নির্দিষ্ট সময়ে পরিষেবা দিতে হবে চিকিৎসকদের, নির্দেশ বিধায়কের
বর্তমান | ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, রামপুরহাট: বৃহস্পতিবার বিকেলে মুরারই গ্রামীণ হাসপাতাল পরির্দশন করলেন বিধায়ক মোশারফ হোসেন। বিএমওএইচের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি হাসপাতাল তিনি ঘুরে দেখেন। বেশকিছু অব্যবস্থা তাঁর নজরে এসেছে। আগামী দিনে পঞ্চায়েতগুলিকে নিয়ে তা সমাধানের আশ্বাস দেন। রাজ্যের শেষপ্রান্তে মুরারই বিধানসভা। এলাকার অধিকাংশ মানুষ পাথর শিল্পাঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত। মুরারই সহ ঝাড়খণ্ডের বহু মানুষ চিকিৎসা পরিষেবা নিতে ৩০ বেডের মুরারই রুরাল হাসপাতালে আসে। কিন্তু, পরিষেবা ঠিক মতো মেলে না বলে অভিযোগ। সরকারি নির্দেশিকাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে ডিউটি আওয়ার্সে বাইরে চুটিয়ে প্র্যাকটিস করছে চিকিৎকদের একাংশ। এনিয়ে দিন পাঁচেক আগেই বিএমওএইচকে গণসাক্ষরিত স্মারকলিপি জমা দেন বাসিন্দারা। এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে রোগী ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার এবং হমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। গত ৩০ নভেম্বর সেই খবর ‘বর্তমান’-এ প্রকাশিত হয়। এরপর এদিন হাসপাতাল পরিদর্শন করেন বিধায়ক মোশারফ হোসেন। তিনি বিএমওএইচ অভিজিৎ মণ্ডলকে বলেন, চিকিৎসকরা যাতে নির্দিষ্ট সময় এসে রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা দেন, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
এদিন বিধায়ক হাসপাতাল ঘুরে দেখে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা নিয়ে প্রশংসা করেন। তবে মহিলা ওয়ার্ডে পুরুষ আত্মীয়দের অবাধ যাতায়াত নিয়ে কিছুটা হলেও বিধায়ক ক্ষুব্ধ। যদিও কর্তৃপক্ষের দাবি, হাসপাতালের কর্মী সংখ্যা কম। বিধায়ক এনিয়ে এলাকার পঞ্চায়েতগুলির সঙ্গে কথা বলে আপাতত মহিলা কর্মী দেওয়ার আশ্বাস দেন। ওই কর্মীদের পারিশ্রমিক পঞ্চায়েত তার নিজস্ব ফান্ড থেকে দেবে। চোখের অপারেশন থিয়েটার থাকা সত্ত্বেও চিকিৎসকের অভাবে তা বন্ধ দেখে বিধায়ক সরাসরি ডিএইচএসকে ফোন করেন। বিধায়ক বলেন, চোখের চিকিৎসক চেয়ে সিএমওএইচের মাধ্যমে আবেদন জানানোর জন্য ডিএইচএস বলেছেন। সেই সঙ্গে এই হাসপাতালে শিশু চিকিৎসকও নেই। তবে নিয়োগ শুরু হচ্ছে। আশা করি, শিশু চিকিৎসক মিলবে।
তবে এত অব্যবস্থার মধ্যেও জন্ম নিয়ন্ত্রণ বা দীর্ঘমেয়াদি গর্ভবস্থা প্রতিরোধে ইমপ্লান্টে রাজ্যের মধ্যে প্রথম হয়েছে এই হাসপাতাল। এখনও পর্যন্ত ৫৭ জন অল্প বয়সি মহিলার ইমপ্লান্ট করেছে হাসপাতাল। সেই জন্য হাসপাতালের প্রসূতি চিকিৎসক চন্দন দাস ও বিএমওএইচকে সংবর্ধিত করার পাশাপাশি মিষ্টিমুখ করান।
সম্প্রতি এই হাসপাতালকে ১০০ বেডের স্টেট জেনারেল হাসপাতালস্তরে উন্নীতকরণের জন্য আর্থিক অনুমোদন দিয়েছে সরকার। ইতিমধ্যে নতুন বিল্ডিং গড়ে তোলার প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছে। এদিন সেই এলাকাও ঘুরে দেখেন বিধায়ক। তিনি বলেন, স্টেট জেনারেল হাসপাতালের বিল্ডিং গড়ে তুলতে ১৮ মাস সময় ধার্য রয়েছে। তার মধ্যে দু’মাস কেটে গিয়েছে। বাকি ১৬ মাসের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে ঠিকাদার সংস্থা জানিয়েছে।
বিএমওএইচ বলেন, বিধায়কের সঙ্গে হসাপাতালের সমস্ত বিষয় নিয়ে সদর্থক আলোচনা হয়েছে। তিনি সমস্ত কিছু ঘুরে দেখেছেন। সেই সঙ্গে ইমপ্লান্টে রাজ্যের মধ্যে প্রথম হওয়ায় তিনি আমাদের প্রশংসা করে উৎসাহিত করেছেন। মুরারই হাসপাতালের মহিলা বিভাগের রোগীদের সঙ্গে কথা বলছেন বিধায়ক মোশারফ হোসেন। -নিজস্ব চিত্র