বৌভাতের সব আয়োজন সারা। অতিথিরা এসে গিয়েছেন। প্যান্ডেলে মিষ্টি সুরে বাজছে বিসমিল্লার সানাই। কিন্তু বর-কনের দেখা নেই। কোথায় গেলেন? ইন্ডিগোর বিমান বিপর্যয়ে আর বৌভাতের অনুষ্ঠানে হাজির হতে পারেননি তাঁরা। এমনই ঘটনা ঘটল ভুবনেশ্বরে। তবে গল্পে একটা টুইস্টও আছে। প্রযুক্তি ‘বেঁকে বসায়’ তাঁরা যেমন হাজির হতে পারেননি, তেমনই প্রযুক্তির দৌলতেই ভার্চুয়ালি উপস্থিত হন তাঁরা। সে এক দেখার মতো দৃশ্য।
পাত্র সঙ্গম দাসের বাড়ি কর্নাটকের হব্বলিতে। তিনি পেশায় সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। কর্মসূত্রে থাকেন বেঙ্গালুরু। পাত্রী মেধা ক্ষীরসাগরের থাকেন ওডিশার ভুবনেশ্বরে। তিনিও ইঞ্জিনিয়ার। ২৩ নভেম্বর গাঁটছড়া বাঁধেন তাঁরা। ঠিক ছিল, ৩ ডিসেম্বর পাত্রের বাড়িতে বৌভাত হবে। সেই মতো ২ ডিসেম্বর ইন্ডিগোর ফ্লাইটে কর্নাটকের টিকিট কাটেন তাঁরা।
নির্দিষ্ট সময়েই বিমানবন্দরে পৌঁছন মেধা এবং সঙ্গম। কিন্তু তার পরেই মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। একের পর এক বিমান বাতিল। কী হবে? তাঁরা ঘাবড়ে যাননি। হাতে একদিন আছে। তাঁরা বাড়ি চলে আসেন। পর দিন ৩ ডিসেম্বর ফের যান বিমানবন্দরে। কিন্তু এ বারে যেন বিমান বাতিলের হিড়িক পড়ে গিয়েছে। শুকনো মুখে বিমানবন্দরেই বসে পড়েন তাঁরা। চোখ-মুখ থমথমে। বাড়ি থেকে বার বার ফোন আসছে, ‘আর কতক্ষণ’? শুভ মুহূর্ত পেরিয়ে যাচ্ছে যে।
সব কথা খুলে বলেন তাঁরা। কিছুক্ষণ থম মেরে থাকেন বাড়ির লোক। তার পরে শুরু হয় এক অন্য আয়োজন। ভুবনেশ্বর থেকেই বর-কনের বেশে বসে পড়েন তাঁরা। ভার্চুয়ালি যোগ দেন কর্নাটকের বাড়ির লোক। তাঁদের বরণ করে আত্মীয়স্বজনরা। তবে ভার্চুয়ালি। ওই ভাবেই বৌভাতের সমস্ত আচার-অনুষ্ঠান সারেন তাঁরা। এই ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসতেই অনেকেই বলছেন, ‘প্রযুক্তির ভালো আর খারাপ, একসঙ্গে দেখে ফেললাম আমরা।’
গত দুই দিনে ৯৫০-রও বেশি বিমান বাতিল হয়েছে ইন্ডিগোর। শুক্রবার মধ্যরাত পর্যন্ত দিল্লি বিমানবন্দর থেকে সমস্ত বিমান বাতিল করে দিয়েছে ইন্ডিগো। চেন্নাই এবং বেঙ্গালুরুতেও সন্ধে ৬টা পর্যন্ত সব বিমান বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।