• ময়নায় বিজেপি নেতা খুনে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার হাতে গ্রেপ্তার তৃণমূল কর্মী
    প্রতিদিন | ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সৈকত মাইতি, তমলুক: পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নায় বিজেপি নেতা বিজয়কৃষ্ণ ভুঁইয়াকে খুনের ঘটনায় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ-র হাতে গ্রেপ্তার এক তৃণমূল কর্মী। ধৃতের নাম বুদ্ধদেব মণ্ডল।

    স্থানীয় সূত্রে খবর, বুদ্ধদেবের খোঁজে বুধবার তাঁর ছেলেকে নিয়ে নানা জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালায় এনআইএ। সেই গোপন সূত্র মারফত তদন্তকারীরা জানতে পারেন, পশ্চিম মেদিনীপুরের পিংলায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে রয়েছেন বুদ্ধদেব। সেই খবর পাওয়া মাত্রই সেখানে তল্লাশি চালিয়ে তৃণমূলকর্মীকে গ্রেপ্তার করে তদন্তকারী সংস্থা। এর পর বৃহস্পতিবার সকালে তাঁকে কলকাতার উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়।

    গত ২০২৩ সালের ১ মে সন্ধ্যায় বুথ সভাপতি বিজয়কে অপহরণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছিলেন স্ত্রী লক্ষ্মী ভুঁইয়া। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেই তদন্তে নেমে খোঁজাখুঁজি শুরু করে পুলিশ। পরে বাড়ির অদূরে পুকুরপাড় থেকে বিজয়ের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। এই ঘটনায় নাম জড়ায় একাধিক তৃণমূল নেতা-কর্মীর। অন্তত ৩৪ জনের বিরুদ্ধে ময়না থানায় অভিযোগ দায়ের হয়। গ্রেপ্তারও হন আট জন। পরে পাঁচ জন জামিনে মুক্ত হন। এর পর থেকেই পুলিশি তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ তুলে আদালতের দ্বারস্থ হয় বিজেপি। পরে কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে ঘটনার তদন্তভার যায় এনআইএ-র হাতে।

    তদন্তে নেমে ঘটনার পুনর্নির্মাণের পাশাপাশি প্রায় দেড় শতাধিক এনআইএ প্রতিনিধি মোট ১৪টি দলে ভাগ হয়ে অভিযুক্তদের বাড়িতে অভিযান চালান। অভিযুক্তদের সেই তালিকায় বুদ্ধদেবও ছিলেন। সেই সময় তাঁদের প্রায় সকলেই ফেরার ছিলেন। যার জেরে অভিযুক্তদের বাড়ি সিল করে নোটিস সাঁটিয়ে দিয়েছিলেন এনআইএ কর্তারা।

    বিজেপি নেতা খুনে এর আগে আরও কয়েক জন তৃণমূল নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে এনআইএ। কেন্দ্রীয় সংস্থার হাতে গ্রেপ্তার হন ময়না ব্লক তৃণমূলের প্রাক্তন সহ-সভাপতি অমিতাভ ওরফে বাবু ভঞ্জ এবং বাকচা অঞ্চল তৃণমূলের প্রাক্তন সহ-সভাপতি সুজিত কর। পরে বাকচার গোড়ামহল এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন নবকুমার মণ্ডল নামে আর এক তৃণমূলকর্মী।

    তৃণমূলের দাবি, তারাও ঘটনার সঠিক তদন্ত হোক চায়। দোষীদের শাস্তিও চায় তারা। কিন্তু বিজেপি কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে কাজে লাগিয়ে তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।  বিজেপির পাল্টা দাবি, উচ্চ আদালতের নির্দেশে এনআইএ তদন্ত চলছে। তদন্ত প্রক্রিয়ার সঙ্গে বিজেপির কোনও সম্পর্ক নেই। দোষীদের আড়াল করতে রাজ্যের শাসকদল মিথ্যা অভিযোগ করছে। তদন্ত যে সঠিক পথেই এগোচ্ছে, একের পর এক গ্রেপ্তারই তার প্রমাণ।
  • Link to this news (প্রতিদিন)