অর্ণবাংশু নিয়োগী: প্রাথমিকে নিয়োগে কোনও 'দুর্নীতি-ই' নাকি হয়নি (WB 2014 Primamry TET)! আদালতে এমনটাই দাবি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের (WB 2014 Primamry TET verdict)। প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতিকে "দুর্নীতি" বলতেই নারাজ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ (West Bengal Board of Primary Education)। ক্ষমতার অপব্যবহার "দুর্নীতি"-র সংজ্ঞার মধ্যে পড়ে না (Primamry TET Big Update)। আদালতে সওয়াল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের আইনজীবী কিশোর দত্তের। ওদিকে রাজ্যের বক্তব্য, যারা অকৃতকার্য তাদের একটা প্রবণতা থাকে প্রক্রিয়ার দিকে আঙুল তোলা ((WB 2014 Primamry TET)। এটা সব জায়গাতেই এক।
প্রাথমিকের শুনানি পর্বে (WB 2014 Primamry TET verdict) আদালতের এমনই বেশ কিছু গুরুত্বপুর্ণ মন্তব্য উঠে আসে রাজ্য ও প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে (West Bengal Board of Primary Education)। পাশাপাশি কলকাতা হাইকোর্টের (Kolkata High Court) ডিভিশন বে়ঞ্চের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তোলেন শুনানি পর্বে। বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী বলেন, "একটাই নিয়োগ প্রক্রিয়া। যদি কোনও অ্যাপ্টিটিউড টেস্ট (Aptittude Test) না হয়ে থাকে তাহলে সেটা প্রশিক্ষিত (Trained) এবং অপ্রশিক্ষিত (Non-trained) কারোর ক্ষেত্রেই হয়নি। তাহলে এখন আদালত কী করবে? এখন যদি আদালত ৩২ হাজার অপ্রশিক্ষিত প্রার্থীর চাকরি বাতিল (32000 Jobless) করে, তাহলে বাকি প্রশিক্ষিত প্রার্থীদের কি ছেড়ে দেওয়া হবে? কারণ তারা তো একই নিয়োগ প্রক্রিয়ার অংশ।"
বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী আরও বলেন,"সেটা কীভাবে সম্ভব হবে? ১ লাখ ২৫ হাজার আবেদনকারী, ৪২ হাজার চাকরিপ্রাপক, এতগুলো পরিবার! এই সময়ের মধ্যে তাঁরা চাকরির ৫ বছর সম্পূর্ণ করেছেন। যদি ২ বছর আরও মামলা চলে তাহলে তাঁরা ৭ বছর সম্পূর্ণ করে ফেলবেন। এর ফলে তাঁরা গ্র্যাচুইটির একটা অংশের জন্যও যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন! এর সমাধান কি?"
প্রসঙ্গত, ২০১৪ প্রাইমারি টেটের ৩২০০০ বাতিল চাকরি মামলার (32000 jobless primary teachers case) চূড়ান্ত রায়দান আজ। সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) পুনরায় এই মামলা কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা ফেরত পাঠানোর পর দীর্ঘদিন ধরে চলে শুনানি। অবশেষে কলকাতা হাইকোর্টে (Kolkata High Court) ৩২০০০ চাকরি বাতিল মামলার চূড়ান্ত রায়দান (2014 Primary TET Case Final Verdict)। এই রায়ের দিকে তাকিয়ে সবমহল।
২০২৪-র ৬ মার্চ টেট পরীক্ষা ফর্ম ফিলআপ সংক্রান্ত নোটিফিকেশন জারি হয়েছিল। প্রায় ১৫ লক্ষ পরীক্ষার্থী ফর্ম ফিলআপ করেন। এরপর ২০২৫-র ১১ অক্টোবর টেট পরীক্ষা হয়। প্রায় ১৩ লক্ষ পরীক্ষার্থী পরীক্ষায় বসেন। ২০১৬-র ১৪ সেপ্টেম্বর রেজাল্ট বেরয়। প্রায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার পরীক্ষার্থী সেই প্রাইমারি টেট উত্তীর্ণ হয়। ২০১৬-র ২৬ সেপ্টেম্বর ৪২,৯৪৯ শূন্যপদে নিয়োগের নোটিফিকেশন জারি হয়। ২০২৬-র অক্টোবর মাসে ধাপে ধাপে ইন্টারভিউ হয়। নিয়োগ শুরু হয় ২০১৭-র ফেব্রুয়ারিতে।
প্রথম ধাপে প্রায় ১১,০০০ প্রশিক্ষিত টেট প্রার্থীর নিয়োগ হয়। এরপর প্রায় ৩২০০০ 'অপ্রশিক্ষিত' প্রার্থীর ধাপে ধাপে নিয়োগ হয়। যেই নিয়োগ নিয়েই দুর্নীতির অভিযোগ। অভিযোগ, অ্যাপটিটিউড টেস্ট হয়নি। নিয়োগের প্যানেল প্রকাশ হয়নি। এসএমএস-এ নিয়োগ হয়। কারা নিয়োগ পেল, কারা পেল না, সব অন্ধকারে রাখা হয়। দুর্নীতির অভিযোগে প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Justice Abhijit Ganguly) এই ৩২০০০ অপ্রশিক্ষিত প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি-ই বাতিল করেছিলেন।