পরিস্রুত পানীয় জল চাই, মেয়রকে কাছে পেয়ে দাবি আবাসন কর্তাদের
বর্তমান | ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: পানীয় জল, নিকাশি থেকে শুরু করে জঞ্জাল অপসারণ—কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের সামনে নানা দাবিদাওয়া তুলে ধরলেন শহরের বিভিন্ন বহুতল আবাসনের বাসিন্দারা। বুধবার ক্ষুদিরাম অনুশীলন কেন্দ্রে আবাসনগুলির পরিচালন সমিতির কর্তাব্যক্তিদের নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছিল। সেখানে মেয়র ছাড়াও কলকাতা পুরসভার একাধিক মেয়র পারিষদ এবং শহরের একাধিক বিধায়ক উপস্থিত ছিলেন। হাতের কাছে মেয়রকে পেয়ে নিজেদের নানা অভাব-অভিযোগ তুলে ধরেন আবাসন কমিটির কর্তারা। মেয়র তাঁদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। তাঁদের ফোন নম্বরও নিয়েছেন তিনি।
সূত্রের খবর, এদিন মূলত পানীয় জলের সমস্যা নিয়ে বিভিন্ন আবাসনের প্রতিনিধিরা সরব হন। সিংহভাগের একটাই বক্তব্য, মাটির নীচের জল তুলে পান করতে হচ্ছে। পুরসভা পরিস্রুত পানীয় জলের আশ্বাস দিলেও তা মিলছে না। ডায়মন্ড সিটি আবাসনের বাসিন্দা মানসী চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের আবাসনে প্রায় হাজার ফ্ল্যাট রয়েছে। কিন্তু জল নিয়ে খুব সমস্যা। মুখ্যমন্ত্রী যদি বিষয়টি দেখেন, খুব ভালো হয়।’ জঞ্জাল অপসারণ নিয়েও সমস্যার কথা জানান তিনি। জঞ্জাল অপসারণের জন্য টাকা দিতে হয় বলেও জানানো হয় কয়েকটি আবাসনের তরফে। বেহালার একটি আবাসনের পরিচালন সমিতির কর্তা বলেন, ‘আমরা নিয়মিত সম্পত্তি কর মিটিয়ে দিই। আবার আমাদের থেকে জঞ্জাল অপসারণের টাকাও নেওয়া হয়। এটা কেন হবে?’ মেয়র বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন। সাউথ সিটি আবাসনের তরফে দেবাশিস বসু আবাসন চত্বরে সুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট পরিষ্কার করার দাবি জানান মেয়রের কাছে। কাঁকুড়গাছির একটি আবাসনের তরফে সংলগ্ন রাস্তায় দিনের পর দিন ইট-বালি পড়ে থাকার অভিযোগ করা হয়। ৫৯ নম্বর ওয়ার্ডের একটি আবাসনের তরফে এক প্রতিনিধি জানান, তাঁদের আবাসনের পাশের একটি ভ্যাট থেকে দেদার দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে সারাক্ষণ। বৈঠকে বসেই বিবিধ সমস্যার নোট নিয়েছেন মেয়র। প্রয়োজনে আবাসন কর্তৃপক্ষ যাতে সরাসরি তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন, তার জন্য নিজের ফোন নম্বরও তাঁদের দিয়েছেন ফিরহাদ।
পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে মেয়র বলেন, ‘পুরসভার পরিস্রুত পানীয় জল না পাওয়ার কথা অনেকেই বলেছেন। এটা সত্যিই বড় সমস্যা। আমি ওঁদের আশ্বস্ত করেছি। ধীরে ধীরে সমস্ত বহুতল আবাসনেই পানীয় জল ঢোকানোর ব্যবস্থা হবে। এই মুহূর্তে আবাসনগুলিতে জল সরবরাহের জন্য পর্যাপ্ত জল তৈরি হয় না। আমাদের নতুন জলপ্রকল্পের কাজ চলছে। সব আবাসনে একসঙ্গে চাহিদা মেটাতে পারব না। তবে ধাপে ধাপে সেটা করব।’ মেয়র আরও জানিয়েছেন, বিভিন্ন আবাসনের ফোন নম্বর বরো আধিকারিকদের দিয়ে দেওয়া হবে। তাঁরাই আবাসনগুলির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখবেন। কোথায় কী সমস্যা, সেই মতো সমাধানের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন তাঁরা।