• সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের বিরোধিতা করে অর্ডিন্যান্সের দাবি সাংসদদের
    বর্তমান | ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সন্দীপ স্বর্ণকার, নয়াদিল্লি: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের বিরোধিতায় সাংসদরা। রাজনৈতিক আক্রমণে বিজেপির বঙ্গ নেতারা যখন গলার শিরা ফুলিয়ে তৃণমূলের বদনাম করে চলেছে, সেই আবহে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের সুরেই বৃহস্পতিবার সংসদে সুর মেলালেন বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খান। একইভাবে সমাজবাদী পার্টির সাংসদ ধর্মেন্দ্র যাদব, তেলেঙ্গানার কংগ্রেস সাংসদ চামালা কিরণ কুমার, মহারাষ্ট্রের শিবসেনার সাংসদ ধৈর্যশীল সাম্বাজিরাও মানও। টেট পাশ না হলে শিক্ষকের চাকরি থাকবে না, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের বিরোধিতায় সরব হলেন তাঁরা। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেও দাবি করা হল, অর্ডিন্যান্স এনে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ পাল্টান। 

    ইশ্যু: প্রাইমারি এবং আপার প্রাইমারির শিক্ষকদের চাকরির ভবিষ্যৎ। টেট (টিচার এলিজিবিলিটি টেস্ট) সংক্রান্ত আঞ্জুমান ঈশাত-ই-তালিম ট্রাস্টের এক মামলায় গত ১ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত এবং বিচারপতি মনমোহনের বেঞ্চ ১১০ পাতার রায়ে জানিয়েছে, প্রাথমিকে শিক্ষকতা করতে গেলে টেট আবশ্যিক। তবে যাঁদের আর চাকরিতে অবসর নেওয়ার মাত্র পাঁচ বছর বাকি, তাঁদের ছাড়। বাকিদের আগামী দু বছরের মধ্যে টেট পরীক্ষা দিয়ে ‘শর্ত’ পূরণ করতেই হবে। তবে অবসরের পাঁচ বছর বাকি থাকা শিক্ষকরা যদি পদোন্নতি চান, তাহলে তাঁদেরও টেট দিতে হবে। 

    শীর্ষ আদালতের এই রায়ে ২০১০ সালের আগে নিযুক্ত প্রাথমিক শিক্ষকরা পড়েছেন বিপদে। তাই শীর্ষ আদালতের নির্দেশের বিরোধিতা করে গত ২৮ নভেম্বর মামলা দায়ের করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। সরকার তথা শিক্ষকদের প্রশ্ন, ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন (এনসিটিই) ২০১০ সালের ২৩ আগস্টের পর টেট আবশ্যিক করেছে। ফলে তার আগে চাকরি পাওয়াদের ক্ষেত্রে কেন তা বলবৎ হবে? বিষয়টি নিয়ে ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রাইমারি ট্রেনড টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি পিন্টু পারুইয়ের লেখা এক চিঠি সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন সৌমিত্র খান। অর্ডিন্যান্স এনে বিষয়টিতে হস্তক্ষেপের দাবি করেন। 

    বৃহস্পতিবার সংসদেও সরব হন তিনি। লোকসভার জিরো আওয়ারে তিনি বলেন, ২০১১ সালের আগে পশ্চিমবঙ্গ সরকার যে পরীক্ষা নিয়ে চাকরি দিয়েছে, সেটিই গ্রাহ্য হওয়া উচিত। তা নাহলে বাংলার প্রায় ৭৫ হাজার প্রাইমারি এবং আপার প্রাইমারির শিক্ষকদের চাকরি হারিয়ে পথে বসতে হবে। শিক্ষামন্ত্রী বিষয়টি বিবেচনা করুন। স্রেফ বাংলায় নয়। গোটা দেশেও প্রায় ২৫ লক্ষ শিক্ষক সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশে বলি হবেন বলে সরব হন সমাজবাদী পার্টির ধর্মেন্দ্র যাদব। জিরো আওয়ারে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি অর্ডিন্যান্স আনার দাবি জানান। একইসঙ্গে তাঁর হুঁশিয়ারি, মোদি সরকার নিশ্চুপ থাকার জন্য যদি এত লোকের চাকরি যায়, তাহলে সমাজবাদী পার্টি শেষ দেখে ছাড়বে। শিবসেনা এবং কংগ্রেসের সাংসদরাও সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। যদিও সরকার এ ব্যাপারে এখনও নিরুত্তর। 
  • Link to this news (বর্তমান)