নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া ও বরানগর: সলপের পর এবার হাওড়ার বাঁকড়া ও উত্তর ২৪ পরগনার কামারহাটি। কাজের চাপে দক্ষিণবঙ্গের দুই জেলায় আরও ২ বিএলও অসুস্থ হয়ে পড়লেন। দু’জনকেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ডোমজুড় বিধানসভার ১৪৮ নম্বর পার্টের বিএলও ওয়াসিম পারভেজ শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে বুধবার রাতে বাঁকড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি হন। কাজের অতিরিক্ত চাপে রক্তচাপ বেড়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে দাবি। অন্যদিকে, কামারহাটি পুরসভার ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের শ্রীপল্লি এলাকায় সুপ্রিয়া চক্রবর্তী নামে এক বিএলও অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে সাগর দত্ত মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসক জানিয়েছেন, তাঁকে কয়েক দিন বিশ্রামের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বাঁকড়ার ইসলামিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ওয়াসিম পারভেজ। নদীয়ার ধুবুলিয়ার বাসিন্দা ওয়াসিম সাড়ে চার বছর ধরে ওই স্কুলে চাকরি করছেন। তিনি জানান, গর্ভবতী স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য বাড়ি যাওয়া দরকার। কিন্তু, কাজের চাপে তিনি পরিবারের সঙ্গে ঠিক করে যোগাযোগও করতে পারেননি। বছরখানেক আগে গলব্লাডারের অপারেশন হয় ওয়াসিমের। হাই ব্লাড প্রেসার ও প্যানিক অ্যাটাকের সমস্যাও রয়েছে তাঁর। তাঁর দাবি, অসুস্থ স্ত্রীকে দেখতে বাড়িতে যাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে বলে এসআইআর শুরু হওয়ার আগে লিখিতভাবে কমিশনকে জানিয়েছিলেন। তা সত্ত্বেও তাঁকে বিএলওর দায়িত্ব দেওয়া হয়। স্ত্রীর অসুস্থতা বেড়েছে, আবার ডেটা এন্ট্রির কাজ ঠিকমত করতে পারছিলেন না বলে চরম দুশ্চিন্তায় ভুগছিলেন তিনি। জানা গিয়েছে, বুধবার রাতে বাড়িতে ফর্ম ও তথ্য আপলোড করার সময় আচমকা তাঁর প্যানিক অ্যাটাক হয়। জ্ঞান হারিয়ে মেঝেতে পড়ে যান। স্থানীয়রা তাঁকে হাসপাতালে ভরতি করেন।
ওয়াসিম বলেন, ‘বহুবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সমস্যার কথা জানিয়েছিলাম। ওরা বলেছিল, চাকরি টিকিয়ে রাখতে হলে চুপচাপ কাজ করে যেতে হবে।’ হাসপাতালে অসুস্থ বিএলওকে দেখতে গিয়ে ডোমজুড়ের বিধায়ক কল্যাণ ঘোষ বলেন, ‘কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে চাকরি নিয়ে ভয় দেখানো হচ্ছে। এটা চলতে পারে না।’ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তরের চেয়ারম্যান কৃষ্ণ ঘোষ বলেন, ‘হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর যাতে দ্রুত উনি পরিবারের কাছে ফিরতে পারেন, সে বিষয়টি দেখা হচ্ছে।’ কামারহাটি বিধানসভার ৩০ নম্বর বুথের বিএলও’র দায়িত্বে রয়েছেন সুপ্রিয়া চক্রবর্তী। কয়েকদিন ধরে তিনি অসুস্থ। সুপ্রিয়াদেবীর স্বামী মিহির চক্রবর্তী বলেন, এসআইআরের কাজ নিয়ে ও খুব ব্যস্ত ছিল। কয়েকদিন ধরে অসুস্থ বোধ করছিল। এদিন বেশ কয়েকবার বমি করে। তারপরেই তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহা বলেন, সারা রাজ্য জুড়ে এই ঘটনা ঘটছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিজেপি নির্বাচন কমিশনকে দিয়ে দু’বছরের কাজ দু’মাসে করাচ্ছে।