• ১৫’র ঘরে নেমে শীতলতম কলকাতা, কুয়াশা, কফি, গরম জামায় ঘুম ভাঙল শহরের
    বর্তমান | ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: সকালে ঘুম থেকে উঠতে না উঠতেই ঠান্ডা কাঁপিয়ে দিল। হাওয়ায় শীতের ঝলক। জানলা খুলতেই চারপাশ ঝাপসা। কুয়াশার চাদরে ঢাকা গাছ. বাড়ি, মাঠ। চাদর আবার উঠল শরীরে। আরও একটু বিছানায় গড়িয়ে নেওয়া। এবার চাদর ছেড়ে লেপ-কম্বল বের করতে হবে বলে ভাবছে শহর। লেবু চায়ে শরীর গরম হবে না। কড়া কফি চাই সকালে। ডিসেম্বর পড়তে না পড়তেই মেজাজে চলে এল শীত। পারদ নামল শহরে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫.৬ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। মরশুমের শীতলতম দিন জানিয়ে দিল আবহাওয়া দপ্তর।

    কলকাতা একা নয়, শহরতলির ছবিও প্রায় একইরকম। দমদম থেকে ডায়মন্ড হারবার তাপমাত্রা মোটামুটি ১৫ ডিগ্রির ঘরেই ঘোরাফেরা করেছে। ক্যানিং ও কল্যাণীতে নেমেছে আরও। সেখানে যথাক্রমে ১৩.৪ ও ১১.৬ ডিগ্রি। কলকাতা ও শহরতলির অন্যান্য জায়গার মধ্যে কল্যাণী সর্বনিম্ন।

    কলকাতার আকাশে দুপুরে রোদ উঠেছিল ঠিকই তবুও গায়ে একখানা গরম জামা রাখলে একটু স্বস্তি। বাসে-ট্রেনে-মেট্রোতে যাত্রীদের আলোচনার বিষয় একটাই, ‘শীত কি তবে ভালো মতোই পড়ে গেল?’ মুঠোফোনে তাপমাত্রা দেখে সেই আলোচনা পেল আরও গতি। কিছু মাস বাদে বাংলায় বিধানসভা নির্বাচন। তা নিয়ে বাজার গরম রয়েছে। এর উপর চলছে এসআইআর। তা নিয়ে সর্বত্র আলোচনা চলে এখন। সেই আলোচনার উত্তাপও এদিন খানিকটা প্রশমিত। সে জায়গা দখল করে নিল শীত। ঠান্ডার আচমকা অনুপ্রবেশ বদলে দিল শহরের আড্ডা-চিত্র। মেট্রোতে এক যাত্রী বললেন, ‘এসআইআর, ভোট কিছুই আর মাথায় নেই। ঠান্ডাই আজ হট টপিক। এই নিয়েই গল্প চলছে আর কি।’ প্রাতর্ভ্রমণকারীরা এরই মধ্যে শুনিয়ে দিলেন সকালের ঘন কুয়াশার গল্প। তা শুনে ট্রেনের মধ্যে জ্যাকেটের কলার তুলে নিলেন এক তরুণ। ঠান্ডার আমেজ যেন গেল বেড়ে। সেই গল্পের দলে কল্যাণীর এক বাসিন্দা। বললেন, ‘সকালে দু’কাপ কফি খাওয়ার পর একটু স্বস্তি মিলেছে।’ 

    আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, আগামী কয়েকদিন তাপমাত্রা আরও কমবে। এদিন সল্টলেক ছিল ১৬ ডিগ্রির ঘরে, বারাকপুর ১৫.৮। উলুবেড়িয়ার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৪.১ ডিগ্রি আর বসিরহাটে ১৫.৫। এদিকে, গৃহস্থের বাড়িতে রোদে দেওয়া হল কম্বল, লেপ। পাড়ায় রটে গেল পিকনিকের বার্তা। কয়েক জায়গায় পিকনিকের চাঁদা তোলা শুরু। আয়োজকদের বক্তব্য, ‘এমন ঠান্ডাই পিকনিকের জন্য আদর্শ।’ অন্যদিকে ভোগাচ্ছে নাক বন্ধ, মাথা ব্যথা, শ্বাসকষ্ট। সমস্যা বাড়ছে শিশু-প্রবীণদের। তবু শীত এসেছে। এখন আনন্দ উপভোগেই মন দিল শহর, শহরতলি।
  • Link to this news (বর্তমান)