প্রেমিকার সঙ্গে বিচ্ছেদ, গিরিশ পার্কে আত্মঘাতী পাইলট
বর্তমান | ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ফ্ল্যাটে পাইলটের দেহ উদ্ধারকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল গিরিশ পার্ক এলাকায়। সৌম্যদিত্য কুণ্ডু (২১) নামের ওই তরুণকে ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার করে তাঁর পরিবারের সদস্যরা। ল্যাপটপের পিছনে ‘লস্ট’ লেখার সূত্র ধরে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, প্রেমিকার সঙ্গে বিচ্ছেদের কারণেই সৌম্যদিত্য আত্মঘাতী হয়েছেন। তাঁর দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
পরিবার সূত্রে খবর, ছোটো থেকেই পাইলট হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন তিনি। স্কুলে থাকাকালীন কোথায় বিমানের পাইলটের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, সে ব্যাপারে খোঁজখবর নিতেন। এ নিয়ে অনলাইনে একাধিক সংস্থার সঙ্গে কথাও বলেন তিনি। এক সময়ে সিদ্ধান্ত নেন, বিদেশ থেকে অ্যাভিয়েশনের কোর্স করবেন। বিদেশি ডিগ্রি থাকলে এশিয়া বা ইউরোপের যে কোনও বিমান সংস্থায় কাজের সুযোগ মিলবে। সেকারণে বছরখানেক আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় যান অ্যাভিয়েশন কোর্স করতে। ওই কোর্স শেষ করে সম্প্রতি ফিরেছিলেন কলকাতায়। চাকরির খোঁজ করছিলেন। এর মাঝেই তাঁর সঙ্গে প্রেমিকার সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়। বিদেশে থাকাকালীন প্রেমিকার সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ কমে গিয়েছিল। এই নিয়ে পারস্পরিক মন কষাকষি শুরু হয়। প্রেমিকার অভিযোগ, সৌম্যদিত্য তাঁকে এড়িয়ে চলছেন। সৌম্যদিত্য বলেছিলেন, চাকরির খোঁজে ব্যস্ত, তাই হয়তো যোগাযোগ কমেছে। কিন্তু গার্লফ্রেন্ড তা মানতে চাননি। উলটে তাঁর প্রশ্ন, অ্যাভিয়েশন নিয়ে পড়লেও চাকরি জুটছে না কেন? এই নিয়ে তুমুল অশান্তি হয়। এরপর ভেঙে যায় সম্পর্ক।
পুলিশ পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জেনেছে, বুধবার বিকেল ৩টে নাগাদ সৌম্যদিত্য ঘর থেকে বেরিয়ে যান। কিন্তু বাড়ি না ফেরায় খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। তাঁর এক বন্ধু বলেন, সৌম্যদিত্য কাকার ফাঁকা ফ্ল্যাটে প্রায়ই যেতেন। সেখানে তাঁরা একসঙ্গে আড্ডাও মেরেছেন। পরিবারের লোকজন ওই ফ্ল্যাটে গিয়ে ডাকাডাকি করলেও সাড়া না মেলায় ভাঙা হয় দরজা। সেখানে সৌম্যদিত্যকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান তাঁরা। গিরিশ পার্ক থানায় খবর গেলে পুলিশ এসে রাত ১২টা নাগাদ তাঁকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। ঘর থেকে উদ্ধার হয় একটি ল্যাপটপ। তার পিছনে লেখা ছিল ‘লস্ট’।