• ৩২ হাজার চাকরি বহালে সুপ্রিম কোর্টে ক্যাভিয়েট ‘শঙ্কিত’ পর্ষদের
    প্রতিদিন | ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ধীমান রক্ষিত: সুপ্রিম কোর্টে ক্যাভিয়েট দাখিল করল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বহাল রেখেছে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। মামলাকারীদের আইনজীবীর একাংশ জানিয়েছিলেন, হাই কোর্টের রায় চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তাঁরা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারেন। তাই আগে থেকেই ক্যাভিয়েট দাখিল করল ‘শঙ্কিত’ প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।

    হাই কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সিঙ্গল বেঞ্চের চাকরি বাতিলের নির্দেশ খারিজ করে দেয় বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি ঋতব্রত কুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চ। এই রায়ের পরই মামালকারীদের আইনজীবারা জানিয়েছেন, হাই কোর্টের এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করতে পারেন তাঁরা। সেই আবহে ক্যাভিয়েট দাখিল করে রাখল পর্ষদ। যাতে শীর্ষ আদালত প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের বক্তব্য শোনার পরই কোনও নির্দেশ দেয়। 

    চাকরি বহালের রায় শোনার পর থেকেই সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জের বিষয়টি উঠে আসছে। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের শঙ্কা রয়েছে, চাকরি বাতিলের আবেদন জানিয়ে শীর্ষ আদালতের  দ্বারস্থ হতে পারেন মামলাকারীরা। তাতে ফের শিক্ষকদের চাকরি নিয়ে দোলাচল তৈরি হতে পারে। মামলা দায়ের হলে, সেই শুনানিতে পর্ষদের কথা না শুনে সুপ্রিম কোর্ট যাতে কোনও নির্দেশ না দেয়, তার জন্যই আগাম পদক্ষেপ।

    উল্লেখ্য, বুধবার ২০১৪ সালের টেটের ভিত্তিতে ২০১৬ সালে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়। প্রায় ৪২৫০০ শিক্ষক নিয়োগ হয়েছিল। তাতেই অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। ২০২৩ সালের মে মাসে তৎকালীন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় ৩২ হাজার চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন। তবে চাকরি বাতিলের পরও তাঁদের কর্মরত থাকতে বলা হয়। বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছিলেন, তিন মাসের মধ্যে রাজ্যকে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। তাতে যোগ্য ও উত্তীর্ণ প্রার্থীদের চাকরি বহাল থাকবে। এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় পর্ষদ। তৎকালীন বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ও বিচারপতি সুপ্রতীম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটি শুনানির জন্য ওঠে।

    ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছিল, একক বেঞ্চের চাকরি বাতিল সংক্রান্ত নির্দেশের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি থাকছে। কিন্তু পর্ষদকে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। একক বেঞ্চ ও ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় রাজ্য ও পর্ষদ। তাদের অভিযোগ, সমস্ত পক্ষের বক্তব্য রাখার সুযোগ দেওয়া হয়নি। তারপরই মামলাটি হাই কোর্টে পাঠানো হয়। শীর্ষ আদালত নির্দেশ দিয়েছিল, ডিভিশন বেঞ্চকে সমস্ত পক্ষের বক্তব্য শুনতে হবে। মামলাটি বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চে আসে। গত ১২ নভেম্বর মামলাটির শুনানি শেষ হয়। রায়দান স্থগিত ছিল। বুধবার বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি ঋতব্রত কুমার মিত্রের ডিভিশন বেঞ্চ রায়দান করে জানান,  বহাল  থাকছে ৩২ হাজারের চাকরি।
  • Link to this news (প্রতিদিন)