প্রায় ছয় মাস পরে নিজের ছেলেকে নিয়ে মালদার মহদীপুর সীমান্ত দিয়ে ভারতের মাটিতে পা রাখলেন সোনালি বিবি। ফিরলেন না বাকি চার জন। একসঙ্গে ছয় জনকে বাংলাদেশে ‘পুশব্যাক’ করা হয়েছিল গত ২৬ জুন। কেন বাকি চারজনকে ছাড়া হলো না? বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি লিপিকাবর্মন ঘোষ। সোনালির স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য এ দিন নিয়ে যাওয়া হয় মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
ভারতীয় নাগরিকত্বের বৈধ নথি থাকা সত্ত্বেও গত ১৭ জুন তাঁদের গ্রেপ্তার করে দিল্লি পুলিশ বলে অভিযোগ ৷ শুধু বাংলা ভাষায় কথা বলার জন্য তাঁদের বাংলাদেশি বলে সন্দেহ করা হয় বলে দাবি সোনালির পরিবারের ৷ সেই সন্দেহে ২৬ জুন অসমের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে ‘পুশব্যাক’ করে ছ’জনকে বাংলাদেশে পাঠানো হয় ৷ সেই সময়ে সোনালি বিবি অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন ৷ সেই থেকে তাঁরা বাংলাদেশে রয়েছেন ৷ এদিকে বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ তাঁদের অনুপ্রবেশকারী হিসেবে আটক করে ও মামলা রুজু করে ৷ সোনালি-সহ ছয় জন এতদিন স্থানীয় সংশোধনাগারে বন্দি ছিলেন ৷ গত সোমবার এই মামলায় সকলেই জামিন পেয়েছেন৷ তবে বাকিদের কেন ছাড়া হলো না? সেই নিয়েই উঠছে প্রশ্ন।
মালদা জেলা পরিষদের সভাধিপতি লিপিকা বর্মন ঘোষ জানান, পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার বাসিন্দা সোনালি বিবি। উনি তাঁর ছেলে সঙ্গে নিয়ে ফিরে এসেছেন। কিন্তু আজকে আমরা দেখলাম শুধু দু’জনকেই বাংলাদেশ থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। বাকি চার সদস্য কোথায়? তার জবাব দিতে পারেনি ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনার মনোজ কুমার বলে লিপিকা। তাঁর কথায়, ‘কেন বাকিদের ফেরানো হলো না আমি প্রশ্ন করেছিলাম। আমাদের প্রশ্ন শুনে সেখান থেকে চলে গিয়েছেন। আমরা বাকি সদস্যদের ফিরিয়ে আনা দাবি জানাচ্ছি।’
পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক কল্যাণ পর্ষদের চেয়ারম্যান সামিরুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলা-বিরোধী জমিদারদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াইয়ের পরে সোনালি বিবি এবং তাঁর নাবালক পুত্র ভারতে ফিরে এসেছেন। এই দিনটি দরিদ্র বাঙালিদের উপর নির্যাতন ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ঐতিহাসিক মুহূর্ত হিসেবে স্মরণ করা হবে।’