আরও বিএলও নিয়োগ করছেন না কেন? চাপ কমাতে কমিশনকে সুপ্রিম কোর্টের কড়া নির্দেশ
বর্তমান | ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশনে (এসআইআর) বিএলওদের উপর অতিরিক্ত কাজের চাপ দেওয়া যাবে না। যদি কেউ অব্যাহতি চায়, তা দিতে হবে। প্রয়োজনে অন্য বিএলও নিয়োগ করুন। আর বিএলওর সংখ্যাই বা বাড়াচ্ছেন না কেন? ১০ হাজার নিয়োগ করেছেন, আরও ৩০ হাজার করুন! বৃহস্পতিবার এসআইআর সংক্রান্ত এক মামলার শুনানিতে নির্বাচন কমিশনকে এমনই কড়া নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। বিষয়টি নিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল তামিল সুপারস্টার বিজয়ের দল টিভিকে। তাদের মূল অভিযোগ, বিএলওদের অতিরিক্ত চাপ দিচ্ছে কমিশন। তার জেরে অনেকেই আত্মহত্যা করতে বাধ্য হচ্ছেন। দেশের প্রধান বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চে এদিন সেই মামলার শুনানি হয়।
চলতি এসআইআর পর্বে তামিলনাড়ু, বাংলা সহ অন্তত ছ’টি রাজ্য থেকে বিএলওদের মৃত্যুর খবর এসেছে। উত্তরপ্রদেশে ৫০ জন বিএলওর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করেছে কমিশন। স্বাস্থ্যজনিত বা অন্যান্য সমস্যার কথা বলেও তাদের রেহাই মেলেনি। এদিনের শুনানিতে টিভিকে’র আইনজীবী গোপালশঙ্কর নারায়ণন সওয়াল করেন, সারা দেশেই এসআইআরের কাজে যুক্ত ব্যক্তিরা চরম মানসিক চাপে ভুগছেন। উদাহরণ হিসেবে বলা হয়, এক বিএলওর সামনেই বিয়ে। তবুও তাঁকে এসআইআরের দায়িত্ব থেকে ছুটি দেওয়া হয়নি। তিনি মানসিক চাপে আত্মহত্যা করেছেন। জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ৩২ নম্বর ধারায় বলা আছে, কোনও বিএলও বা নির্বাচনী আধিকারিকের কর্তব্যে গাফিলতি ধরা পড়লে দু’বছর পর্যন্ত জেল হতে পারে। বিজয়ের দলের অভিযোগ, এই আতঙ্কেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বিএলওরা। অনেকের মৃত্যু হচ্ছে। তাঁদের অধিকাংশেরই বয়স ৩৫-৪০ বছর।
এরপরেই শুনানির পর্যবেক্ষেণের কমিশনের তীব্র সমালোচনা করে সুপ্রিম কোর্ট। বেঞ্চের মন্তব্য, এসআইআরের কাজে যেখানে ১০ হাজার জনকে নিয়েছেন, সেখানে আর ৩০ হাজার নিয়োগ করতে অসুবিধে কোথায়? সেক্ষেত্রে তো বিএলওদের উপর চাপ কমবে। তাই শীর্ষ আদালত নির্দেশ, বিএলওদের উপর অতিরিক্ত কাজের চাপ যেন না পড়ে। তার জন্য প্রতিটি রাজ্য সরকার নির্বাচন কমিশনকে যথেষ্ট কর্মী সরবরাহ করবে। শুনানিতে বিএলওদের আত্মহত্যা বা মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ প্রসঙ্গও ওঠে। তবে দেশের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, বিষয়টির মীমাংসা এখনও হয়নি। বিএলওরা মূলত রাজ্য সরকারের কর্মী। তবে কেউ যদি ক্ষতিগ্রস্ত হন, তাহলে নিজেরা আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন।