বাংলাদেশের ‘সেনাকর্মী’ স্বামী, নথি দেখিয়ে দাবি রূপান্তরকামী স্ত্রীর!
বর্তমান | ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫
শ্যামলেন্দু গোস্বামী, বারাসত: বাংলাদেশি হয়েও নাম রয়েছে ভারতের ভোটার তালিকায়। বাংলাদেশি স্বামী ইনিউমারেশন ফর্ম জমা দেওয়ায় আগেই প্রশাসনের দ্বারস্ত হয়েছেন স্ত্রী। এবার স্বামীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দাবি তুললেন বারাসতের বাসিন্দা রাই চক্রবর্তী। তাঁর দাবি, আমার স্বামী অমিত ভট্টাচার্য বাংলাদেশের সেনায় কর্মরত ছিলেন। সেখানে এক মহিলার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে কোনওরকমে চোরাপথে ভারতে চলে আসেন। শুধু তাই নয়, ভারত ও বাংলাদেশে দুই জায়গার দুই ধরনের পৃথক জন্ম তারিখ থাকায় বিতর্ক আরও বেড়েছে। সর্বোপরি কীভাবে সে ভারতীয় হল তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। গোটা বিষয়টি নিয়ে বারাসত জুড়ে শুরু হয়েছে চর্চা। জানা গিয়েছে, বারাসাতের নবপল্লির বাসিন্দা রাই চক্রবর্তী রূপান্তরকামী মহিলা। ২০২২ সালে তাঁর সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে হয় অমিত ভট্টাচার্যর। তবে রেজিস্ট্রি হয়নি। সামাজিক মতেই হয়েছিল বিয়ে। স্বামী-স্ত্রীর বিভিন্ন ছবিও রয়েছে রাইয়ের কাছে। কিন্তু বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই তাঁর উপর অত্যাচার বাড়তে থাকে বলে অভিযোগ রাইয়ের। সব সময় টাকা দাবি করত অমিত। ইতিমধ্যেই মোটা টাকা দিয়েছেন তিনি, কিন্তু ২০২২ সালের শেষ দিকে গাড়ি কেনার জন্য চাপ দিতে থাকে অমিত। রাজি না হওয়ায় অত্যাচার বাড়তে থাকে বলেই দাবি রাইয়ের। এরপর বধূ নির্যাতনের মামলা করা হয়। গ্রেফতার হয় অমিত। কিন্তু পরিবারের সদস্যদের অনুরোধে তাকে জামিন করানো হয়। এরপর থেকেই তাঁরা আলাদা থাকতে শুরু করে। কিন্তু সম্প্রতি রাই জানতে পারেন, স্বামী অমিত বাংলাদেশের চট্টগ্রামের বাসিন্দা। এরপর তিনি ফরেনার্স অ্যাক্টে মামলা করেছেন বারাসত আদালতে। এরপর সপরিবারে ‘নিখোঁজ’ অমিতের বাবা-মা ও ভাই। এখানেই অবশ্য শেষ নয়, অমিত সৈনিক পদে কর্মরত ছিলেন বাংলাদেশের রামু সেনানিবাসে। সরকারি নথি অনুযায়ী তাঁর সেনা নম্বর ৪০৬৬৭০৮। এদিকে বাংলাদেশ সরকারের পরিচয় পত্রে অমিতের জন্ম সাল ২০০০। এই সংক্রান্ত বিভিন্ন নথি পেশ করেছেন রাই। কিন্তু ভারতে এসে যুবকের জন্ম সালের পরিবর্তন হয়ে গিয়েছে। ভারতীয় আধার কার্ড অনুসারে অমিতের জন্ম ২০০২ সাল। তবে মাস ও দিন একই রয়েছে। ২০২১ সালে অমিতের বাবা বাংলাদেশে কোভিড ভ্যাকসিন নিয়েছেন। সেই নথিও উঠে এসেছে। তবে ভারতে অমিতের আধার কার্ড ইস্যু হয়েছে ২০২২ সালে। রাইয়ের দাবি, আমাদের প্রেমের সময় রাতে অমিত আমার বাড়ি আসত। একে অপরকে ভালো করে বুঝে নিয়েছিলাম। কিন্তু বিশ্বাসের সুযোগে নিয়ে প্রতারণা করল। তাঁর সংযোজন, আমি মা হতে চেয়েছিলাম। সেই জন্য চিকিৎসকের পরামর্শ মতো প্রস্তুতিও শুরু করি। কিন্তু অমিত তাতে বাধা দেয়। ওর পরিবারের লোকজন এতে জড়িত বলেই আমার ধারণা। আমি এর বিচার চাই। কারণ এটা দেশবিরোধী। এনিয়ে অমিতের দুই আত্মীয়কে ফোন করা হলে তাঁরা বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।