সংবাদদাতা, মানকর: পূর্ব বর্ধমানের মানকরের জঙ্গলে ঘুরে বেড়াচ্ছে বাঘ। ভেসে আসছে গর্জনের আওয়াজ। আক্রমণ করছে সাধারণ মানুষকে। অভিযোগ, এরকমই ফেক ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। সেই ভিডিও শেয়ার করে জঙ্গলে যেতে বারণও করা হচ্ছে। যা দেখে আতঙ্কিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো ভিডিও ছড়িয়ে এলাকায় আতঙ্কের বাতাবরণ তৈরির চেষ্টা করা হয়েছে। এই খবর জানাজানি হতেই সক্রিয় হয়েছেন বনদপ্তরের আধিকারিকরা। ফেক ভিডিও ছড়িয়ে গুজব ছড়ালে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে বনদপ্তর। প্রাথমিকভাবে তদন্তও শুরু করেছেন আধিকারিকরা। জঙ্গলে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করে নির্বিঘ্নে চোরা কারবার চালাতেই এই ভুয়ো ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে কি না, তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
বুধবার সন্ধ্যা থেকে বনের মধ্যে বাঘ হেঁটে যাচ্ছে, এমন একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিওর সঙ্গে লেখা ‘মানকর, পূর্ব বর্ধমান’। অনেকেই সেই ভিডিও নিজের প্রোফাইলে পোস্ট করেন। ওই ভিডিওর সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে আরও দু’টি ভিডিও। সেখানে দেখা যায়, ওই বাঘের আক্রমণে গুরুতর জখম হয়েছেন বহু মানুষ। রক্তাক্ত অবস্থায় সেই ছবি দেখে শিউরে উঠেছেন অনেকেই। বাঘ কীভাবে মানকর এলাকায় এল, সোশ্যাল মিডিয়ায় তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। আতঙ্কে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ বনদপ্তরের আধিকারিকদের সঙ্গেও যোগাযোগ করেন। তাঁরা আশ্বস্ত করেন ভিডিওটি সত্য নয়। কিন্তু তারপরেও যেন আতঙ্ক কাটেনি। বুদবুদের বাসিন্দা অর্ণব দাস বলেন, গত বছর ডিসেম্বর মাসে দেবশালা এলাকায় নেকড়ের হানায় দুই শিশু, ছ’জন মহিলা সহ ১৮জন জখম হয়েছিলেন। তাই এখন এই ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ায় এলাকার বাসিন্দারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। যারা এই ফেক ভিডিও ছড়িয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। বনদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে বাঘ সেগুনের বাগানের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। ওই বাগান বা পারিপার্শিক দৃশ্য এখানের নয়। ফেক ভিডিওতে এডিট করে জায়গার নাম বসানো হয়েছে। তবে, সোশ্যাল মিডিয়ায় পুরনো একটি পোস্টে দেখা যায়, ভিডিওটি ২০২১ সালের। উত্তরপ্রদেশের লালকুন এলাকার। পুরনো সেই ভিডিও এভাবে মানকর এলাকায় ছড়ানো হল কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। স্থানীয়দের একাংশ বলেন, ভিডিওটির মাধ্যমে মানুষের মনে ভয় ধরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। এই ভিডিও দেখলে মানুষ বনে যাবে না। তাতে চোরাই কাঠ, গাছ পাচারকারীদের সুবিধা হবে। দুর্গাপুরের রেঞ্জার সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ভিডিওটি ফেক। ওই ভিডিওর লিঙ্ক যেখান থেকে ছড়িয়েছে, তা ট্রাক করা হয়েছে। সাইবার ক্রাইমে বিষয়টি নিয়ে আমরা অভিযোগ দায়ের করব। ওই ভিডিও দেখে অনেকেই ফোন করেছেন। তবে, আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছি। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ছবি।