• পার্থর পর নিয়োগ মামলায় জামিন পেলেন ‘কালীঘাটের কাকু’
    দৈনিক স্টেটসম্যান | ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিয়োগ দুর্নীতির মামলায় জামিন পেলেন ‘কালীঘাটের কাকু’ ওরফে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। সিবিআইয়ের মামলায় জামিন পেলেন তিনি। শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি শুভ্রা ঘোষ তাঁর জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেন। ২০২৩ সালের ৩০ মে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রথমে ইডির হাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। ২০২৪ সালে তাঁকে ‘শোন অ্যারেস্ট’ করে সিবিআই। এর আগে ইডি-র মামলাতে জামিন পেয়েছিলেন তিনি। সিবিআই-এর মামলায় চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে অন্তর্বর্তী জামিন পান তিনি। শারীরিক অবস্থার কথা বিবেচনা করে তাঁকে জামিন দেওয়া হয়েছিল। এ বার আর অন্তর্বর্তী জামিন নয়, সিবিআই মামলায় স্থায়ী জামিন পেলেন সুজয়কৃষ্ণ।

    একাধিক শর্তসাপেক্ষে তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। জামিনের শর্ত হিসেবে হাই কোর্ট জানিয়েছে, কলকাতার বাইরে যেতে পারবেন না সুজয়কৃষ্ণ। তাঁকে পাসপোর্ট জমা রাখতে হবে। সপ্তাহে এক দিন তদন্তকারী অফিসারের কাছে হাজিরা দিতে হবে। তাঁর মোবাইল নম্বর তদন্তকারী আধিকারিক এবং আদালতের কাছে জমা রাখতে হবে। এই মামলা সংক্রান্ত কোনও নথি বিকৃত করতে পারবেন না সুজয়কৃষ্ণ। বিশেষ আদালতের প্রত্যেক শুনানিতে সশরীরে হাজিরা দিতে হবে তাঁকে। হাই কোর্ট নির্দেশানুসারে, আদালতের শর্ত না-মানলে সুজয়কৃষ্ণের জামিন বাতিল করতে পারবে নিম্ন আদালত।

    Advertisement

    অন্তর্বর্তী জামিনের শর্ত হিসাবে, গত দশ মাস ধরে কেন্দ্রীয় বাহিনীর ঘেরাটোপে কার্যত গৃহবন্দি হয়ে বেহালার বাড়িতে ছিলেন সুজয়কৃষ্ণ। ‘বহিরাগত’ কারও সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছিল না তাঁকে। এর আগে গৃহবন্দিত্ব ঘোচাতে এবং স্থায়ী জামিনে মুক্তি পেতে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ‘কালীঘাটের কাকু’।  তাঁর জামিনের বিরোধিতা করেছিল সিবিআই।

    উল্লেখ্য, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গ্রেপ্তার হন ‘কালীঘাটের কাকু’। নিয়োগ দুর্নীতির কয়েকশো কোটি টাকা লেনদেন প্রায় সবই জানতেন বলে দাবি তদন্তকারী সংস্থার। চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা তোলা থেকে অযোগ‌্য প্রার্থীদের তালিকা কোথায় পাঠাতে হবে,  এই সব পরিকল্পনা করতে সুজয়কৃষ্ণ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের অফিসে যেতেন বলে সূত্রের খবর। পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যর অফিসে বসেই নিয়োগ দুর্নীতির ছক কষতেন সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। তাঁরই নির্দেশে কুন্তল, তাপসদের হাত দিয়ে টাকা যেত।

    এমনকী, সুজয়কৃষ্ণ পার্থ চট্টোপাধ‌্যায়ের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখতেন। ইডি সূত্র অনুযায়ী, সুজয়কৃষ্ণর যে তিনটি সংস্থার সন্ধান মেলে, তার মাধ‌্যমেই নিয়োগ দুর্নীতির বিপুল কালো টাকা সাদা করা হত। সে কারণে তাকে জেলবন্দি করে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। সম্প্রতি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় জামিন পেয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। জামিনে মুক্তি পেয়েছেন নিয়োগ মামলায় ধৃত অন্যান্য প্রাক্তন পদস্থ আধিকারিকরাও। এবার জামিন পেলেন সুজয়কৃষ্ণও।
  • Link to this news (দৈনিক স্টেটসম্যান)