• প্রাথমিকে চাকরি বহাল, কী বলছেন SSC চাকরিহারারা?
    আজকাল | ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: "একই পথের দুই দিক"। একদিকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে এসএসসি'র ২৬,০০০ জনের চাকরির প্যানেল বাতিল, অন্যদিকে হাইকোর্টের রায়ে ৩২,০০০ প্রাথমিক শিক্ষকদের চাকরি বহালের ঘটনা। বুধবার হাইকোর্টের রায় কী হয় তা জানার জন্য মুখিয়ে ছিলেন এসএসসি'র  চাকরিহারারাও। রায় ঘোষণার পরেই তাঁদের মুখে শোনা গেল এই কথা। এবিষয়ে নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক চাকরিহারা শিক্ষকের  কথায়,"আমাদের চাকরি চলে গিয়েছে। নতুন করে পরীক্ষায় বসতে হয়েছে। দীর্ঘ দিন চাকরি করার পর যখন চাকরি হারিয়েছি তখন সমাজের মানুষের সামনে নিজেদের অত্যন্ত ছোট মনে হয়েছে। সেই সঙ্গে পরিবার, ঋনের বোঝা নিয়ে এক কঠিন অবস্থার মুখোমুখি আমরা যারা হয়েছি তাদের অবস্থার কথা অন্য কেউ বুঝবে না। কিন্তু আজকে প্রাথমিকের প্যানেল বহালের খবরে আমরা খুশি। কারন এই প্যানেল বাতিল হলে ৩২ হাজার পরিবারের যে কী অবস্থা হত তা আমরা বুঝতে পারছি। হয়ত এসএসসি র মতো আবার পরীক্ষা, আবার অপেক্ষা করে থাকার মতো মানসিক দুশ্চিন্তার অবস্থায় পড়তে হত।" 

    তাঁর কথায়, "ঠিক একই জায়গায় দাঁড়িয়ে আমাদের প্যানেল বাতিলের দিনটা ছিল একটা দুর্বিষহ দিন। সেকারনে নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আগে থেকেই যা যা ব্যবস্থা নিলে নিয়োগ স্বচ্ছ থাকবে সেই ব্যবস্থা নেওয়া হোক। চাকরি পেয়ে চাকরি যাবার বেদনার সমস্যা থেকে এই রাজ্যের বহু ছেলে-মেয়েকে ভুগতে হয়েছে।"

    অন্যদিকে ৩২,০০০-এর তালিকায় থাকা এক প্রাথমিক শিক্ষক বিধান ঘোষ বলেন, "অনিশ্চয়তা কাটার থেকে বড় কথা ৩২,০০০ জনের মাথায় যে কলঙ্কের দাগ ছিল আজ তা কাটল।"

     দীর্ঘ টানাপোড়েনের অবসান। স্বস্তি। স্বস্তি হাইকোর্টের রায়ে। আর তার পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর। এদিন, প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলির সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে খারিজ করে দেয় কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। বুধবার রায়ে জানানো হল, ৩২ হাজার চাকরি বাতিল নয়। 

    নিয়োগ দুর্নীতির মামলার রায় দিতে গিয়ে, প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গাঙ্গুলি ২০২৩ সালের ১২ মে প্রাথমিকের ৩২ হাজার চাকরি বাতিল করে দেন৷ রাজ্য সরকার এই রায়কে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে চ্যালেঞ্জ করে৷ বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি সুপ্রতীম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ চাকরি বাতিলের সিদ্ধান্তের উপর স্থগিতাদেশ দেয়৷পরে মামলা আসে বিচারপতি সৌমেন সেনের ডিভিশন বেঞ্চে। কিন্তু গত ৭ এপ্রিল বিচারপতি সৌমেন সেন ব্যক্তিগত কারণে মামলাটি থেকে সরে দাঁড়ান । এরপর চলতি বছরের ২৮ এপ্রিল থেকে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি ঋতব্রত কুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানি শুরু হয়৷ ২ বছরের কিছু বেশি সময় ধরে শুনানির পর এই মামলার রায় দিল ডিভিশন বেঞ্চ৷ অর্থাৎ মাঝের যে দীর্ঘ সময় ধরে টানাপোড়েন, মানসিক অশান্তিতে ছিলেন রাজ্যের বিপুল সংখ্যক শিক্ষক, এক কথায় তার অবসান। 
  • Link to this news (আজকাল)