• ভগবান শয়তানে পরিণত হয়েছে হাইকোর্টের রায়ের পর মন্তব্য শিক্ষামন্ত্রীর
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫
  • প্রাথমিক নিয়ে সিঙ্গল বেঞ্চের রায় খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। ৩২ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি বহাল থাকছে। স্বভাবতই খুশি শিক্ষক-শিক্ষিকারা। বুধবার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ সভাপতি গৌতম পালকে পাশে নিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য এসএসসি-র যোগ্য চাকরিহারা শিক্ষকরা যাতে স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতার সঙ্গে চাকরি ফিরে পান, তা সুনিশ্চিত করা। গত ৫ বছর ধরে কোর্ট, কাছারি, বিরোধীদের আক্রমণ নিয়ে আমাদের দপ্তর কাজ করে চলেছে। প্রাথমিকের পর এসএসসির যোগ্য চাকরিহারাদের হাতে যদি নিয়োগপত্র তুলে দিতে পারি তাহলে আমাদের বৃত্ত সম্পূর্ণ হবে।‘

    হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার চিন্তা করছে মামলাকারীদের একাংশ। সে প্রসঙ্গে ব্রাত্য জানিয়েছেন, ‘আদালতে যাওয়ার অধিকার সকলের আছে। কেবল সংকীর্ণ রাজনৈতিক দিক থেকে সব কিছু ভাবা ঠিক নয়। যাঁরা চাকরি পেলেন তাঁরাও বাংলারই ছেলে।‘  তিনি আরও বলেন, ‘কী মিথ্যা, কী সত্য হল বলতে পারব না। তবে যাঁরা মানসিক যন্ত্রণায় ছিলেন তাঁরা মাথা উঁচু করে সর্বত্র যেতে পারবেন তাতেই খুশি।‘

    বুধবার প্রাথমিকে চাকরি বহাল থাকার রায় ঘোষণার পর ব্রাত্য বসু প্রথমে এসএসসি অফিসে এবং পরে তৃণমূল ভবনে সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানে নাম না করে তিনি বলেন, ‘ভগবান শয়তানে পরিণত হয়েছে’। হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চের রায় খারিজ করে দিয়েছে। ৩২ হাজার শিক্ষকদের উদ্দেশে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা চিনে নিন কারা আপনাদের পাশে ছিল, পাশে আছে, পাশে থাকবে।’

    ব্রাত্য বসু আরও বলেন, ‘যদি এই রায়ের বিরুদ্ধে কেউ বা কোনও সংগঠন সুপ্রিম কোর্টে যায়, তাহলে আপনারা বুঝে যাবেন, কারা আসলে আপনাদের চাকরি খেতে চায়। মনে রাখবেন আমাদের সরকারকেই একমাত্র ভরসা করা যায়।’  সিপিএম সাংসদ তথা বিশিষ্ট আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য এই রায়কে বিচারপতিদের আবেগতাড়িত রায় বলে মন্তব্য করেছেন। সেই প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আইনের কাছে আবেগের কোন‌ও মূল্য নেই। বিচারক বদলায়, রায়‌ও বদলায়, আইন জেতে।‌ আজকে প্রমাণিত হল আইন জিতেছে।’

    ব্রাত্য বসুর মতো এক‌ই ভঙ্গিমায় অভিজিতের প্রতি কটাক্ষ ছুঁড়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী। এই মামলার শুনানি চলাকালীন একটি পর্যবেক্ষণ বেশ ভাইরাল হয়েছিল। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেছিলেন ‘ঢাকি সমেত বিসর্জন দিয়ে দেব।’ এদিন সেই মন্তব্যকেই হাতিয়ার করে অরূপ বলেন, ‘চাকরিখেকোদের ঢাকি সহ বিসর্জন দিল বঙ্গোপসাগরে।’  রাজ্যের নিয়োগ প্রক্রিয়া যে স্বচ্ছতার সঙ্গে হয়েছিল, তাকে কোর্ট মান্যতা দিল বলে জানান তিনি। এদিন হাইকোর্টের রায় ঘোষণার পর তৃণমূলের আরেক মুখপাত্র কুণাল ঘোষ বলেন, অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় যে রাজনৈতিক অভিসন্ধি নিয়ে এই রায় ঘোষণা করেছিলেন, তা স্পষ্ট হয়ে গেল।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)