দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য থেকে সামরিক শক্তিবৃদ্ধি, কী কী ‘সন্ধি’ মোদী-পুতিনের বৈঠকে?
প্রোটোকল ভেঙে বৃহস্পতিবার দিল্লি বিমানবন্দরে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ‘রিসিভ’ করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। গোটা বিশ্বকে বার্তা দেন, বন্ধুত্ব কতটা গভীর। শুধু দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যেই নয়। দুই রাষ্ট্রের মধ্যে ‘দোস্তি’ আরও অটুট হবে সামরিক শক্তি বৃদ্ধি, বাণিজ্যিক আদান-প্রদান, আর্থিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও। শুক্রবার ‘হায়দ্রাবাদ হাউস’-এর বৈঠক থেকে উঠে এসেছে সেই রকমই বেশ কয়েকটি দিক। কোন কোন বিষয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ছিল মস্কো-নয়াদিল্লি? দেখে নেওয়া যাক একনজরে।
ভারত ও রাশিয়া দীর্ঘমেয়াদী অর্থনৈতিক সহযোগিতার রোডম্যাপ তৈরি হলো এই বৈঠক থেকে। এই চুক্তিতে রয়েছে দুই দেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণ, কো-প্রোডাকশন, কো-ইনোভেশন। দুই দেশ ২০২৩ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলারের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের লক্ষ্যপূরণে সচেষ্ট থাকবে। এর পাশাপাশি দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে India–EAEU Free Trade Agreement নিয়েও আলোচনা এগিয়েছে। ভারতের ওষুধ, কৃষিজপণ্য ও ভোগ্যপণ্য রপ্তানি বৃদ্ধির ব্যাপারেও আলোচনা হয়।
দুই দেশের সম্পর্কের বাঁধন আরও মজবুত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে জ্বালানি। সিভিল নিউক্লিয়ার সমন্বয়, গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থ নিয়ে দুই দেশের যৌথ কাজ করার ব্যাপারে আলোচনা হয় এই বৈঠকে। পাশাপাশি ভারতে নিরবিচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহের ব্যাপারেও প্রেসিডেন্ট পুতিন আশ্বাস দিয়েছেন বলে খবর।
এই বৈঠকে উঠে এসেছে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধেও যৌথ লড়াইয়ের কথাও। সম্প্রতি অপারেশন সিঁদুরের মাধ্যমে বিশ্বের সব দেশকেই ভারতের সন্ত্রাস বিরোধী কঠোর অবস্থানের স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে। সীমান্ত সুরক্ষা বৃদ্ধি ও দেশের অভ্যন্তরীণ সুরক্ষা বৃদ্ধি এবং সন্ত্রাসবাদকে মূল থেকে উপড়ে ফেলতে লড়বে দুই দেশ। অন্য দিকে ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধের বিষয়টি নিয়েও নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে ভারত। প্রধসনমন্ত্রী মোদী জানিয়ে দেন, এই বিষয়ে ভারত ‘নিরপেক্ষ’ নয়, শান্তির পক্ষে।
সোভিয়েত রাশিয়ার (পূর্ববতী রাশিয়া) প্রজেক্টের অংশ হিসেবেই প্রথম মহাকাশে গিয়েছিলেন ভারতীয় মহাকাশচারী রাকেশ শর্মা। মহাকাশ গবেষণায় দুই দেশের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। আগামী দিনে মহাকাশ নিয়ে তথ্যানুসন্ধানের বিষয়ে দুই দেশ সাহায্যের হাত আরও খানকিটা বাড়িয়ে দেবে। জাহাজ নির্মাণ এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজের পরিসর বাড়াবে দুই দেশ।
ভারত এবং রাশিয়া রাষ্ট্রপুঞ্জ, G20, BRICS এবং SCO-সহ আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মগুলিতে সমন্বয় বজায় রাখতে সম্মত হয়েছে। আন্তর্জাতিক সমস্যা দূরীকরণেও একে অন্যের পরিপূরক হয়ে কাজ করবে দুই দেশ।