বিমানকর্মীদের জন্য শ্রমবিধি আংশিক শিথিল ডিজিসিএর, পরিষেবা স্বাভাবিক হতে পারে ১৫ ডিসেম্বর
বর্তমান | ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫
নয়াদিল্লি: মেঝেতে পড়ে হাজার হাজার ট্রলিব্যাগ। কেউ দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষায়। উড়ান বাতিলের খবর পেয়ে রাগে ফুঁসছেন কেউ। চাকরি, অনুষ্ঠানের নেমন্তন্ন, ফ্যামিলি ট্যুর, গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক সব লাটে উঠেছে। অনেকে ক্লান্ত হয়ে বাড়ির পথে রওনা দিচ্ছেন। কলকাতা, দিল্লি, মুম্বই। দেশজুড়ে একাধিক বিমানবন্দরের চিত্রটা ঠিক এমনই। শুক্রবারও অব্যাহত ইন্ডিগোর বিমান বিপর্যয়। ইন্ডিগোর সিইও পিটার এলবার্সের কথায়, এদিন হাজারের বেশি বিমান বাতিল হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শেষমেশ পিছু হটতে বাধ্য হল কেন্দ্র। বিমানকর্মীদের বিশ্রাম সংক্রান্ত আগের বিধি আংশিক প্রত্যাহার করল অসামরিক বিমান পরিবহণ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিজিসিএ। ‘ফ্লাইট ডিউটি টাইম লিমিটেশনস’ বিধিতে বলা হয়েছিল, পাইলটরা ছুটি নিলেও প্রতি সপ্তাহে তাঁদের ৪৮ ঘণ্টার বিশ্রাম দেওয়া বাধ্যতামূলক। ইন্ডিগোর বিমানকর্মী ঘাটতিতে দেশজুড়ে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে ওই নিয়ম প্রত্যাহার করা হয়েছে। এক্ষেত্রে পাইলটদের ছুটির সময়সীমাও ওই ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবে। পাইলটদের নাইট সংক্রান্ত বিধিও শিথিল করা হয়েছে। এদিন ডিজিসিএ-র তরফে জানানো হয়েছে, ইতিমধ্যেই একটি চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। পুরো ঘটনার তদন্ত করবে সেই কমিটি।
শুক্রবার রাজ্যসভার জিরো আওয়ারে কংগ্রেস সাংসদ প্রমোদ তিওয়ারি বলেন, ‘সাংসদরাও প্রভাবিত হচ্ছেন। শুক্রবার সভার কাজ মুলতুবি হওয়ার পর সাংসদদের অধিকাংশই নিজের নির্বাচনী ক্ষেত্রে ফিরে যান। শনি, রবি সংসদীয় এলাকায় কাটিয়ে আবার সোমবার দিল্লি চলে আসেন। কিন্তু আচমকা এত বিমান বাতিল হওয়ার জেরে তাঁরা চরম হয়রানির শিকার হচ্ছেন। সরকারের অবশ্যই বিষয়টি দেখা প্রয়োজন। এরপর রাজ্যসভার চেয়ারম্যান সি পি রাধাকৃষ্ণন সংসদ বিষয়কমন্ত্রী কিরেন রিজিজুকে বিষয়টি দেখতে বলেন। রিজিজু জানান, অসামরিক বিমান পরিবহণমন্ত্রক নজর রাখছে। তারা অবস্থান ব্যাখ্যাও করবে।
এদিকে ঝোপ বুঝে কোপ মারতে শুরু করেছে বাকি বিমান সংস্থাগুলি। তড়িঘড়ি অন্য সংস্থার উড়ানের টিকিট কাটতে বাধ্য হচ্ছেন যাত্রীরা। আর সেই দাম দেখে চোখ কপালে ওঠার জোগাড়। এইমুহূর্তে ইকোনমি ক্যাটিগরিতে এয়ার ইন্ডিয়ার দিল্লি-কলকাতা ফ্লাইটের দাম প্রায় ৫০ হাজার টাকা। অথচ লন্ডন যাওয়ার খরচ প্রায় ২৫ হাজার টাকা। অর্থাৎ দিল্লি থেকে কলকাতা আসার খরচ লন্ডন যাওয়ার থেকে বেশি। এনিয়েই যাত্রীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যেই ক্ষমা চেয়ে বিবৃতি জারি করেছে ইন্ডিগো। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, যাত্রীদের থাকা-খাওয়ার যথাযথ বন্দোবস্ত, টাকা ফেরত সহ সমস্ত ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এদিন সন্ধ্যায় যাত্রীদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন ইন্ডিগোর সিইও পিটার এলবার্সও। তিনি জানিয়েছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে ১০-১৫ ডিসেম্বর হয়ে যাবে।