• চিকেনস নেকের সুরক্ষায় আধুনিক কাঁটাতারের বেড়া, পাকিস্তানের ‘হানিট্র্যাপ’ নিয়ে সতর্ক জওয়ানরা
    বর্তমান | ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, শিলিগুড়ি: সেনার পর বিএসএফ। তারা ‘চিকেনস নেক’ শিলিগুড়ির সুরক্ষায় অত্যাধুনিক কাঁটাতারের বেড়া, বুলেট ও পিটিজেড ক্যামেরা এবং ফিঙ্গারপ্রিন্ট আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম বসিয়েছে। এমনকী, এখানে মোতায়েন করা হয়েছে অপারেশন ‘সিন্দুর’-এ শামিল হওয়া দু’টি ব্যাটালিয়ন। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ির কাছে কদমতলায় সাংবাদিক সম্মেলনে একথা জানান বিএসএফের উত্তরবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের আইজি মুকেশ ত্যাগি। একই সঙ্গে তিনি পাকিস্তান থেকে অনলাইনে ‘হানিট্র্যাপ’ দেওয়ার আশঙ্কা করেন। এজন্য বিএসএফ জওয়ানদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। 

    শিলিগুড়ি করিডর বা চিকেনস নেক সর্বদাই টার্গেট পাকিস্তান ও চীনের। এজন্য তারা শিলিগুড়ি থেকে মাত্র ১৬ কিমি দূরে বাংলাদেশের লালমণিরহাটে তৎপরতা  বাড়াচ্ছে। ইতিমধ্যে চীন সেখানে বিমানঘাঁটিতে বিনিয়োগ করেছে বলে খবর। সেই ঘাঁটি থেকে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র অভিযান পরিচালনা করাই টার্গেট। এরবাইরে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর পদ্মাপাড়ে ভারত বিরোধী স্লোগান উঠেছে। বেশ কয়েকবার চিকেনস নেক সহ উত্তর-পূর্ব ভারতে হামলা চালানোর হুমকি এসেছে ওপার থেকে। 

    এমন প্রেক্ষাপটে ‘চিকেনস নেক’ সুরক্ষিত রাখতে তৎপরতা বাড়িয়েছে ভারতীয় সেনা। ইতিমধ্যে তারা উত্তরবঙ্গে সুদর্শন চক্র রেখেছে। এছাড়া উত্তর দিনাজপুরের চোপড়া, অসমের ধুবড়ি ও বিহারের কিষানগঞ্জে সামরিক ঘাঁটি তৈরি কববে বলে খবর। সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলি শিলিগুড়ি করিডরের পাশেই। বিএসএফও চিকেনস নেকের সুরক্ষায় নড়েচড়ে বসেছে। ‘চিকেনস নেকের’ পাশেই শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুর, কিষানগঞ্জ ও কোচবিহার জেলার বাংলাদেশ সীমান্ত অবস্থিত। বিএসএফের উত্তরবঙ্গ ফ্রন্টিয়ারের আইজি বলেন, ইতিমধ্যে চিকেনস নেকের আশপাশের সীমান্তের প্রায় ৭৫ শতাংশ এলাকায় নতুন ধরনের কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হয়েছে। যা নষ্ট করা অসম্ভব। এর উচ্চতাও অনেক। সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলিতে পুরুষ ও মহিলা জওয়ানরা ঘনঘন টহল দিচ্ছেন। কাঁটাতারের বেড়ার প্রতিটি গেটে মোতায়েন আছেন পুরুষ ও মহিলা জওয়ান। বুলেট ও পিটিজেড ক্যামেরার সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছে। 

    এছাড়া, প্রতিটি বর্ডার আউটপোস্ট ও ক্যাম্পে ফিঙ্গারপ্রিন্ট আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম বসানো হয়েছে। ধরা পড়ার সঙ্গে সঙ্গেই সংশ্লিষ্ট সিস্টেমে হাতের ছাপ নেওয়া হচ্ছে বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের। তা পর্যালোচনা করা হচ্ছে। অনুপ্রবেশকারীরা গুরুতর অপরাধের সঙ্গে জড়িত কি না তা জানান চেষ্টা চলছে। সন্দেহজনক কিছু মিললেও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সীমান্তের জলপথে বোটে টহলদারি চলছে। এই ফ্রন্টিয়ারের অধীনে ব্যাটালিয়নের সংখ্যা ১৮টি। এরমধ্যে দু’টি ব্যাটালিয়ন অপারেশন সিন্দুরের সঙ্গে জড়িত ছিল। কাজেই চিকেনস নেকের নিরাপত্তায় সর্বদা সজাগ রয়েছে বিএসএফ। 

    এদিকে, চিকেনস নেক সহ উত্তরবঙ্গ সীমান্তের তথ্য কব্জা করতে বহুদিন ধরে চেষ্টা চালাচ্ছে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই। বিভিন্ন সময় শিলিগুড়ি থেকে আইএসআই এজেন্ট এবং বাংলাদেশি চর পাকড়াও হয়েছে। এখন ইসলামাবাদের অস্ত্র ‘হানিট্র্যাপ’! গোয়েন্দা সূত্রে খবর, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জওয়ানদের ফোন করছে সুন্দরি মহিলারা। কখনও ভিডিও কল করা হচ্ছে। আবার কখনও ফোন করা হচ্ছে। বিএসএফের উত্তরবঙ্গের আইজি বলেন, পাকিস্তান থেকে জওয়ানদের হানিট্র্যাপ দেওয়া  হয়। এজন্য অপরিচত ফোন নম্বর থেকে আসা কল কিংবা ‘লিংকে’ সাড়া না দেওয়ার পরামর্শ জওয়ানদের 

    দেওয়া হচ্ছে।
  • Link to this news (বর্তমান)