• ‘তাঁকে আমেরিকাই তো ট্রেনিং দিয়েছে’, ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদের গুলিকাণ্ডে মুখ খুলল তালিবান সরকার
    এই সময় | ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫
  • হোয়াইট হাউসের কাছে ন্যাশনাল গার্ড সদস্যদের গুলিকাণ্ডে প্রথমবার মুখ খুলল আফগানিস্তানের তালিবান সরকার। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে রহমানউল্লাহ লাকানওয়ালা নামে এক আফগান নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে মেট্রোপলিটন পুলিশ। তার পরেই আফগান অভিবাসীদের মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দিয়েছে আমেরিকা। পাশাপাশি তৃতীয় বিশ্বের দেশ থেকেও আর কোনও অভিবাসীকে জায়গা দেওয়া হবে না বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে তালিবান সরকারের দাবি, রহমানউল্লাহর সঙ্গে আফগানিস্তানের কোনও সম্পর্ক নেই।

    বুধবার আমেরিকার উদ্দেশে ভিডিয়ো বার্তা জারি করেছে তালিবান সরকারের বিদেশ মন্ত্রক। তাতেই প্রথমবার গোটা ঘটনায় আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আফগানিস্তানের বিদেশমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি বলেন, ‘এই কাজ যিনি করেছেন, আমেরিকার সরকারই তাঁকে ট্রেনিং দিয়েছিল। তাই এই ঘটনার সঙ্গে আফগান সরকার বা আফগানিস্তানের জনগণের কোনও সম্পর্ক নেই।’

    গত সপ্তাহের বুধবার মাঝরাতে হোয়াইট হাউসের কয়েকটি ব্লক দূরে ডাউনটাউনে টহল দিচ্ছিলেন ন্যাশনাল গার্ডের সারা বেকস্টম এবং অ্যান্ড্রু উলউ। অভিযোগ, আচমকাই তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি চালান রহমানউল্লাহ লাকানওয়ালা নামের এক আফগান যুবক। পাল্টা হামলা করেন ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যরাও। রীতিমতো গুলির লড়াই শুরু হয়ে যায়। মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, স্মিথ অ্যান্ড ওয়েসন রিভলভার দিয়ে সারা এবং উলফের উপরে হামলা চালিয়েছিলেন রহমানউল্লাহ। ঘটনার একদিন পরে মৃত্যু হয় সারার। অ্যান্ড্রুর অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তল্লাশিতে নেমে সেদিনই রহমানউল্লাহকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

    আমেরিকার প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের একাধিক কর্তার দাবি, লাকানওয়ালা CIA-এর মদতপুষ্ট ‘পার্টনার ফোর্স’-এর সদস্য ছিলেন। উল্লেখ্য, আফগান যুবকদের নিয়ে এই ‘ফোর্স’ তৈরি করেছিল আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থা। তাঁদেরকে স্বল্প মেয়াদের আর্মি ট্রেনিংও দেওয়া হয়েছিল বলে দাবি। তালিবানদের বিরুদ্ধে লড়াই করাই ছিল এই ফোর্সের কাজ। ২০২১ সালে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের সময়ে অপারেশন অ্যালাইজ ওয়েলকাম-এর আওতায় তাঁদের অনেককেই আমেরিকায় আশ্রয় দেওয়া হয়। সেই সময়ে ঠাঁই পান রহমানউল্লাহও।

    এই প্রসঙ্গ টেনে গুলিকাণ্ডের সব দায় আমেরিকার ঘাড়েই চাপিয়ে দিয়েছেন মুত্তাকি। তিনি বলেন, ‘অভিযুক্তকে আমেরিকাই ট্রেনিং দিয়েছে, কাজে লাগিয়েছে, তার পরে তিনি অন্য ভাবে আফগানিস্তান ছেড়ে চলে যান। যা কোনও ভাবেই আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।’

    রহমানউল্লাহ গুরুতর আহত। হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসা চলছে। মঙ্গলবার তাঁকে ভার্চুয়ালি আদালতে পেশ করেছিল পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা এবং হামলার অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে আদালতে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন রহমানউল্লাহ।

  • Link to this news (এই সময়)