• হাতে আর মাত্র ৫ দিন! বিচারপতি অমৃতা সিনহার বড় রায়ে কাঁপছে SSC... কী হবে যোগ্যদের ভবিষ্যত্‍?
    ২৪ ঘন্টা | ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫
  • জি ২৪ ঘণ্টা ডিজিটাল ব্যুরো: কাটছে না SSC জট। একের পর এক মামলার জটে SSC। ২০১৬ র নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী (SSC Recruitment) গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডির ৭২৯৩ জন দাগিদের (orders publication of list of Group C and Group D candidates) তালিকা প্রকাশের জন্য আগেই নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অমৃতা সিনহা (Justice Amrita Sinha)। এবার গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি-র 'যোগ্য'দের (Eligible candidate of Group C and Group D ) তালিকা প্রকাশেরও নির্দেশ দিলেন তিনি। একই সঙ্গে যোগ্যপ্রার্থীরা যাতে বয়সজনিত ছাড় পান এবং নতুন নিয়োগ অংশ নিতে পারেন সেই নির্দেশও দিল আদালত। সেইসঙ্গে এসএসসি ১০ নম্বর মামলায় ভবিষ্যত্‍ নিয়ে বড় নির্দেশ বিচারপতি অমৃতা সিনহার। উচু ক্লাসে না পড়িয়ে শুধু অভিজ্ঞতার জন্য ১০ নম্বর? নবম-দশম ক্লাসে শিক্ষকতা করা প্রার্থীদের একাদশ-দ্বাদশের জন্য কেন ১০ নম্বর? এই মর্মে মঙ্গলবারই দায়ের হয়েছিল মামলা। মামলাকারীর আবেদনের গুরুত্ব বুঝে সেই মামলা গ্রহণ করেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। আজই ছিল তার শুনানি। নবম দশমের শিক্ষকতা করা একজন প্রার্থী একাদশ দ্বাদশের পরীক্ষায় অভিজ্ঞতার জন্য কেন ১০ নম্বর পাবেন? কীসের অভিজ্ঞতা? কমিশনের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করেই হাইকোর্টে মামলা (SSC in Kolkata High Court)। 

    এদিন আদালত কী জানিয়েছে?

    ২০১৬ র নিয়োগপ্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী 'যোগ্য'দের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। যারা 'নির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত অযোগ্য' নয় তাদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। ৮ ডিসেম্বরের আগে এই তালিকা প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

    বিচারপতি এও জানান, ওই তালিকায় যারা ওয়েটিং লিস্টে ছিলেন তারাও যদি এই 'যোগ্য' তালিকায় থাকেন, তাহলে তারাও যেন বয়সজনিত ছাড় পান এবং নতুন নিয়োগ অংশ নিতে পারেন।

    এর আগে এই মামলায় আদালত জানায়, এবার গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি ৭২৯৩ জন দাগিদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। তালিকায় দাগিদের রোল নাম্বার, নম্বর, বাবার নাম, ঠিকানা উল্লেখ থাকতে হবে। কমিশনের তরফে অবশ্য জানানো হয়, ৩৫১২ দাগিদের তালিকা ইতিমধ্যে প্রকাশ করা হয়েছে।

    আদালতের স্পষ্ট নির্দেশ

    ওএমআর মিস ম্যাচ, ব়্যাঙ্ক জাম্প, আউট অফ প্যানেল সহ ভিন্ন দাগিদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে।


    ২০১৬ সালের এসএসসি প্যানেলে থাকা প্রায় ২৬ হাজার জনের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। সেই রায়ে গ্রুপ সি ও ডি-র বহু প্রার্থীও ক্ষতিগ্রস্ত হন।

    সেইসঙ্গে এসএসসির ১০ নম্বর বা টিচিং এক্সপেরিয়েন্স (Teaching Experience) সংক্রান্ত মামলাটি, আজ আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। গত কয়েকদিন ধরেই, বিচারপতি অমৃতা সিনহার এজলাসে এসএসসির ১০ নম্বর মামলার শুনানি চলছে। আজকে অর্থাত্‍ ১লা ডিসেম্বর, অমৃতা সিনহা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন রাখেন। 

    কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতেই ১০ নম্বর দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। যাকে ঘিরে রয়েছে কয়েকটি প্রশ্ন। এদিন শুনানিতে সওয়াল পর্বে সেই প্রশ্নই তুলে ধরা হয়। 

