এই সময়: রাজ্য সরকারের মানবিক ভাতা মাসিক পাঁচ হাজার টাকা না–করা হলে এ বার রাজ্যজুড়ে আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারি দিলেন বিশেষ ভাবে সক্ষমরা। নিজেদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে জেলায় জেলায় জেলাশাসকের অফিস ঘেরাওয়ের কথাও জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। বিশেষ ভাবে সক্ষমদের অন্যতম সংগঠন ‘পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনী’–র তরফে বুধবার বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষে রানি রাসমণি রোডে একটি সমাবেশের ডাক দেওয়া হয়েছিল। সারা রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে বিশেষ ভাবে সক্ষমরা এতে অংশ নেন।
এই সংগঠনের তরফে প্রবীণ বাম নেতা তথা বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, ‘কেন্দ্র ও রাজ্যের সরকার বিশেষ ভাবে সক্ষমদের ধারাবাহিক ভাবে বঞ্চনা করে আসছে। এর প্রতিবাদে সর্বত্র আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’ সংগঠনের দাবি, রাজ্যে বাম সরকারের আমলে বিশেষ ভাবে সক্ষমদের মাসিক ভাতা ছিল ৭৫০ টাকা। ২০১১–তে তৃণমূল সরকার ক্ষমতায় আসার পরে ওই ভাতা বেড়ে হয় এক হাজার টাকা। এখন তা বাড়িয়ে পাঁচ হাজার টাকা করার দাবি জানানো হয়েছে সংগঠনের তরফে। রাজ্যসভার সাংসদ তথা আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘অধিকার ছিনিয়ে আনতে হবে বিশেষ ভাবে সক্ষমদের। অধিকার প্রতিষ্ঠা করে মর্যাদার সঙ্গে বাঁচতে হলে যতই প্রতিবন্ধকতা থাক দাবি আদায় নিশ্চিত করতে লাঠিও ধরতে হবে।’
রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী সুভাষ নস্কর, চিকিৎক অদিতি বন্দ্যোপাধ্যায়, ‘রেয়ার ডিজি়স ফাউন্ডেশন অফ ইন্ডিয়া’র কর্ণধার সৌরভ সিং–সহ একাধিক ব্যক্তি সমাবেশের মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা জানান, এ বারের বিশ্ব প্রতিবন্ধী দিবসের স্লোগান হচ্ছে, বিশেষ ভাবে সক্ষমদের বান্ধব সমাজ গড়ে তোলা। যাতে সমাজে চলাফেরা করতে তাঁদের কোনও অসুবিধা না হয়। তাই এ দিন সমাবেশের মঞ্চ থেকে বিশেষ ভাবে সক্ষমদের তরফে ১০০ দিনের কাজে অন্তর্ভুক্ত করা, আবাস যোজনায় পাকা বাড়ি নিশ্চিন্ত ব্যবস্থা–সহ একাধিক দাবি তোলা হয়। তাঁদের যুক্তি, সম্প্রতি অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার বিশেষ ভাবে সক্ষমদের জন্য মাসিক ভাতা চার হাজার টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তা হলে এই রাজ্যে কেন ভাতা বাড়ানো যাবে না? সমাবেশের মঞ্চে বিশেষ ভাবে সক্ষম শিল্পীরা গান, নাচ–সহ বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন।
দীর্ঘ দিন ধরে রাজ্যে বিশেষভাবে সক্ষমদের উন্নয়ন নিয়ে ধারাবাহিক ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন রাজ্যের বাম নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি প্রতিবন্ধী সম্মিলনীর সাধারণ সম্পাদকও।অসুস্থতার জন্য হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকায় তিনি আসতে পারেননি সমাবেশে।