• হুমায়ুনকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ বোসের, এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন
    এই সময় | ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫
  • এই সময়: আগামী ৬ ডিসেম্বর মুর্শিদাবাদে ‘বাবরি মসজিদ’-এর শিলান্যাস করবেন বলে জানিয়েছেন তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। এই কর্মসূচি নিয়ে রোজই নিত্যনতুন হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন ভরতপুরের বিধায়ক। বচসা-বিতর্কে জড়াচ্ছেন পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গেও। এমনকী, ওই দিন তিনি ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন। তবে রাজ্য প্রশাসন হুমায়ুনের এই কর্মসূচিকে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছেন বলে শোনা যায়নি। কিন্তু এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করলেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। বুধবার লোকভবন জানিয়েছে, রাজ্যপালের নির্দেশ, এই কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে রাজ্যে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হলে বা তেমন পরিস্থিতি এলে হুমায়ুনকে আগাম গ্রেপ্তার করতে হবে। তবে রাজ্যপাল সরাসরি এমন নির্দেশ দিতে পারেন কিনা, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

    এই পরিস্থিতিতে আজ, বৃহস্পতিবার দুপুরে মুর্শিদাবাদের বহরমপুর স্টেডিয়ামে জনসভা করার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। জানা গিয়েছে, জনপ্রতিনিধি হিসেবে সেই সভায় আমন্ত্রণ পেয়েছেন হুমায়ুন। বুধবার দুপুরে ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক দাবি করেন, তিনি মমতার সভার আমন্ত্রণপত্র পেয়েছেন। হুমায়ুন জানান, ওই সভায় যোগ দেবেন। মুখ্যমন্ত্রী যা নির্দেশ দেবেন। তিনি তা মানবেন। রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, তা হলে কি কর্মসূচি থেকে পিছিয়ে আসার জন্য তিনি মমতার নির্দেশকে ঢাল করার পরিকল্পনা করেছেন? ধন্দ বাড়িয়ে হুমায়ুন অবশ্য বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীর সভায় যাব ঠিকই। কিন্তু কোনওমতে মসজিদ নির্মাণের ব্যাপারে পিছিয়ে আসব না। বাবরি মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন হবেই।’ রাজ্যপালের নির্দেশ প্রসঙ্গে হুমায়ুন বলেন, ‘রাজ্যপাল আমাকে বলছেন গ্রেপ্তার করতে। আমাকে গ্রেপ্তার করার আগে তিনি রাজ্যপাল পদ থেকে পদত্যাগ করে বিধানসভার নির্বাচনে দাঁড়িয়ে যান।’

    সূত্রের খবর হুমায়ুনকে গ্রেপ্তার করার জন্য রাজ্য সরকারকে ইতিমধ্যে চিঠিও পাঠিয়েছেন রাজ্যপাল বোস। রাজ্যপালের মতে, হুমায়ুন কবীরের বক্তব্য বা পরবর্তী পদক্ষেপে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হলে ‘প্রিভেনটিভ অ্যারেস্ট’ করতেই হবে। রাজ্যপাল সতর্ক করেছেন, রাজ্য প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে তিনি নিজেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবেন। আইনি বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যা, রাজ্যপাল রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান। ফলে পদাধিকার বলে তিনি কোনও প্রশাসনিক নির্দেশ দিতে পারেন না। পদক্ষেপ করতে তো পারেনই না। তবে রাজ্যকে পরামর্শ দিতে পারেন। রাজ্য সেই পরামর্শ মানতে বাধ্য কিনা, তা নিয়েও মতভেদ রয়েছে।

    হুমায়ুন কবীর মুর্শিদাবাদে জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ করার ডাকও দিয়ে ফেলেছেন ইতিমধ্যে। এমনকী প্রশাসনকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘যেভাবে প্রশাসন ৬ তারিখ বাবরি মসজিদের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে বাধা তৈরি করতে চাইছে, তাতে ওই অনুষ্ঠান করতে না পারলে ৬ তারিখে রেজিনগর থেকে বহরমপুর পর্যন্ত জাতীয় সড়ক অবরুদ্ধ করে দেব।’ তাঁর সংযোজন, ‘মুর্শিদাবাদের পুলিশ-প্রশাসনকে বলছি, আগুন নিয়ে খেলতে আসবেন না।’ এর পরেই বেলডাঙার এসডিপিও উত্তম গরাইকে আক্রমণ করে বলেন, ‘আপনি আমার কাজে বাধা দিচ্ছেন। যেদিন আপনার কলার ধরে নেব সেদিন কলার ছাড়ানোর লোক পাবেন না।’ জেলা পুলিশ অবশ্য এ বিষয়ে সরকারি ভাবে কোনও বক্তব্য জানায়নি।

  • Link to this news (এই সময়)