সোমা মাইতি: হুমায়ুন কবীরকে নিয়ে এই মুহুর্তে রাজ্য রাজনীতি উত্তাল। দলবিরোধী কাজের অভিযোগে তৃণমূল থেকে সাসপেন্ডেড ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। বাবরি মসজিদ বিতর্কের মধ্যে দল থেকে সাসপেন্ড করা হল তাঁকে। শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে হুমায়ুনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আজ ৪ তারিখ মূর্শিদাবাদে SIR প্রতিবাদ সভায় পরিষ্কার জানিয়ে দেন, 'মুর্শিদাবাদের মানুষ হিংসা পছন্দ করে না। যেই উস্কানি দিক, বরদাস্ত করব না। সাম্প্রদায়িকতাকে রুখব যে কোন শর্তে'। অর্থাত্ নাম না করেই ভরতপুরের বিধায়ককে তিনি যে স্পষ্টবার্তা দিয়ে দিলেন, তা কার্যত পরিষ্কার।
এই নিয়ে ফিরহাদ বলেন, 'তিনবার হুমায়ুনকে সতর্ক করা হয়েছিল। আমরা দেখেছি হঠাৎ করে তিনি ঘোষণা করলেন যে বাবরি মসজিদ তৈরি করবেন। হঠাৎ বাবরি মসজিদ কেন? আমরা আগেই তাঁকে সতর্ক করে দিয়েছিলাম। তাই আমাদের দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে বিধায়ক হুমায়ুন কবিরকে সাসপেন্ড করছি।' ফিরহাদ হাকিমের 'সাসপেন্ড' শব্দটি উচ্চারণ করেছেন। তাহলে কি হুমায়নকে বহিষ্কৃতই করা হল? তবে, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সাধারণত দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি বা শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পরই নিশ্চিত হয়।
ওই সাংবাদিক সম্মেলনে মুর্শিদাবাদ সাংগঠনিক জেলার চেয়ারম্যান নিয়ামত হোসেন বলেন, পার্টির সিদ্ধান্ত মেনে নিতেই হবে। অন্যদিকে, হুমায়ূন বলেন, ববি হাকিমের কোনও কথার জবাব দেব না। এর আগেও পার্থ চট্টোপাধ্যায় আমাকে বিনা নোটিসে ৫ বছর সাসপেন্ড করেছিলেন। কালই রিজাইন দিয়ে দেব। ২২ তারিখে নিজের দলের ঘোষণা করব।
সাংবাদিক সম্মেলনে এদিন ফিরহাদ হাকিম বলেন, আমরা একসঙ্গে থাকায় বিশ্বাসী। উনি ইতিমধ্যেই বেলডাঙ্গা মানুষদের উস্কানি দিয়েছেন। কেন, বাবরি মসজিদ কেন? হমায়ূনের বাবা বা মায়ের নামে মসজিদ নয় কেন? এই বিভাজনের রাজনীতি কেন? তৃণমূল কংগ্রেস এক তীব্র নিন্দা করেছে। উনি ২০১৯ সালে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। প্রার্থীও হয়েছিলেন। এখন উনি বাংলার ধর্ম নিরপেক্ষতার ঐতিহ্য ধ্বংসের কাজে নেমে পড়েছেন। দল এ জিনিস বরদাস্ত করবে না। তাঁকে আগেও সতর্ক করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ৬ ডিসেম্বর বেলডাঙাতে বাবরি মসজিদের শিলান্যাস করবেন বলে ঘোষণা করেছিলেন হুমায়ুন। তবে ভরতপুরের বিধায়কের অভিযোগ, জমি পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রশাসন অসহযোগিতা করছে। এই আবহে হুমায়ুনের আঙুল বেলডাঙার এসডিপিও উত্তম গড়াইয়ের দিকে। এই আবহে মুর্শিদাবাদের জেলার পুলিশ ও প্রশাসনের বিরুদ্ধেও হুমকি দিয়েছেন হুমায়ুন। তিনি পুলিশ ও প্রশাসনকে 'আরএসএসের দালাল' বলে অভিযোগ করেন। হুমায়ুন বলেন, 'আমার চ্যালেঞ্জ ৬ তারিখে রেজিনগর থেকে বহরমপুর পর্যন্ত জাতীয় সড়ক আমার দখলে থাকবে। মুসলিমদের দখলে থাকবে।'