• ‘স্বাস্থ্যবন্ধু’ প্রকল্পে ২০ দিনেই উপকৃত এক লক্ষ মানুষ, খুশি মুখ্যমন্ত্রী
    প্রতিদিন | ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫
  • স্টাফ রিপোর্টার: ২০ দিনেই এক লক্ষ পার! ১১ নভেম্বর রাজ্যে শুরু হয়েছিল ‘স্বাস্থ্যবন্ধু’ প্রকল্প। মানুষের দোরগোড়ায় চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দিতে ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসা ইউনিটের মতো অভিনব উদ্যোগ নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার সমাজমাধ্যমে এই প্রকল্পের সাফল্য তুলে ধরে মমতা জানান, মাত্র ২০ দিনেই ক্যাম্পে আসা মানুষের সংখ্যা এক লক্ষ পার হয়ে গিয়েছে। একইসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ১১০টি ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসা ইউনিটকে জনসেবায় যুক্ত করা হয়েছে। আরও ১০০টি ইউনিট শীঘ্রই এই পরিষেবায় যোগদান করবে। ‘এটি আমাদের সরকারের আরেকটি জনবান্ধব উদ্যোগ।’ বলে উল্লেখ করে মমতা আরও জানান, এখন পর্যন্ত ১০২৭টি শিবির আয়োজন করা হয়েছে। এই শিবিরগুলিতে যাঁরা এসেছেন তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই মহিলা এবং বয়স্ক।

    তাঁর কথায়, “এই শিবিরগুলিতে শত শত অভাবী মানুষ বিনামূল্যে ল্যাব পরীক্ষা, ইসিজি এবং ইউএসজি-সহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা পরিষেবা গ্রহণের জন্য আসছেন, বিশেষ করে বয়স্ক ব্যক্তি এবং মহিলাদের সেবা প্রদানের জন্য।” স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর, একেকটি ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসা ইউনিট যেন ছোট্ট একটি অত্যাধুনিক হাসপাতালের খুদে সংস্করণ। যেখানে হিমোগ্লোবিন, কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট, প্রেগন্যান্সি, কোলেস্টেরল, কিডনি, লিভার ফাংশন, ইউরিক অ্যাসিড, ইসিজি, চেস্ট এক্সরে-সহ ৩৫ ধরনের টেস্ট করার ব্যবস্থা রয়েছে। পরীক্ষার ফলাফল জানিয়ে দেওয়া হবে কিছুক্ষণের মধ্যেই। রয়েছে ইসিজি মেশিন, নেবুলাইজার, আল্ট্রাসোনোগ্রাফি মেশিনও। প্রশিক্ষিত নার্স, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা দ্রুত রোগ নির্ধারণ করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করছেন। স্বাভাবিকভাবেই জেলার প্রত্যন্ত এলাকাতে এই ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসা ইউনিট হাজির হয়ে যাওয়ায় মানুষ সঠিক চিকিৎসা পরিষেবা পাচ্ছেন। তাঁদের কষ্ট করে হাসপাতালে যেতে হচ্ছে না। ফলে ‘স্বাস্থ্যবন্ধু’ শিবিরে ভিড় বাড়ছে। সেই দিকে লক্ষ রেখেই আরও ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসা ইউনিট বাড়িয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।

    চিকিৎসা পরিষেবায় মাইলফলক তৈরি করার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবসে বিশেষভাবে সক্ষমদের পাশে থাকার বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। সমাজমাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বান, “আসুন আমরা সবাই মিলে এমন একটি সমাজ গড়ে তোলার অঙ্গীকার করি, যেখানে প্রতিটি ব্যক্তি, তাঁদের পরিস্থিতি নির্বিশেষে, সমান সুযোগ এবং সম্মানের সঙ্গে বসবাস করতে পারেন।” রাজ্য সরকার বিশেষভাবে সক্ষম মানুষদের জন্য সব ধরনের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথায়, “আমাদের সরকার জন্ম থেকেই প্রতিবন্ধীদের জীবনচক্র জুড়ে সহায়তা করার জন্য প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা শক্তিশালী করেছে। মানবিক পেনশন, ছাত্রবৃত্তি, কৃত্রিম উপকরণ বিতরণ এবং সকলের জন্য স্বাস্থ্যসেবার মতো প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিবন্ধীদের জন্য একটি শক্তিশালী সামাজিক সুরক্ষা নেটওয়ার্ক তৈরি করেছি।”

    তিনি জানান, সঠিক সময়ে যাতে সংশোধন করা যায় তার জন্য বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য সরকার। অস্বাভাবিকতা এবং বিকাশগত দেরির বিষয়টি শনাক্ত করার জন্য নবজাতক শিশুদের স্ক্রিনিং করা হচ্ছে। এছাড়াও তাঁদের জন্য বিশেষ স্কুল পরিচালনা, বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের জন্য সমস্ত স্কুলে বিশেষ শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাঁদের দক্ষতা তুলে ধরার চেষ্টা করা হয় যাতে তাঁরা একটি উপযুক্ত জীবিকা অর্জন করতে পারেন। একইসঙ্গে সরকারি চাকরিতে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। যার মাধ্যমে বিশেষভাবে সক্ষমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং মর্যাদার সঙ্গে জীবনযাপন করতে পারেন।
  • Link to this news (প্রতিদিন)