ব্রিগেডে পাঁচ লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ, রেকর্ড গড়ার প্রস্তুতি, আমন্ত্রণ মুখ্যমন্ত্রীকেও
আজ তক | ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫
কলকাতার ব্রিগেড ময়দান আবারও ইতিহাসের সাক্ষী হতে চলেছে। আগামী ৭ ডিসেম্বর, রবিবার সনাতন সংস্কৃতি সংসদের উদ্যোগে আয়োজিত হতে চলেছে বিশাল ধর্মীয় সমাবেশ, ‘পাঁচ লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠ’। আয়োজকদের দাবি, বাংলায় তো বটেই, সমগ্র দেশেও এত বড় মাপের সমবেত গীতাপাঠ এই প্রথমবার হতে চলেছে। রেকর্ড গড়ার প্রত্যাশায় তাই জোর প্রস্তুতি চলছে ময়দানে।
শুক্রবার সাংবাদিক সম্মেলনে কর্মসূচির খুঁটিনাটি জানালেন কার্তিক মহারাজ। তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রী সহ রাজ্যের বেশ কয়েকজন মন্ত্রীকে আমন্ত্রণ পাঠানো হয়েছে। তাঁর কথায়, 'মুখ্যমন্ত্রী এলে আমাদের বিশেষ আনন্দ হবে। এই অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ সামাজিক ও আধ্যাত্মিক উদ্দেশ্যে।'
তবে রাজ্যে বিধানসভা ভোটের বছর ঘুরলেই এই ধর্মীয় সমাবেশকে ঘিরে রাজনীতির ছায়া পড়েছে বলে মনে করছেন কিছু রাজনৈতিক বিশ্লেষক। প্রশ্ন উঠেছে, এ আয়োজনের পিছনে কি কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে? কার্তিক মহারাজ অবশ্য তা সাফ খারিজ করে বলেন, 'আমাদের অনুষ্ঠানের সঙ্গে ভোট-রাজনীতির কোনও সম্পর্ক নেই। সমাজে যে অবক্ষয় তৈরি হয়েছে, তা কাটাতে আত্মিক চর্চাই প্রয়োজন। গীতাপাঠ সেই পথেই একটি সামান্য প্রয়াস।'
তিনি আরও বলেন, 'পশ্চিমবঙ্গ বহু যুগ ধরেই আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক পরম্পরার কেন্দ্র। সেই ঐতিহ্যকে সামনে রেখে মঠ-মন্দির, আশ্রম, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে সঙ্গে নিয়েই এই মহাযজ্ঞের আয়োজন করা হয়েছে।' আয়োজকদের আশা, গীতাপাঠের মাধ্যমে সমাজে সম্প্রীতি, স্থিতি ও আধ্যাত্মিকতার নব বার্তা পৌঁছে যাবে।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন গীতা মণীষী মহামণ্ডলের স্বামী জ্ঞানানন্দজী মহারাজ। প্রধান অতিথি হিসেবে থাকছেন পদ্মভূষণ সাধ্বী ঋতম্বরা। সম্মানীয় অতিথি বাবা রামদেব এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাগেশ্বরধামের ধীরেন্দ্র শাস্ত্রী।
স্বামী প্রদীপ্তনন্দ মহারাজ বলেন, 'সমাজে বিভাজনের আবহে আধ্যাত্মিক অনুশীলন মানুষকে স্থির রাখে, পথ দেখায়। ইতিমধ্যেই রাজ্যের হাজার-হাজার গীতা-অনুরাগী এই উদ্যোগে যোগদানের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।'
এদিকে, সমাবেশ ঘিরে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। বিপুল ভিড় সামলাতে বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা। ব্রিগেডের কেন্দ্রস্থলে তৈরি হচ্ছে বিশাল মূল মঞ্চ, যেখান থেকে উচ্চারিত হবে গীতার শ্লোক-একসঙ্গে পাঁচ লক্ষ কণ্ঠে।
অনুষ্ঠানে শুরু হবে সকাল ৯টায়। আয়োজকদের প্রত্যাশা, সেদিন আধ্যাত্মিকতার জোয়ারে ভেসে উঠবে ব্রিগেড, আর তৈরি হবে নতুন ইতিহাস-পাঁচ লক্ষ কণ্ঠে গীতাপাঠের রেকর্ড।