দিব্যেন্দু বিশ্বাস, নয়াদিল্লি: সংসদের ভিতরে হোক কিংবা বাইরে। অথবা সংসদের লিখিত প্রশ্নোত্তরে। বৃহস্পতিবার দূষণ ইশ্যুতে সরগরম হল সংসদের অধিবেশন। রাজ্যসভার জিরো আওয়ারে যখন দিল্লি, এনসিআরের দূষণ পরিস্থিতি নিয়ে কংগ্রেস চরম কটাক্ষ করল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে। তখন সংসদ ভবন চত্বরে বায়ু দূষণ নিয়ে বিরোধী দলের এমপিরা প্রতিবাদ বিক্ষোভে শামিল হলেন।
এদিন রাজ্যসভার জিরো আওয়ারে কংগ্রেস সাংসদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজে একজন সিনিয়র সিটিজন। দিল্লিতে দূষণের যা পরিস্থিতি, তাতে প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্য নিয়েই আমার চিন্তা হচ্ছে। কংগ্রেস সাংসদের এহেন মন্তব্যে রাজ্যসভার বিরোধী এমপিদের মধ্যে হাসির রোল ওঠে। রঞ্জিৎ রঞ্জন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনের সামনে না হয় হাজার হাজার এয়ার পিউরিফায়ার বসিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু আমআদমি বাঁচবেন কীভাবে? প্রত্যেকে কি কাজকর্ম ছেড়ে দিল্লি থেকে পালিয়ে যাবেন? সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্পে যেসব শ্রমিক কর্মরত আছেন, তাঁদের এক হাজার একিউআইয়েও কাজ করতে হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট বলছে, ২০২৪ সালে সারা দেশে প্রায় ১৭ লক্ষ মানুষ দূষণের কারণে মারা গিয়েছেন। দেশের এমন কোনও জায়গা নেই, যেখানে স্বস্তির নিঃশ্বাস নেওয়া যায়। বাচ্চাদের জন্য চিন্তা আরও বেশি। শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রচারে কাজ হবে না। আমাদের প্রত্যেককে দূষণ মোকাবিলার দায়িত্ব নিতে হবে। এদিন সংসদ ভবন চত্বরে বিরোধী এমপিদের ধর্নায় শামিল ছিলেন তৃণমূল সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী। দূষণ বিরোধিতায় যে ব্যানার নিয়ে ধর্না হয়েছে, তাতে কটাক্ষপূর্ণভাবে লেখা ছিল, ‘মৌসম কা মজা লিজিয়ে’! বিরোধী সাংসদদের একাংশ মাস্ক পরে ধর্নায় অংশ নেন। এ ব্যাপারে সংসদ ভবন চত্বরে কংগ্রেস সাংসদ সোনিয়া গান্ধী বলেন, দূষণের মোকাবিলা করা সরকারের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। ছোট বাচ্চারা তো বটেই। আমার মতো যারা বয়স্ক মানুষ আছেন, তারাও দূষণের কারণে চরম সমস্যার সম্মুখীন হন। প্রতিবাদ বিক্ষোভে হাজির ছিলেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীও।
অন্যদিকে, অন্যদিকে লোকসভায় তৃণমূল সাংসদ মালা রায় এবং ইউসুফ পাঠানের লিখিত প্রশ্নের জবাবে বৃহস্পতিবার লোকসভায় কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণমন্ত্রী নীতিন গাদকারি যে খতিয়ান পেশ করেছেন, তাতে দেখা যাচ্ছে ২০১৮ সালে পিইউসি নেই এমন সরকারি গাড়ির সংখ্যা ছিল একটি। ২০২৫ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১৯টিতে। এমন গাড়ি থেকে সবমিলিয়ে জরিমানা আদায়ের পরিমাণ প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা। আর বিগত পাঁচ বছরে সার্বিকভাবে পিইউসি না থাকা গাড়ির সংখ্যা সারা দেশে ৫৭ লক্ষেরও বেশি।