• ফরাক্কায় ড্রেজিং হয়নি আজও! ভুগছে মানুষ, কেন্দ্রকে তোপ মুখ্যমন্ত্রীর
    বর্তমান | ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: মুর্শিদাবাদের নদী ভাঙন নিয়ে জর্জরিত ফরাক্কা ও সামশেরগঞ্জের মানুষ। সে ব্যাপারে ওয়াকিবহাল রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর। বৃহস্পতিবার বহরমপুর স্টেডিয়ামের রাজনৈতিক সভা থেকে সেই ভাঙন ইশ্যুতে কেন্দ্রকে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, মোদি সরকারের বঞ্চনার জেরে মুর্শিদাবাদ ও মালদহে ভয়াবহ ভাঙন চলছে। ভাঙন এখানে ভয়াবহ একটা সমস্যা। প্রকৃতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। তবে গঙ্গাভাঙন রোধ ও বন্যার জল নিয়ন্ত্রণ-কেন্দ্রের অধীনে ছিল। ফরাক্কায় ড্রেজিংয়ের কথা হয়েছিল। ৭০০ কোটি দেবে বলেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু, তা দেয়নি। ফরাক্কায় আজও ড্রেজিং হয়নি। আমরাও করতে পারি না, ওরাও করে না। তাই মানুষের সমস্যা হয়।

    এদিন উন্নয়নের নিরিখে রাজ্যের প্রকল্পের খতিয়ান তুলে ধরে কেন্দ্রের বঞ্চনা নিয়ে সরব মমতা। ফরাক্কার ড্রেজিং নিয়ে মোদি সরকারকে তাঁর কটাক্ষ, ‘ভাঙন রোধে রাজ্যের সহায়তা সত্ত্বেও কেন্দ্রে তাতে আমল দেয় না। মুর্শিদাবাদ ও মালদহ – দুই জেলাতেই আমরা নদী ভাঙন রোধের জন্য ১৫০০ কোটি টাকার পরিকল্পনা কেন্দ্রকে পাঠিয়েছি। কিন্তু, এখনও কোনও উত্তর পাইনি।’ এরপর রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনার ছবিটাও তিনি তুলে ধরেন।   মমতা বলেন, ১০০ দিনের টাকা বন্ধ, জলের টাকা বন্ধ, বাংলার বাড়ির টাকা বন্ধ। তবু আমরা নিজেদের টাকায় ১৮৯টি প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করেছি। ১৩৬ কোটি টাকা খরচ করে নদীভাঙন রোধে ১৭টি প্রকল্প চালু হয়েছে। নদীভাঙন রোধের জন্য ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। এর আগে মুর্শিদাবাদে এসে মুখ্যমন্ত্রী শামসেরগঞ্জ এলাকার ভাঙন কবলিত এলাকা ঘুরে দেখেছিলেন। গৃহহীন ও জমিহারাদের নিজের হাতে পাট্টা তুলে দিয়েছিলেন। সেই জমিতে বাংলার বাড়ি প্রকল্পে জেলা প্রশাসনকে বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই কাজ এগোলেও প্রতিবছর নদীর ধারে থাকা মানুষগুলির বিপত্তি বাড়ে। বর্ষার সময় থেকে ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়। এবারও বহু মানুষের ঘরবাড়ি নদী ভাঙনের জেরে তলিয়ে যায়। রাজ্য সরকার প্রতিবার বরাদ্দ বাড়িয়ে নদীর পাড়ে বালির বস্তা ও বাঁশের কাঠামো দিয়ে কোনওরকমে ভাঙন রোধের চেষ্টা করলেও কোনও লাভ হয় না। শুধু নির্বাচন এলেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের দেখা মেলে বলে অভিযোগ করেন মমতা। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন এলেই বারবার দিল্লি থেকে ছুটে আসেন নেতা-মন্ত্রীরা। কিন্তু, সেই সমস্ত মানুষ যখন বন্যার কবলে পড়েন বা নদী ভাঙনে জমি, বাড়ি হারিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে যান, তখন তাঁরা কেউ ফিরেও তাকান না।’

    এদিন বিহারের নির্বাচন প্রসঙ্গ টেনে মমতা বলেন, বিহারের গোদি সরকার বেছে কিছু পরিবারকে ভোটের আগে ১০ হাজার টাকা দিল। আর যেই ভোট চলে গেল, মানুষকে দিল বুলডোজার। হাজার মানুষকে উৎখাত করল। আপনাদের চিন্তা নেই, আজীবন লক্ষ্মীর ভাণ্ডার পাবেন। কারও কথার ফাঁদে পা দেবেন না। 

    মহিলাদের কর্মসংস্থান ও স্বনির্ভর হওয়া নিয়েও মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ১২ লক্ষ সেল্ফ হেল্ফ গ্রুপ করেছি। গ্রুপের মেয়েরা আজ স্বনির্ভর। তাঁরা আত্মসম্মান নিয়ে কাজ করবেন। জেলায় জেলায় শপিংমল সরকার বানাচ্ছে। সেখানে প্রথম দু’টো তলা এদের জন্য থাকবে। মেয়েরা হাতের তৈরি জিনিস আত্মসম্মানের সঙ্গে বিক্রি করবে। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)