই চূড়ান্ত চার্জশিট। তার প্রেক্ষিতেই দু’জনকে সমন পাঠাবে আদালত।
Advertisement
সিবিআই সূত্রে খবর, তদন্তে উঠে এসেছে আরজি করের তৎকালীন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলি একই সঙ্গে দুর্নীতিতে যুক্ত ছিলেন। এই আখতার আলিই সন্দীপের বিরুদ্ধে প্রথম দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছিলেন। আরজি করের ঘটনার আবহে তা আলাদা মাত্রা পায়। এবার সিবিআইয়ের চূড়ান্ত চার্জশিটে তাঁর নামও রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এ ছাড়াও, নতুন অভিযুক্ত হিসাবে নাম রয়েছে শশীকান্ত চন্দক নামে এক জনের। সন্দীপ ঘোষের বডি গার্ড এবং এই মামলায় ধৃত আফসার আলি খানের ‘বন্ধু’ বলে চার্জশিটে দাবি করেছে সিবিআই।
আগামী ১৬ ডিসেম্বর অভিযুক্ত আখতার আলিকে সমন পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। শশীকান্তকেও সমন পাঠানো হবে বলে সূত্রের খবর। এর আগে এই মামলায় সন্দীপ, ব্যবসায়ী বিপ্লব সিংহ এবং সুমন হাজরা, আফসার, আশিস পাণ্ডের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছিল সিবিআই। প্রত্যেককেই দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়। সন্দীপের বিরুদ্ধে বিচারপ্রক্রিয়া চলছে। বুধবার সাক্ষ্যগ্রহণের কথাও ছিল।
আখতারের বিরুদ্ধে চার্জশিটের নির্দেশ দেওয়ায় স্থগিত হয়ে যায় সেই বিচার প্রক্রিয়া। সন্দীপদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই যে বিচারপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, তা আপাতত স্থগিত রাখার আবেদন জানানো হয়েছে। নতুন যে চার্জশিট জমা পড়েছে, আগে তার প্রক্রিয়া শেষ করার আবেদন জানানো হয়েছে। সন্দীপের আইনজীবী সঞ্জয় দাশগুপ্ত এদিন বলেন, ‘চার্জশিটে আখতার এবং শশীকান্তকে যুক্ত করার জন্য বুধবার সমস্ত নথিপত্র নিয়ে আসে সিবিআই। এর পর সমন করার প্রক্রিয়া শুরু হবে। এ বার মামলা চার্জগঠনের দিকে এগোল বলা যেতে পারে।’