নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: সংসদে এসআইআর নিয়ে আলোচনা কি এড়াতে চাইছে মোদি সরকার? শুক্রবার লোকসভায় সংসদ বিষয়কমন্ত্রী কিরেন রিজিজুর পেশ করা তালিকার পরেই উঠছে এই প্রশ্ন। আগামী সপ্তাহে লোকসভায় কী কী বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে, সরকার কী বিল পাশের জন্য আনবে, তা তুলে ধরেন মন্ত্রী। সেখানে তিনি বন্দেমাতরমের সার্ধশতবর্ষ নিয়ে বিশেষ আলোচনার পাশাপাশি সাপ্লিমেন্টারি ডিমান্ড ফর গ্রান্টস, অ্যাপ্রোপিয়েশন বিল এবং মণিপুরের জল সংরক্ষণ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত দু’টি বিলের কথা বলেন। কিন্তু নির্বাচন সংস্কার বিলের কোনও উল্লেখই নেই।
অথচ গত মঙ্গলবার সরকারের সঙ্গে বিরোধীদের দফায় দফায় চারবার বৈঠকের পর সরকার জানিয়েছিল, সরাসরি এসআইআর (স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশন) নয়। নির্বাচনী সংস্কার নিয়ে আলোচনা হবে। ১০ ঘণ্টা সময়ও বরাদ্দ হয়েছিল স্পিকার ওম বিড়লার ডাকা সর্বদলীয় কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে। ঠিক ছিল, লোকসভায় মঙ্গল এবং বুধবার, রাজ্যসভায় বুধ-বৃহস্পতিবার আলোচনা হবে নির্বাচনী সংস্কার নিয়ে।
অথচ আগামী সপ্তাহের কার্যবিবরণীতে তা ঘোষণাই করলেন না রিজিজু? তৃণমূলের লোকসভার মুখ্য সচেতক কাকলি ঘোষদস্তিদার বলেন, এত তঞ্চকতা। সবার উপস্থিতিতে সরকার জানাল আগামী সপ্তাহে নির্বাচনী সংস্কার আলোচনা হবে। আর এখন তার উল্লেখই নেই। বিজেপি সরকার বিশ্বাসঘাতক। সংসদকেও সম্মান দিচ্ছে না। কংগ্রেসের সাংসদ মানিক্কম টেগর বলেন, আলোচনা করবে না মানে? দেখি কী করে এড়ায়? কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে সব ঠিক হয়ে যাওয়ার পরে এভাবে আলোচনা থেকে পালানো যায় না। রাজ্যসভাতেও আগামী সপ্তাহের কার্যবিররণীর বিবৃতিতে বন্দেমাতরমের আলোচনার কথা বলা হলেও ছিল না নির্বাচনী সংস্কার। তাই সুযোগ পেয়েই সভার মধ্যেই সরব হন তৃণমূলের রাজ্যসভার দলনেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন। বলেন, এসআইআর কোথায় গেল? কেন আপনার তালিকায় বিষয়টি বাদ? চাপে পড়ে কিরেন রিজিজু জানান, হবে হবে। যদিও কবে, তা উল্লেখ করলেন না। অন্যদিকে, বাংলায় কথা বলার জন্য বিজেপি শাসিত ওড়িশায় পশ্চিমবঙ্গের ৪৮৪ জনকে হেনস্তা করা হয়েছে বলেই শুক্রবার লোকসভার জিরো আওয়ারে সরব হন শতাব্দী রায়। বলেন, বাংলাদেশি তকমা দিয়ে আটক করা হয়েছে। অথচ তাঁরা মুর্শিদাবাদ, মালদা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা, বীরভূমের বাসিন্দা। তবে শতাব্দী তাঁর বক্তব্য শেষ করার আগেই মাইক বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। তাই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তিনি। নাটকীয়ভাবে সোজা নিজের আসন ছেড়ে চলে যান ট্রেজারি বেঞ্চের দিকে। বিজেপির জম্মুর সাংসদ যুগল কিশোর তখন নিজের বক্তব্য রাখছেন। শতাব্দী তাঁর মাইকের সামনে প্রতিবাদ শুরু করেন। প্রশ্ন তোলেন, কেন আমাকে বলতে দেওয়া হল না? আচমকা শতাব্দীর এই আচরণে বিজেপির সাংসদরা হকচকিয়ে যান। আটকানোর চেষ্টা করেন। কিছুক্ষণ বিতণ্ডা চলার পর সভা ছেড়েই বেরিয়ে যান শতাব্দী।