• নিউ বারাকপুর-বারাসত মেট্রোর কাজ বন্ধ, সংসদে তৃণমূলের প্রশ্নে জমিজটের যুক্তি রেলমন্ত্রীর
    বর্তমান | ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলাকে নানাভাবে কোণঠাসা করতে নিত্যনতুন অজুহাত আমদানি করে কেন্দ্রের সরকার। শাসক তৃণমূলের তরফে এমন অভিযোগ দীর্ঘদিনের। ফের সামনে এল তেমনই এক ‘অজুহাত’! সংসদে তৃণমূল সাংসদদের প্রশ্নের জবাবে রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়ে দিলেন, জমিজটের কারণে আপাতত বন্ধ নিউ বারাকপুর-বারাসত মেট্রো প্রকল্পের কাজ। একই কারণে বন্ধ রয়েছে বারাকপুর-বরানগর মেট্রোর কাজও। এবং এর জন্য দায়ী রাজ্যই! শুধু তাই নয়, মাঝেরহাট-এসপ্ল্যানেড এবং বেলেঘাটা-দমদম বিমানবন্দর (জয়হিন্দ) অংশে মেট্রোর কাজের গতি অত্যন্ত শ্লথ হওয়ার কারণ হিসেবেও সেই জমিজটকে দায়ী করছেন মন্ত্রী। 

    বুধবার লোকসভায় বাংলার মেট্রো প্রকল্প নিয়ে আলাদাভাবে লিখিত প্রশ্ন করেন তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শত্রুঘ্ন সিনহা। পৃথক দু’টি লিখিত জবাবে এদিন রেলমন্ত্রী যে তথ্য পেশ করেছেন, তাতে নির্মীয়মাণ মেট্রো প্রকল্পগুলি নিয়ে চূড়ান্ত অনিশ্চয়তার ছবিই ধরা পড়েছে। তিনি জানিয়েছেন, নোয়াপাড়া-বারাসত (১৮ কিমি) মেট্রো প্রকল্পের মধ্যে নোয়াপাড়া-জয়হিন্দ অংশে (৬.৭৭ কিমি) কাজ শেষ হয়েছে। জয়হিন্দ থেকে বারাসত পর্যন্ত ১১.৩৬ কিমির মধ্যে জয়হিন্দ থেকে মাইকেল নগর পর্যন্ত কাজ চলছে। কিন্তু জমিজট এবং জবরদখলের জন্য নিউ বারাকপুর থেকে বারাসত (৭.৫ কিমি) অংশে মেট্রোর কাজ বন্ধ রয়েছে। এছাড়া, বরানগর-বারাকপুর (১২.৫ কিমি) মেট্রো প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য কলকাতা পুরসভার জলের পাইপলাইন সরানো প্রয়োজন। ২০১২ সাল থেকে এর উদ্যোগ শুরু হলেও রাজ্যের তরফে ‘নো-অবজেকশন সার্টিফিকেট’ মেলেনি এখনও। তাই এক্ষেত্রেও আপাতত কাজ বন্ধ করে রাখা হয়েছে। রেলমন্ত্রী লিখিতভাবে আরও জানিয়েছেন, মাঝেরহাট-এসপ্ল্যানেড (৬.২৬ কিমি) অংশের মেট্রো প্রকল্পের কাজ জমি জটের কারণেই অত্যন্ত ধীরগতিতে চলছে। এটি জোকা-এসপ্ল্যানেড (১৪ কিমি) মেট্রো প্রকল্পের অংশ। তিনি উল্লেখ করেছেন, মাঝেরহাট-এসপ্ল্যানেড অংশে খিদিরপুর মেট্রো স্টেশনের আনুষঙ্গিক কাজের জন্য জমির অনুমোদন মিলেছে পাঁচ বছর পর। কিন্তু ডাঃ বি সি রায় মার্কেট এলাকায় জমি জট সাড়ে তিন বছরেও কাটেনি। 

    অন্যদিকে, বেলেঘাটা (বর্তমান ভবন) থেকে দমদম এয়ারপোর্ট পর্যন্ত ২২.২ কিমি অংশে কাজে বিলম্বের কারণ হিসেবেও রেলমন্ত্রী চিংড়িঘাটা ক্রসিংয়ে যানবাহন নিয়ন্ত্রণের অনুমতি না আসার কথা জানিয়েছেন। বৈষ্ণবের ঘোষণা, ১৯৭২ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত ৪২ বছরে কলকাতায় মাত্র ২৮ কিমি অংশে মেট্রো চালু হয়েছিল। আর মোদি সরকারের ১১ বছরে ৪৫ কিমি অংশে মেট্রো চালু করেছে। স্পেশাল ট্রেন নিয়ে তৃণমূল সাংসদ মালা রায়ের অন্য একটি প্রশ্নের জবাবে রেল যা বলেছে, তাতে বাংলার প্রতি কেন্দ্রের বৈষম্যমূলক আচরণই একপ্রকার মান্যতা পেয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। পাশাপাশি ‘কবচ’ প্রযুক্তি নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্নের লিখিত জবাবে স্পষ্ট হয়েছে, যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে ভাবিত নয় রেল।
  • Link to this news (বর্তমান)