    নতুন নিয়োগ বিধি নিয়ে ফের প্রশ্ন তুলল আদালত। অভিজ্ঞতা সংক্রান্ত নম্বর কড়া প্রশ্ন আদালতের। যারা নবম - দশম শ্রেণীর শিক্ষকতা করেছেন তাদের একাদশ - দ্বাদশের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অভিজ্ঞতার নম্বর দেওয়া কতটা যুক্তিযুক্ত- প্রশ্ন বিচারপতির

    পাশাপাশি, যারা প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিকে শিক্ষকতা করেছেন তাদের নবম - দশম বা একাদশ - দ্বাদশের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নম্বর দেওয়া কতটা যুক্তিসঙ্গত- প্রশ্ন বিচারপতি অমৃতা সিনহার।

    নতুন নিয়োগ ঘিরে ইতিমধ্যেই দায়ের হয়েছে একাধিক মামলা। সেই মামলায় এই অভিযোগও তোলা হয়েছে যে যারা স্বাস্থ্য দপ্তরে কর্মরত ছিলেন তাদেরও পূর্ব অভিজ্ঞতার জন্য বাড়তি নম্বর দেওয়া হয়েছে। 

    SSC-র অতিরিক্ত '১০ নম্বর' প্রশ্নে আদালত...

    শুনানির পর লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ হলেও কার্যকর না হওয়ার নির্দেশ বহাল রাখলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা (Justice Amrita Sinha)। অভিজ্ঞ শিক্ষকদের ১০ নম্বর দেওয়া নিয়ে এদিন আদালতের একাধিক প্রশ্নের মুখে পড়ে কমিশন। নবম-দশম প্রার্থীরা কি একাদশের-দ্বাদশ নিয়োগের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতার নিরিখে ১০ নম্বর পেতে পারেন? তাদের তো একাদশ-দ্বাদশে পড়ানোর অভিজ্ঞতা-ই নেই! মামলার মূল প্রশ্ন ছিল এটাই। আদালত স্পষ্ট বলে, '২০২৫-এ নিয়োগের ক্ষেত্রে এটা একটা বড় ইস্যু"। পাশাপাশি বিচারপতি অমৃতা সিনহা, কমিশনের কাছে এও জানতে চান, 'যারা ২০১৬ সালে পরীক্ষায় বসেননি তাঁরাও কি ১০ নম্বর পাবেন?'। এদিন শুনানির পর মামলার নথি সব পক্ষকে দেওয়ার নির্দেশ দেন বিচারপতি সিনহা। 

    এই বিষয়ে মামলাকারীর আইনজীবি আশীষ চৌধুরী বলেন যে, 'একজন নবম-দশমের শিক্ষক কী ভাবে একাদশ-দ্বাদশের অভিজ্ঞতার ১০ নম্বর পাবে? আবার, একাদশ-দ্বাদশের শিক্ষক কী ভাবে, নবম-দশমের অভিজ্ঞতার ১০ নম্বর পাবে? তাহলে দুক্ষেত্রেই তারা ১০+১০=২০ নম্বর পাচ্ছেন। এটা একেবারেই অন্যায্য। মূলত এই নিয়েই মামলা। পরবর্তীতে আবার শুনানি হবে। এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে যারা মামলা করছে, তাদের দিকে তাকিয়ে থাকবে পরীক্ষার্থীরা'।

    উল্লেখ্য, গত ১৮ সেপ্টেম্বর এসএসসি-তে নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষা হয়। পরীক্ষার ৫৪ দিনের মাথায় ৭ নভেম্বর সেই ফল প্রকাশিত হয়। তবে নিয়োগ প্রক্রিয়ার ভবিষ্যত ঝুলে রয়েছে কমিশনের অভিজ্ঞতার নিরিখে অতিরিক্ত ১০ নম্বর দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে হাইকোর্টে দায়ের হওয়া মামলার রায়ের উপর। ইতিমধ্যেই প্রশ্নে ভুল সংক্রান্ত আরও একটি মামলাও চলছে হাইকোর্টে। অভিযোগ, এডুকেশনে ২টো, ইতিহাসে একটি ও ভূগোলে ৩টি প্রশ্ন ভুল ছিল। বিচারপতি অমৃতা সিনহা নির্দেশ দিয়েছেন, লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ হলেও, প্রশ্নে ভুল সংক্রান্ত মামলার পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তা এখনই কার্যকর হবে না।

    তবে, এই জট কাটিয়ে কতদিনে যোগ্য শিক্ষকরা আবার চাকরি পাবে, তা এখন বিঁশবাও জলে।

     

     

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)