• কলকাতায় নাশকতার চক্রান্ত, পাঁচ জেএমবি জঙ্গির যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
    বর্তমান | ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ২০১৬ সালে কলকাতায় বড়সড় নাশকতা ঘটানোর চক্রান্তের অভিযোগে ধৃত পাঁচ জেএমবি জঙ্গিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিল আদালত। মঙ্গলবার আদালত এই পাঁচ জেএমবি জঙ্গিকে দোষী সাব্যস্ত করে। বুধবার কলকাতার নগর দায়রার (বিচারভবন) বিশেষ আদালতের বিচারক রোহন সিনহা ওই আদেশ দিয়েছেন। বিচারক সাজার সঙ্গে প্রত্যককে কুড়ি হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে তিন মাসের হাজতবাসের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি ধৃতদের বিরুদ্ধে অন্যান্য একাধিক ধারাতেও পৃথক পৃথক সাজা ও আর্থিক জরিমানা ঘোষিত হয়। তবে আদালতের মন্তব্য, সমস্ত সাজা একই সঙ্গে চলবে। সাজাপ্রাপ্ত পাঁচ অপরাধী হল, মহম্মদ সাহিদুল ইসলাম, জাহিরুল ইসলাম ওরফে কৌসর, মহম্মদ রুবেল ও মৌলানা ইউসুফ শেখ ও আনোয়ার হোসেন ফারুক। এরমধ্যে আনোয়ার বাদে বাকি চার জঙ্গি হল বর্ধমানের খাগড়াগড় বিস্ফোরণ কাণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত আসামি। অন্যদিকে, আবদুল কালাম নামে খাগড়াগড় মামলায় সাজাপ্রাপ্ত এক অপরাধী অবশ্য কলকাতা কাণ্ডে প্রমাণের অভাবে খালাস পায়। যদিও সাজা নিয়ে ধৃতদের আইনজীবী কোনও মন্তব্য করেননি। তবে এই মামলার সরকারি আইনজীবী জয়ন্ত চক্রবর্তী বলেন, সাম্প্রতিককালে এই আদালতে পাঁচ জেএমবি জঙ্গির সাজা উল্লেখযোগ্য ঘটনা। তাই আদালতের রায়ে খুশি সরকার পক্ষ। কলকাতা পুলিশের এসটিএফের তদন্তেরও তিনি প্রশংসা করেন। তিনি জানান, এই মামলায় ১৫ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য পেশ করেন।     

    আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৬ সালে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ গোপন সূত্রে খবর পায়, জেএমবি জঙ্গিরা কলকাতায় নাশকতা ঘটানোর চক্রান্ত করছে। সেই মতো এসটিএফের একটি টিম তদন্তে নামে। এরপরই এই চক্রান্তে জড়িত থাকার অপরাধে পুলিশ অসম, বনগাঁ ও বসিরহাট থেকে একে একে অভিযুক্তদের পাকড়াও করে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় কলকাতার মানচিত্র, বিভিন্ন জাল নথিপত্র, জেহাদি পত্র‑পত্রিকা, জিলেটিন স্টিক, বিস্ফোরক, বিস্ফোরক তৈরির সরঞ্জাম সহ নানা দ্রব্য। ধৃতদের জেরা করে পুলিশ জানতে পারে, কলকাতা সহ ভারতের অন্যান্য প্রদেশেও নাশকতা ঘটানোর চক্রান্ত করেছিল এই জঙ্গিরা। তবে মূল টার্গেট ছিল তাদের কলকাতা শহরে বড়সড় নাশকতা ঘটানো। ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল পরীক্ষাগারে। এই মামলায় ধৃত বাংলাদেশি জাবিরুল ও আনোয়ার হোসেন ফারুকের বিরুদ্ধে এদিন অন্যান্য সাজার সঙ্গে ভারতে বেআইনি অনুপ্রবেশের অপরাধেও তাদের বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণা করেন বিচারক। যদিও আদালতে সাজা ঘোষণার আগে অপরাধীরা দাবি করে, তাদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন। তাদের যেন মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। যদিও সরকারি আইনজীবী আপত্তি করেন।
  • Link to this news (বর্তমান)