• ইন্টারপোলের ওয়ান্টেড, সিকিম থেকে গ্রেফতার বাঘের চামড়া পাচারকারী
    বর্তমান | ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নয়াদিল্লি: তাপমাত্রা হিমাঙ্কের ৭ ডিগ্রি নীচে। ঘটনাস্থল ইন্দো-চীন সীমান্ত থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে সিকিমের লাচুং। রাতের অন্ধকারে হানা দিয়ে গোপন ঘাঁটি থেকে বছর চল্লিশের এক মহিলাকে গ্রেফতার করল পুলিশ ও আধিকারিকরা। এভাবেই ফিল্মি কায়দায় ১০ বছর পর শেষ হল ভারতের অন্যতম বড় বাঘের চোরাশিকার ও পাচারের তদন্ত। 

    ধৃত মহিলার নাম ইয়াংচেন লাচুংপা (৪৩)। কুখ্যাত এই পাচারকারীর নামে জারি রয়েছে ইন্টারপোলের রেড কর্নার নোটিশ। ২০১৫ সালের এক চোরাশিকারের মামলায় ইয়াংচেনকে ধরতে যৌথ তদন্তে নেমেছিল মধ্যপ্রদেশ স্টেট টাইগার ফোর্স ও ওয়াইল্ড লাইফ ক্রাইম কন্ট্রোল ব্যুরো। ১০ বছর পালিয়ে বেড়ানোর পর অবশেষে ধরা পড়ল সে। 

    জানা যাচ্ছে, কয়েক মাসের লাগাতার নজরদারির পর ইয়াংচুকের জন্য ফাঁদ পাতা হয়। ২ ডিসেম্বর সিকিম পুলিশের সহযোগিতায় কুখ্যাত এই পাচারকারীকে গ্রেফতার করা হয়। বিষয়টি এদিনই প্রকাশ্যে আসে। ধরা পড়বার পর নিজের দুটি ফোন ও একটি গোপন সংকেত লেখা ডায়েরি পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা করেছিল অভিযুক্ত। সেই ডায়েরিতে চোরাশিকারের সঙ্গে জড়িত আরও একাধিক ব্যক্তির নাম রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। ধৃতকে ট্রানজিট রিমান্ডে মধ্যপ্রদেশে নিয়ে আসা হচ্ছে।

    ইয়াংচেন আদতে তিব্বতের বাসিন্দা। চোরাশিকারের কিংপিন জয় তামাংকে বিয়ে করেছিল সে। চোরা শিকারিদের নেটওয়ার্কের একটা বড় অংশের নিয়ন্ত্রণ করত ইয়াংচেন। ভারত থেকে নেপাল, তিব্বত ও চীনে বাঘের দেহের বিভিন্ন অংশ, প্যাঙ্গোলিনের আঁশ, লাল চন্দন, চিরু নামের এক বিলুপ্তপ্রায় হরিণের উল এবং কর্ডিসেপস নামের এক ধরনের ছত্রাক পাচার করত সে।  ভারতে দিল্লি ও সিকিমের একাধিক এলাকায় তার গোপন ঘাঁটি ছিল। গ্রেফতারি এড়াতে প্রায়ই ঠিকানা বদল করত। 

    ২০১৫ সালে ইথিওপিয়ায় ৮টি ভারতীয় বাঘের চামড়া উদ্ধার হয়, তার মধ্যে অন্তত ৩টি ছিল সাতপুরার। ২০১৩ সালে নেপালে উদ্ধার হয় ৫টি বাঘের চামড়া ও ৭ বস্তা হাড়। দুই পাচারের সঙ্গেই নাম জড়িয়েছিল ইয়াংচেকের। তদন্তকারীরা মনে করছেন, ইয়াংচেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বিশ্বের সবচেয়ে বড় চোরাশিকারের নেটওয়ার্কের খোঁজ পাওয়া যেতে পারে। 

     
  • Link to this news (বর্তমান)