• ৩ লক্ষ জনসমাবেশের দাবি হুমায়ুনের, বাবরি মসজিদের শিলান্যাসের দিনই কড়া বার্তা মমতার
    আজ তক | ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫
  • শনিবার সেই বহু প্রতীক্ষিত বাবরি মসজিদের শিলান্যাস। বেলডাঙাতে বর্ণাঢ্য আয়োজন করেছেন তৃণমূল থেকে সদ্য সাসপেন্ড হওয়া ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। আদালতের নির্দেশ মেনে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন হয়েছে শিলান্যাস স্থলে। নিরাপত্তার ঘেরাটোপে পুড়ে ফেলা হয়েছে গোটা বেলডাঙা। টানটান উত্তেজনা রাজ্যজুড়ে। এই পরিস্থিতিতেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিয়ে বিশেষ বার্তা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 

    কী বার্তা মমতার?
    আর কিছুক্ষণের মধ্যেই হতে চলেছে বাবরি মসজিদের শিলান্যাস অনুষ্ঠান। তার মাঝেই শনিবার সকালে এক্স হ্যান্ডলে বিশেষ পোস্ট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সাম্প্রদায়িক শক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা জানিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছেন। 

    মমতা লিখেছেন, 'একতাই শক্তি।' ৬ ডিসেম্বর, অযোধ্যার বাবরি মসজিদ ধ্বংসের এই দিনটিকে সংহতি দিবস বা সম্প্রীতি দিবস হিসেবেই পালন করা হয়। সেই উপলক্ষেই মুখ্যমন্ত্রী এদিন লেখেন, 'বাংলার মাটি একতার মাটি। এই মাটি রবীন্দ্রনাথের মাটি, নজরুলের মাটি, রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দের মাটি-এই মাটি কখনও মাতা নত করেনি বিভেদের কাছে। আগামী দিনেও করবে না।' তাঁর সংযোজন, 'হন্দু, মুসলিম, শিখ, খ্রিস্টান, জৈন, বৌদ্ধ- বাংলায় সকলে আমরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতে জানি। আনন্দ আমরা ভাগ করে নিই। কারণ আমরা বিশ্বাস করি ধর্ম যার যার, কিন্তু উৎসব সবার।'

    এরপরই কড়া বার্তা দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'যারা সাম্প্রদায়িকতার আগুন জ্বালিয়ে দেশকে ধ্বংস করার খেলায় মেতেছে, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই জারি থাকবে।' সকলকে সম্প্রীতি বজায় রাখার আহ্বানও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। 

    উল্লেখ্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একবারের জন্যও হুমায়ুন কবীর কিংবা বাবরি মসজিদের শিলান্যাল অনুষ্ঠান নিয়ে কোনও শব্দ উচ্চারণ করেননি। তবে রাজনৈতিক কারবারিরা মনে করছেন, তাঁর এই পোস্ট আদতে সেই ইস্যুতেই কড়া বার্তা। 

    দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে হুমায়ুন কবীরকে আজীবনের জন্য দল থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। ফিরহাদ হাকিম এ কথা ঘোষণা করে উল্লেখ করেছিলেন, ওই এলাকায় বাবরি মসজিদের নির্মাণ হলে সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। যদিও কলকাতা হাইকোর্ট থেকে এই শিলান্যাস অনুষ্ঠানের অনুমতি পেয়ে গিয়েছেন সাসপেন্ডেড বিধায়ক। 

    কিছুক্ষণের মধ্যেই শিলান্যাস
    মরাদিঘি মোড়ের বিশাল মাঠে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত মঞ্চ বাঁধার কাজ চলেছে। নজরদারিতে কুইক রেসপন্স টিম, র‌্যাফ, ভিলেজ পুলিশ থেকে মহিলা কনস্টেবল। মাঠের চারপাশে টহল দিচ্ছেন গোয়েন্দা বিভাগের আধিকারিকরাও। এদিনব বেলা ১২টায় শুরু হবে মূল শিলান্যাস অনুষ্ঠান। তার আগে সকাল থেকেই আচার-অনুষ্ঠান শুরু হয়ে গিয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত তো বটেই, দেশের নানা জায়গা থেকে ধর্মগুরুদের আগমন শুরু হয়েছে।

    আয়োজকদের দাবি, সব মিলিয়ে প্রায় ৬০–৭০ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। এর মধ্যে মঞ্চ তৈরিতে ব্যয় ১০ লক্ষ টাকা। ২ থেকে ৩ হাজার স্বেচ্ছাসেবক মাঠে রয়েছেন। রান্নার দায়িত্বে ৭টি কেটারিং সংস্থা, তৈরি হচ্ছে ৪০ হাজার ‘শাহি বিরিয়ানি’। হুমায়ুনের মতে, ২৫ বিঘার জমিতে মসজিদের শিলান্যাসে জড়ো হবেন প্রায় ৩ লক্ষ মানুষ।

    শনিবারের সূচি

    সকাল ৮টা – অতিথিদের আগমন। সৌদি আরবের দুই কাজীর কনভয় ঢুকবে মাঠে।
    সকাল ১০টা – কোরান পাঠ।
    দুপুর ১২টা – শিলান্যাসের মূল অনুষ্ঠান।
    দুপুর ২টো – খাওয়াদাওয়া।
    বিকেল ৪টার মধ্যে মাঠ ফাঁকা করতে হবে। 

     
  • Link to this news (আজ তক)