• প্রবল চাপের মুখে ‘সঞ্চার সাথী’ নির্দেশ প্রত্যাহার
    বর্তমান | ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নয়াদিল্লি: ‘সঞ্চার সাথী’ অ্যাপ নিয়ে দেশজুড়ে বিতর্কের মুখে মঙ্গলবারই ঢোঁক গিলেছিল মোদি সরকার। তাতেও সমালোচনা থামেনি। বরং প্রশ্ন ওঠে, মোবাইল নির্মাতা সংস্থাগুলিকে পাঠানো নির্দেশিকা কি বদল করা হয়েছে? সেখানে তো স্পষ্টই লেখা, বিক্রির আগে স্মার্টফোনে ‘সঞ্চার সাথী’ অ্যাপ ‘প্রি-ইনস্টল’ করা বাধ্যতামূলক! এহেন চাপের মুখে শেষমেশ গত ২৮ নভেম্বর জারি করা নির্দেশিকা প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হল কেন্দ্র। বুধবার কেন্দ্র জানিয়েছে, কোনও স্মার্টফোনেই ‘সঞ্চার সাথী’ অ্যাপ ‘প্রি-ইনস্টল’ করে রাখার প্রয়োজন নেই। আর পাঁচটা সাধারণ অ্যাপের মতো এটিও গ্রাহক নিজেই ফোনে ডাউনলোড করে নেবে। তবে ভাঙলেও মচকাতে রাজি নয় সরকার। তারা যুক্তি দিয়েছে, এখনও পর্যন্ত প্রায় দেড় কোটি মানুষ এই অ্যাপ ডাউনলোড করে ফেলেছে। প্রতিদিন এই সংখ্যা বাড়ছে। ‘সঞ্চার সাথী’র জনপ্রিয়তা ক্রমশ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণেই এই অ্যাপ স্মার্টফোনে ‘প্রি-ইনস্টল’ থাকা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে না। তবে এদিনও বিষয়টি নিয়ে মোদি সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেছে বিরোধীরা। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে বলেন, ‘সাধারণ মানুষের গলা টিপে ধরার জন্য কেন্দ্রের তরফে যত রকম চেষ্টা হচ্ছে, তাতে সঞ্চার সাথীও যুক্ত হল। সাধারণ মানুষ নিজের পরিজন-বন্ধুদের সঙ্গে কী কথা বলছে, তা সরকার কেন জানতে চায়? এর প্রয়োজনীয়তা কী?’

    আগের নির্দেশিকায় কেন্দ্র জানিয়েছিল, সাইবার প্রতারণায় প্রতিদিন সাধারণ মানুষ লক্ষ লক্ষ টাকা হারাচ্ছে। সঞ্চার সাথী অ্যাপের সাহায্যে সন্দেহজনক ফোন ও ভিডিও কল চিহ্নিত করা যাবে। কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগ, পেগ্যাসাস স্পাইওয়্যারের কায়দাতেই ৭৫ কোটি স্মার্টফোন গ্রাহকের উপর চরবৃত্তি করতে চাইছে মোদি সরকার।চাপের মুখে মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় টেলিকম মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া জানান, এই অ্যাপ স্মার্টফোনে রাখা বাধ্যতামূলক নয়। ‘প্রি-ইনস্টল’ থাকলেও তা ‘আনইনস্টল’ করতে পারবেন গ্রাহক। তাতেও বিতর্ক পুরোপুরি থামেনি। জোরদার হচ্ছিল অ্যাপের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের উপর নজরদারির তত্ত্ব।এদিন লোকসভায় ‘সঞ্চার সাথী’র সমর্থনে সওয়াল করেন সিন্ধিয়া। কংগ্রেস সাংসদ দীপেন্দর সিংয়ের করা প্রশ্নের জবাবে লোকসভায় দাঁড়িয়ে তিনি বলেন, ‘সঞ্চার সাথীর সাহায্যে নজরদারি সম্ভব নয়, নজরদারি চালানো হবেও না। এই অ্যাপ যখন খুশি ডিলিট করা যাবে। গণতন্ত্রে নাগরিকের এই অধিকার রয়েছে। আমরা শুধু সকলের কাছে এটি সহজলভ্য করার জন্য এই পদক্ষেপ করেছি।’
  • Link to this news (বর্তমান)