• রেভিনিউয়ের ঘাটতি পূরণে টার্গেট ডাকবিভাগের, ৭ দিনে এক লক্ষ অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে, বিপাকে এজেন্ট থেকে কর্মীরা
    বর্তমান | ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, আসানসোল: সব বিভাগেই রেভিনিউ আদায়ের টার্গেট বেঁধে দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। বিশাল টার্গেট পূরণ করতে শেষ পর্যন্ত নিচুতলার কর্মীদের উপর চাপ এসে পড়ছে। তাতে হয়রানির শিকার হচ্ছেন কর্মীরা। এবার তা থেকে নিস্তার পেল না ডাক বিভাগ। জানা গিয়েছে, ডাকবিভাগের পশ্চিমবঙ্গ সার্কেলে রেভিনিউ আদায়ের যে লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছিল তারা তার ধারেকাছেও নেই। চলতি অর্থবর্ষের প্রথমার্ধে লক্ষ্যমাত্রা থেকে ৪৪.২৮ শতাংশ কম রেভিনিউ আদায় হয়েছে। লক্ষ্যপূরণ করতে এক অবাস্তব ডাকবিভাগের পশ্চিমবঙ্গ সার্কেল সাতদিনে নতুন এক লক্ষ সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনার অ্যাকাউন্ট খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

    সেইমতো নতুন অ্যাকাউন্ট খোলানোর টার্গেট রিজিওন থেকে ব্রাঞ্চ অফিস পর্যন্ত ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। জানা গিয়েছে, কলকাতা রিজিওনে ৪০হাজার, দক্ষিণবঙ্গ রিজিওনে ৪০হাজার, উত্তরবঙ্গ রিজিওনে ২০হাজার, আন্দামান নিকোবর আইল্যান্ডে পাঁচ হাজার ও সিকিমে পাঁচ হাজার অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। এর সময়সীমা ৮-১৩ ডিসেম্বর। ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের দেওয়া টার্গেট পূরণ করতে আসানসোল পোস্টাল ডিভিশনও হেড পোস্ট অফিস থেকে ব্রাঞ্চ পোস্ট অফিস পর্যন্ত অ্যাকাউন্ট খোলার টার্গেট দিয়েছে। আসানসোল হেড পোস্ট অফিসকে ৫০০টি এসবি, টিডি, এমআইএস, আরডি অ্যাকাউন্ট খোলার লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, এই সময়ের মধ্যে তাদের ১০০টি করে সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনা ও পিপিএফ অ্যাকাউন্ট খোলারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এমনকি, ব্রাঞ্চ পোস্ট অফিসগুলিকে বলা হয়েছে, এই সময়ের মধ্যে ৩০টি করে সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনা ও ৫০টি করে অন্যান্য অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে।

    এই পাহাড় প্রমাণ টার্গেট দেখে ডাকবিভাগের কর্মীদের মাথায় হাত পড়েছে। জানা গিয়েছে, টার্গেট পূরণ করাতে বিভিন্ন ডাকঘরের পোস্ট মাস্টাররা পোস্টাল এজেন্টদের নতুন অ্যাকাউন্ট খুলতে চাপ দেওয়া শুরু করেছেন। সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনার অ্যাকাউন্ট থেকে পোস্টাল এজেন্টরা কোনও কমিশন পান না। তাই এই অ্যাকাউন্ট খোলাতে তাঁদের কোনও আগ্রহ নেই। কিন্তু পোস্ট অফিসগুলির তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাঁদের এই লক্ষ্যপূরণ করতেই হবে। এবিষয়ে গ্রাহকদের মত, ডাকবিভাগ আগে গ্রামীণ পোস্ট অফিসগুলির পরিকাঠামো উন্নত করুক। তারপর টার্গেট বাড়াক। অনেকের মতে, পোস্ট অফিসে সুদের হার ভালো। কিন্তু পরিষেবা একেবারে তলানিতে। কখনও পাসবুক আপডেট হয় না। একটি কাজ করতে ব্যাঙ্কে যেখানে একবার যেতে হয়, সেখানে পোস্ট অফিসে তার জন্যে একাধিকবার আসতে হচ্ছে।

    ওয়েস্ট বেঙ্গল স্মল সেভিংস এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের জেলার নেতা অমলকুমার দেব, সুশান্ত সাধুরা বলেন, এসআইআরের কাজ করা বিএলওদের থেকেও আমাদের অবস্থা খারাপ। এই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না করতে পারলে, কাজ করতে না দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হচ্ছে।

    আসানসোল পোস্টাল ডিভিশনের সিনিয়র পোস্টাল সুপারিনটেন্ডেন্ট দেবরাজ শেট্টি বলেন, আমাদের একটি সামাজিক দায়িত্বও আছে। কন্যাদের জন্য এর থেকে ভালো অ্যাকাউন্ট নেই। আমরা লক্ষ্যপূরণ করার জন্য বিভিন্ন স্কুলে প্রচার করছি। এজেন্টদের অনুরোধ করা হয়েছে, কোনও চাপ দেওয়া হয়নি।
  • Link to this news (বর্তমান)