• লরির ধাক্কা বাইকে, ছাত্রের বাদ যাওয়া পা নিয়ে স্থানীয়রা হাসপাতালে
    বর্তমান | ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: বুধবার সাতসকালে দুর্ঘটনা ঘটল বেঙ্গল কেমিকেলসের সামনে। বাবার সঙ্গে বাইকে করে স্কুলে যাওয়ার সময় বেপরোয়া লরির ধাক্কায় গুরুতর মারাত্মক জখম হয়েছে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্র। নাম সৃঞ্জয় দত্ত (১১)। বাইক থেকে সে ছিটকে পড়লে লরিটি তার ডান পায়ের উপর দিয়ে চলে যায়। শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে তার পা। আহত হয়েছেন বাবা গৌতম দত্ত। স্থানীয় লোকজনই দু’জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই বর্তমানে চিকিৎসাধীন ওই পড়ুয়া। লরিকে আটক করেছে ফুলবাগান থানা। চালককে গ্রেফতার করা হয়েছে।

    পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাগমারির বাসিন্দা ওই ছাত্র বিধাননগর মিউনিসিপ্যাল স্কুলে পড়ে। প্রতিদিনই বাবা বাইকে করে সৃঞ্জয়কে স্কুলে দিয়ে আসেন। অন্যান্য দিনের মতো বুধবার ভোর ৫টা ৫০ মিনিট নাগাদ ছেলেকে বাইকের পিছনে বসিয়ে রওনা দেন বাবা। দু’জনের মাথাতেই হেলমেট ছিল। বাইকটি চলছিল স্বাভাবিক গতিতে। ৬টা নাগাদ বেঙ্গল কেমিকেলসের কাছে আসতেই একটি লরি বেপরোয়া গতিতে এসে ধাক্কা মারে বাইকে। অভিঘাতে দু’জনেই বাইক থেকে ছিটকে পড়ে রাস্তায়। ডানদিকে পড়ে সৃঞ্জয়, আর গৌতমবাবু পড়েন বাঁদিকে। সেই সময় লরিচালক ডানদিকে কাটিয়ে পালানোর চেষ্টা করলে ছাত্রের ডান পায়ের উপর দিয়ে চাকা চলে যায়। চিৎকার করে ওঠেন স্থানীয়রা। তাঁরা লরিটিকে ধাওয়া করে ধরে ফেলেন। খবর দেওয়া হয় ফুলবাগান থানায়। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রাস্তায় পড়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিল সৃঞ্জয়। তার ডান পা শরীর থেকে আলাদা হয়ে যায়। ওই পা একটি বস্তায় ভরে তাঁরা সৃঞ্জয় ও তার বাবাকে নিয়ে যান ইএম বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে বর্তমানে চিকিৎসাধীন ওই ছাত্র। জানা গিয়েছে, সন্ধ্যায় তার পায়ে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। তবে তার বাবার আঘাত গুরুতর না হওয়ায় তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

    ফুলবাগান থানার পুলিশ লরিটিকে বাজেয়াপ্ত করে থানায় নিয়ে গিয়েছে। বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানো ও অনিচ্ছাকৃত খুনের চেষ্টা সহ একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে লরিচালককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জানা গিয়েছে, সে মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিল। সেকারণে লরির উপর তার নিয়ন্ত্রণ ছিল না। স্থানীয়দের দাবি, বেঙ্গল কেমিকেলস সংলগ্ন এলাকায় রাত ১০টার পর থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত বেপরোয়া গতিতে লরি চলাচল করে। এই রাস্তা দিয়ে ভোরের দিকে অনেক মা-বাবাই বাচ্চাদের বাইক বা গাড়িতে করে স্কুলে দিতে যান। মাঝেমধ্যেই এখানে দুর্ঘটনা ঘটছে। সকালের দিকে ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েনের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
  • Link to this news (বর্তমান)