• ২৬০০০ চাকরিহারাও তো বহু বছর চাকরি করেছেন! সেই রায় কি ভুল? তাঁর নির্দেশ বাতিলের পর প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ
    আনন্দবাজার | ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫
  • প্রাথমিকে ৩২ হাজার চাকরি বজায় রেখেছে কলকাতা হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। খারিজ করে দেওয়া হয়েছে প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশ। এই সংক্রান্ত প্রশ্নে এ বার মুখ খুললেন অভিজিৎ। প্রশ্ন তুললেন নতুন রায়ের ‘গ্রাউন্ড’ বা ‘ভিত্তি’ নিয়ে। অভিজিৎ জানিয়েছেন, যে কারণ দেখিয়ে ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বজায় রাখা হল, তা ঠিক নয়।

    দুর্নীতির অভিযোগে ৩২ হাজার চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ। বর্তমানে তিনি বিজেপি সাংসদ। তাঁর চাকরি বাতিলের নির্দেশে এত দিন স্থগিতাদেশ ছিল। বুধবার হাই কোর্টের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী এবং বিচারপতি ঋতব্রতকুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, কারও চাকরি বাতিল করা হচ্ছে না। চাকরিরত শিক্ষকদের পরিবারের কথা ভেবে মানবিক কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে দুর্নীতি হয়েছে, তা আদালতে প্রমাণিত। তার তদন্ত চলবে বলেও জানিয়েছেন বিচারপতিরা।

    অভিজিৎ বলেন, ‘‘২৬ হাজার চাকরি যাদের বাতিল হল, তারাও তো অনেক বছর চাকরি করেছিল। তা হলে কি সেই রায় ভুল? আমার মনে হয় এটা কোনও গ্রাউন্ড হতে পারে না।’’ হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘‘ডিভিশন বেঞ্চের বিচার করার ক্ষমতা আছে, তারা যা ভাল মনে করেছে, করেছে। আমার কিছু বলার নেই। বিচারপতি হিসাবে আমি যা মনে করেছিলাম, বলেছিলাম।’’ তাঁর নির্দেশ খারিজ নিয়ে সে ভাবে কোনও মন্তব্য করতে চাননি তমলুকের বিজেপি সাংসদ।

    বুধবার আদালতের পর্যবেক্ষণ, ২০১৬ সাল থেকে ২০২৫ সাল, প্রায় ৯ বছর চাকরি করার পর যদি কারও চাকরি বাতিল হয়, তাঁদের এবং তাঁদের পরিবারের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। আদালত এ-ও জানিয়েছে, চাকরি করার সময় ওই চাকরিপ্রার্থীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠেনি। কয়েক জনের জন্য গোটা নিয়োগপ্রক্রিয়ার ক্ষতি করা যায় না।

    স্কুল সার্ভিস কমিশনে দুর্নীতির অভিযোগে অনুরূপ ভাবেই ২৬ হাজার চাকরি বাতিল হয়েছে। কলকাতা হাই কোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্টে যায় সেই মামলা। সে ক্ষেত্রেও চাকরি বাতিলের প্রথম রায়টি দিয়েছিলেন তৎকালীন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। সুপ্রিম কোর্ট ওই সংক্রান্ত মামলায় ২০১৬ সালের এসএসসি-র সম্পূর্ণ প্যানেল বাতিল করে দেয়। বলা হয়, নতুন করে নিয়োগপ্রক্রিয়ার আয়োজন করতে হবে কমিশনকে। সেই অনুযায়ী নতুন নিয়োগপ্রক্রিয়া চলছে। প্রাথমিকের ক্ষেত্রে তা না-হওয়ায় এসএসসি-র রায়ের দৃষ্টান্ত টানলেন অভিজিৎ।
  • Link to this news (আনন্দবাজার)