ফের ইন্ডিগোর পাঁচ শতাধিক উড়ান বাতিল, রিপোর্ট তলব, কলকাতা বিমানবন্দরেও বিপর্যস্ত পরিষেবা, ক্ষোভ যাত্রীদের
বর্তমান | ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫
নয়াদিল্লি: পর্যাপ্ত কর্মী নেই। যান্ত্রিক ত্রুটিও এড়ানো যাচ্ছে না। আর এই জোড়া সমস্যার জেরে বৃহস্পতিবারও ইন্ডিগোর বিমান পরিষেবায় বিভ্রাট অব্যাহত। এদিন পাঁচশোরও বেশি দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক উড়ান বাতিল করতে হয়েছে। বুধ ও বৃহস্পতিবার মিলিয়ে এই সংখ্যা প্রায় ১২০০। কলকাতা থেকে দিল্লি, মুম্বই, বেঙ্গালুরু, হায়দরাবাদ— সমস্ত বিমানবন্দরেই যাত্রীদের ভোগান্তির ছবি। শুধু তাই নয়, বহু বিমান নির্ধারিত সময়ের থেকে দেরিতে চলেছে। এই অবস্থায় বৃহস্পতিবার ইন্ডিগো কর্তৃপক্ষকে তাদের সদর দপ্তরে ডেকে পাঠায় অসামরিক বিমান পরিবহণ নিয়ামক সংস্থা ডিজিসিএ। ঠিক কী কারণে এই পরিস্থিতি, তা জানাতে বলা হয়েছে। জানা যাচ্ছে, আগামী দু’-তিনদিনও উড়ান বাতিল হবে। তবে, ১০ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ফের পরিষেবা স্বাভাবিক করার ব্যাপারে ডিজিসিএকে আশ্বাস দিয়েছে ইন্ডিগো।
এদিন বিমান বাতিলের পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে একাধিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। কলকাতা বিমানবন্দর সূত্রে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার অ্যারাইভিং বিমানের মধ্যে ১১টি বাতিল হয়েছে। আর ৬৪টি দেরিতে এসেছে। আর ডিপার্টিং উড়ান বাতিল হয়েছে ১১টি। দেরিতে উড়ান শুরু করে ৮২টি। বাগডোগরা বিমানবন্দরে এদিন দু’টি বিমান বাতিল হয়েছে। বাকি বিমানগুলির সবকয়টি অনেকটাই দেরিতে উড়েছে বা অবতরণ করেছে। দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর জানিয়েছে, সারাদিনে ৪৪টি ডিপার্টিং এবং ৪৭টি অ্যারাইভিং বিমান বাতিল করতে হয়েছে। বেঙ্গালুরুর কেম্পেগৌড়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মোট ৭০টি উড়ান বাতিল করতে হয়েছে। এরমধ্যে ৪০টি আউটবাউন্ড এবং ৩০টি ইনবাউন্ড বিমান। মুম্বই বিমানবন্দরে বাতিল হয়েছে ৪৫টি ডিপার্টিং এবং ৪১টি ইনকামিং বিমান। চেন্নাইতে বাতিল উড়ানের সংখ্যা ২৬।
ইন্ডিগো সূত্রে জানানো হয়েছে, মূলত মেট্রো শহরগুলির যোগাযোগকারী বিমানই বাতিল করা হয়েছে। বহু বিমান দেরিতে চলছে। শুধু কর্মী সংখ্যার কারণেই নয়, আবহাওয়া এবং প্রযুক্তিগত কারণেও বিমান বাতিল করতে হয়েছে। কর্মী সংখ্যা কম কেন? এক্ষেত্রে পাইলট ও বিমান কর্মীদের ডিউটির সময়ে পরিবর্তন এনেছে ডিজিসিএ। যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য নয়া নিয়মে পাইলট ও বিমানের কর্মীদের পর্যাপ্ত বিশ্রামের দিকে নজর রাখা হয়েছে। কাজের সময় কমে যাওয়ায় পর্যাপ্ত কর্মীর সংখ্যায় টান পড়েছে। পরিষেবায় এই বিভ্রাটের জেরে যাত্রীদের ক্ষোভ চরমে উঠেছে। হায়দরাবাদ বিমানবন্দর থেকে এক যাত্রী সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ‘বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে এখানে বসে রয়েছি। সকাল ৯টা হতে চলল। পুনেগামী বিমান নিয়ে এখনও কোনও ইতিবাচক খবর শোনাতে পারল না ইন্ডিগো। বিরাট অসুবিধার মধ্যে পড়েছি।’ আর একজন লিখেছেন, ‘সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খল অবস্থা। ১২ ঘণ্টার বেশি বিলম্ব। থাকার জায়গা দেবে না বলে কেবল বার্তা আসছে— আর মাত্র দু’ঘণ্টা! একই সাফাই— শীঘ্রই কর্মী এসে পড়বে।’